ঢাকা ১০:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দুর্ঘটনায় ছয় মাসে প্রাণ গেছে ৪২২ শ্রমিকের

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৫২:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
  • ১৬ বার

চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে দেশের বিভিন্ন খাতে ৩৭৩টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪২২ জন শ্রমিক। বেসরকারি সংস্থা সেইফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটির (এসআরএস) এক পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

২০২৪ সালের একই সময়ে ৪২০টি দুর্ঘটনায় ৪৭৫ জন শ্রমিকের প্রাণহানির তথ্য পাওয়া গিয়েছিল।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটেছে পরিবহণ খাতে। ছয় মাসে এ খাতে মৃত্যু ২০৭। এছাড়া সেবামূলক খাতে ৬৫ জন, কৃষি খাতে ৫৯, নির্মাণ খাতে ৫৯ এবং কল-কারখানা ও উৎপাদনশীল খাতে ৩২ জনের মৃত্যু হয়।

বিশ্লেষণে দেখা গেছে ৪২২ জন শ্রমিকের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬৭ জন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৪০, বজ্রপাতে ৫৬, ভবনের ওপর থেকে পড়ে ২৩, ভারী বস্তুর আঘাতে ৯, বিষাক্ত গ্যাসে ১, পানিতে ডুবে ৫, আগুন ও বিস্ফোরণে ১২ এবং মাটি বা দেয়াল ধসে মারা গেছেন ৮ জন। অন্যান্য কারণে মৃত্যু হয়েছে আরও ১ জনের।

শ্রমিক মৃত্যুর পেছনে একাধিক কারণ উঠে এসেছে। তার মধ্যে অবকাঠামোগত দুর্বলতা, ঝুঁকিপূর্ণ যন্ত্রপাতির ব্যবহার, কারিগরি ত্র“টি, অনিয়ন্ত্রিত যানবাহন চালনা, সুরক্ষা সরঞ্জামের অভাব, নিরাপত্তা প্রশিক্ষণের সংকট এবং মালিকপক্ষের গাফিলতি অন্যতম।

এছাড়া অতিরিক্ত কাজের চাপ, পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাব, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দুর্ঘটনার পর জরুরি চিকিৎসার অভাবও অনেক মৃত্যুর জন্য দায়ী।

সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক সেকেন্দার আলী মিনা বলেন, নিরাপদ কর্মপরিবেশ গড়ে তুলতে হলে সেক্টরভিত্তিক দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা এবং কার্যকর বাস্তবায়ন জরুরি। শ্রমিক, মালিক এবং সরকারের মধ্যে সমন্বয় ছাড়া এই পরিস্থিতির উন্নয়ন সম্ভব নয়।

এসআরএস মনে করে, শ্রমিকদের জন্য একটি নিরাপদ কর্মপরিবেশ গড়ে তোলার প্রথম দায়িত্ব মালিকের, যিনি ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম প্রদানসহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। সরকারের দায়িত্ব হলো নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিধি-বিধান প্রণয়ন ও তা পালনে সবাইকে বাধ্য করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় তদারকি করা।

অন্যদিকে, শ্রমিকদের দায়িত্ব হলো মালিকের দেওয়া নির্দেশনা ও নিরাপত্তাবিধি মেনে চলা। এই ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতা ছাড়া কর্মক্ষেত্র দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

দুর্ঘটনায় ছয় মাসে প্রাণ গেছে ৪২২ শ্রমিকের

আপডেট টাইম : ১১:৫২:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে দেশের বিভিন্ন খাতে ৩৭৩টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪২২ জন শ্রমিক। বেসরকারি সংস্থা সেইফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটির (এসআরএস) এক পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

২০২৪ সালের একই সময়ে ৪২০টি দুর্ঘটনায় ৪৭৫ জন শ্রমিকের প্রাণহানির তথ্য পাওয়া গিয়েছিল।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটেছে পরিবহণ খাতে। ছয় মাসে এ খাতে মৃত্যু ২০৭। এছাড়া সেবামূলক খাতে ৬৫ জন, কৃষি খাতে ৫৯, নির্মাণ খাতে ৫৯ এবং কল-কারখানা ও উৎপাদনশীল খাতে ৩২ জনের মৃত্যু হয়।

বিশ্লেষণে দেখা গেছে ৪২২ জন শ্রমিকের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬৭ জন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৪০, বজ্রপাতে ৫৬, ভবনের ওপর থেকে পড়ে ২৩, ভারী বস্তুর আঘাতে ৯, বিষাক্ত গ্যাসে ১, পানিতে ডুবে ৫, আগুন ও বিস্ফোরণে ১২ এবং মাটি বা দেয়াল ধসে মারা গেছেন ৮ জন। অন্যান্য কারণে মৃত্যু হয়েছে আরও ১ জনের।

শ্রমিক মৃত্যুর পেছনে একাধিক কারণ উঠে এসেছে। তার মধ্যে অবকাঠামোগত দুর্বলতা, ঝুঁকিপূর্ণ যন্ত্রপাতির ব্যবহার, কারিগরি ত্র“টি, অনিয়ন্ত্রিত যানবাহন চালনা, সুরক্ষা সরঞ্জামের অভাব, নিরাপত্তা প্রশিক্ষণের সংকট এবং মালিকপক্ষের গাফিলতি অন্যতম।

এছাড়া অতিরিক্ত কাজের চাপ, পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাব, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দুর্ঘটনার পর জরুরি চিকিৎসার অভাবও অনেক মৃত্যুর জন্য দায়ী।

সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক সেকেন্দার আলী মিনা বলেন, নিরাপদ কর্মপরিবেশ গড়ে তুলতে হলে সেক্টরভিত্তিক দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা এবং কার্যকর বাস্তবায়ন জরুরি। শ্রমিক, মালিক এবং সরকারের মধ্যে সমন্বয় ছাড়া এই পরিস্থিতির উন্নয়ন সম্ভব নয়।

এসআরএস মনে করে, শ্রমিকদের জন্য একটি নিরাপদ কর্মপরিবেশ গড়ে তোলার প্রথম দায়িত্ব মালিকের, যিনি ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম প্রদানসহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। সরকারের দায়িত্ব হলো নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিধি-বিধান প্রণয়ন ও তা পালনে সবাইকে বাধ্য করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় তদারকি করা।

অন্যদিকে, শ্রমিকদের দায়িত্ব হলো মালিকের দেওয়া নির্দেশনা ও নিরাপত্তাবিধি মেনে চলা। এই ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতা ছাড়া কর্মক্ষেত্র দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়।