ঢাকা ০৪:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কোরবানির পশুর প্রতি সদয় আচরণ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৫২:২৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫
  • ২০ বার

দ্বিতীয় হিজরিতে কোরবানির বিধান আসার পর থেকে যত বছর আল্লাহর নবী (সা.) জীবিত ছিলেন, প্রতিবছর কোরবানি দিয়েছেন। নবী করিম (সা.)-এর সাহাবিরাও এই ইবাদতে খুব যত্নশীল ছিলেন। হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.) দুটি ভেড়া কোরবানি দিতেন। আর আমিও দুটি ভেড়া কোরবানি দিতাম। (সহিহ্ বুখারি: ৫৫৫৩)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, নিশ্চয়ই রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন কোরবানি করতে ইচ্ছা করতেন—চিত্রবিচিত্র, শিংবিশিষ্ট, মোটাতাজা দুটি খাসি-ভেড়া কোরবানি দিতেন। এর একটি তিনি ওই সব উম্মতের জন্য কোরবানি করতেন, যারা আল্লাহর একত্ববাদের সাক্ষ্য দেবে ও তার দায়িত্ব পালনের কথা স্বীকার করবে। অন্যটি তিনি নিজের ও তাঁর পরিবারের নামে দিতেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩১২২)

ইসলামে কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। আর কোরবানির পশু মহান আল্লাহর অন্যতম নিদর্শন। তাই কোরবানির পশুর প্রতি যত্নশীল হওয়া এবং এর সঙ্গে সদাচার করা আবশ্যক। পশুর খাবার-পানীয় ঠিকমতো পরিবেশন করতে হবে। হাট থেকে বাড়িতে আনার সময় যেভাবে আনলে কষ্ট হবে না, সেভাবে আনতে হবে। কোনো প্রকার আঘাত করা যাবে না। কোরবানির পশু জবাইকালে উত্তম পদ্ধতি অবলম্বনের শিক্ষা দেওয়া হয়েছে, যাতে পশুর কষ্ট কম হয়। যেমন, জবাই করার সময় ছুরি ভালোভাবে ধার দিয়ে নিতে হবে এবং জবাইয়ের পর চামড়া ছিলে নেওয়ার আগে স্বাভাবিকভাবে পশুর প্রাণ বের হওয়া পর্যন্ত সময় দিতে হবে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নিঃসন্দেহে আল্লাহ সব জিনিস উত্তম পদ্ধতিতে করার বিধান দিয়েছেন। সুতরাং যখন তুমি জবাই করবে, তখন উত্তম পদ্ধতিতে জবাই করবে। জবাইয়ের বস্তু ভালোভাবে ধার দিয়ে নেবে আর পশুটিকে স্বাভাবিকভাবে প্রাণ বের হওয়ার সুযোগ দেবে।’ (সহিহ্ মুসলিম: ১৯৫৫)। অন্য হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ‘আল্লাহর রাসুল (কোরবানির আগে) ছুরি ধারালো করতে এবং তা পশুর দৃষ্টির অগোচরে রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। তোমাদের কেউ জবাই করার সময় যেন তা দ্রুত সম্পন্ন করে (যাতে পশু বেশি কষ্ট না পায়)।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩১৭২)

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

কোরবানির পশুর প্রতি সদয় আচরণ

আপডেট টাইম : ১১:৫২:২৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫

দ্বিতীয় হিজরিতে কোরবানির বিধান আসার পর থেকে যত বছর আল্লাহর নবী (সা.) জীবিত ছিলেন, প্রতিবছর কোরবানি দিয়েছেন। নবী করিম (সা.)-এর সাহাবিরাও এই ইবাদতে খুব যত্নশীল ছিলেন। হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.) দুটি ভেড়া কোরবানি দিতেন। আর আমিও দুটি ভেড়া কোরবানি দিতাম। (সহিহ্ বুখারি: ৫৫৫৩)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, নিশ্চয়ই রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন কোরবানি করতে ইচ্ছা করতেন—চিত্রবিচিত্র, শিংবিশিষ্ট, মোটাতাজা দুটি খাসি-ভেড়া কোরবানি দিতেন। এর একটি তিনি ওই সব উম্মতের জন্য কোরবানি করতেন, যারা আল্লাহর একত্ববাদের সাক্ষ্য দেবে ও তার দায়িত্ব পালনের কথা স্বীকার করবে। অন্যটি তিনি নিজের ও তাঁর পরিবারের নামে দিতেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩১২২)

ইসলামে কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। আর কোরবানির পশু মহান আল্লাহর অন্যতম নিদর্শন। তাই কোরবানির পশুর প্রতি যত্নশীল হওয়া এবং এর সঙ্গে সদাচার করা আবশ্যক। পশুর খাবার-পানীয় ঠিকমতো পরিবেশন করতে হবে। হাট থেকে বাড়িতে আনার সময় যেভাবে আনলে কষ্ট হবে না, সেভাবে আনতে হবে। কোনো প্রকার আঘাত করা যাবে না। কোরবানির পশু জবাইকালে উত্তম পদ্ধতি অবলম্বনের শিক্ষা দেওয়া হয়েছে, যাতে পশুর কষ্ট কম হয়। যেমন, জবাই করার সময় ছুরি ভালোভাবে ধার দিয়ে নিতে হবে এবং জবাইয়ের পর চামড়া ছিলে নেওয়ার আগে স্বাভাবিকভাবে পশুর প্রাণ বের হওয়া পর্যন্ত সময় দিতে হবে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নিঃসন্দেহে আল্লাহ সব জিনিস উত্তম পদ্ধতিতে করার বিধান দিয়েছেন। সুতরাং যখন তুমি জবাই করবে, তখন উত্তম পদ্ধতিতে জবাই করবে। জবাইয়ের বস্তু ভালোভাবে ধার দিয়ে নেবে আর পশুটিকে স্বাভাবিকভাবে প্রাণ বের হওয়ার সুযোগ দেবে।’ (সহিহ্ মুসলিম: ১৯৫৫)। অন্য হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ‘আল্লাহর রাসুল (কোরবানির আগে) ছুরি ধারালো করতে এবং তা পশুর দৃষ্টির অগোচরে রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। তোমাদের কেউ জবাই করার সময় যেন তা দ্রুত সম্পন্ন করে (যাতে পশু বেশি কষ্ট না পায়)।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩১৭২)