যে কোনও দূরত্বে গেলে তুমি আর আমার থাকো না
তুমি হও যার-তার খেলুড়ে পুরুষ।
যে কোনও শরীরে গিয়ে
শকুনের মতো খুঁটে খুঁটে রূপ ও মাংস তুমি আহার করো
গণিকা ও প্রেমিকার শরীরে কোনও পার্থক্য বোঝো না।
কবিতার চে’ চাতুর্য বোঝো ভালো,
তুমি অমাবস্যা ও পূর্ণিমার কোনও পার্থক্য বোঝো না।
ভালোবাসার চে’ প্রাচুর্য বোঝো বেশি…
তবু তোমার তৃষ্ণা ঘোচে না।
তোমাকে স্বপ্নের কথা অনেক বলেছি
সমুদ্র ও নর্দমার ভেতরে তুমি কোনও পার্থক্য বোঝো না।
যে কোনও দূরত্বে গেলে তুমি হও যার-তার খেলুড়ে পুরুষ।
যার-তার পুরুষকে আমি আমার বলি না।…
হঠাৎ করেই তসলিমা নাসরিনের কবিতাটি মনে পড়ে গেল। সেদিন আমার অফিসে একটি মেয়ে এসেছিল। আমি চিনি না তাকে। আমার ফেসবুকের হাজারো ফ্রেন্ড লিস্টের একজন, কিন্তু আর ১০ জন অপরিচিতের মতো। নামটি প্রকাশ করা অন্যায় হবে। মেয়েটি ভেবেছিল আমি ক্ষমতাধরদের কেউ একজন, যে হয়তো তাকে মানসিক এবং সব রকম সাহায্য দিতে পারবে। মেয়েটি বিচার চায়। ভালোবাসার বিচার। মেয়েটি প্রতারিত হয়েছে। ভালোবাসায় প্রতারণা। সে তার প্রেমিকের বিরুদ্ধে বিচার চায়। কিন্তু প্রেমিকের কাছেই আবার ফিরতে চায়। হায়, কেমন করে বোঝাবো যে দেশে খুন-জখমের বিচার নেই, ভালোবাসার প্রত্যাখ্যানে ক্ষমতার দাম্ভিকতায় হয় কুপিয়ে হত্যা, সতেজ উচ্ছ্বল প্রাণবন্ত মেয়েরা হয় লাশ, হয় বিচারবহির্ভূত হত্যা, সে দেশে ভালোবাসার হত্যায় কার কী বা এসে যায়? ভালোবাসায় প্রতারণার কী বিচার আছে? কেমন করে বোঝাবো বিশ্বাসহীনতার বিচার নেই। কষ্টের, অপমানের বিচার নেই।
মেয়েটি দিনরাত্তির অপেক্ষায় থাকে কবে তার প্রেমিক ফিরবে! ছেলেটি তখন মগ্ন নতুন প্রেমিকায়। মেয়েটি যখন ভালোবাসায় নিশ্চিন্ত হয়ে সুখী জীবনের স্বপ্নে বিভোর, তখন ছেলেটি ছিল তার নতুন ভালোবাসাকে নিয়ে উত্তেজিত, আনন্দিত। ছেলেটির মিথ্যা আশ্বাসে মেয়েটি পার করছিল তার সুখী জীবন। হঠাৎ একদিন ভেঙে সব চূরমার। মেয়েটি আকুল হয়ে কাঁদছিল আমার সামনে। বলছিল, ‘ও কেন এত প্রতারণা করল আমার সঙ্গে, ও কেন আমার এত ক্ষতি করল, আমি তো শুধু ভালোবেসে ছিলাম।’ হতাশায় কষ্টে বলছিল ছেলেটিকে না পেলে সে বাঁচবে না। আমি যেন আমার মিডিয়ার যাবতীয় সব ক্ষমতা দিয়ে ছেলেটিকে ফিরিয়ে আনি। একটিবার, শুধু একটিবার যেন ছেলেটি তাকে আবারও ভালোবাসার কথা বলে। যেমন করে আগে বলত চাঁদ, ফুল, পৃথিবীকে সাক্ষী রেখে। কেমন করে বোঝাই চাঁদ, ফুল, তারা কবিতায় থাকে, বাস্তবে নয়। কেমন করে বোঝাই এই আকুতি, এই চাওয়া, এই ভালোবাসা এখন ছেলেটির কাছে গুরুত্বহীন। সে এখন অন্য নারীর চিন্তায় নিমগ্ন। কেমন করে বোঝাই আমার কোনো ক্ষমতাই নেই তার ভালোবাসাকে ফিরিয়ে দেওয়ার।
ফেসবুকে মেয়েটির অ্যাকাউন্ট এখন ডিঅ্যাক্টটিভেট করা। খুব অনুতাপ হয়, হায় যদি আমি সেদিন মেয়েটির হাত ধরে বাঁচতে শিখাতাম। যদি সাহস দিতাম। সেদিন অফিসে ছিল ভীষণ কাজের ব্যস্ততা। অসংখ্য মানুষ। অস্বস্তিতে আমি হতভাগা মেয়েটিকে উল্টো বকেছিলাম। বলেছিলাম, ‘যে ছেলে তোমাকে ফেলে অন্যদিকে যায়, তাকেই ফেলে দাও।… তোমার আত্মসম্মান নেই? অপমান নেই?’ আমরা তো সবাই উপদেশদাতা। তাই কোনো সাহায্য না করে উপদেশ দিয়েই তসলিমা নাসরিনের কবিতা শুনিয়েছিলাম—
মন ওঠো মেয়ে, ও মেয়ে, ওঠো,
পুনর্জন্ম হোক, পুনরুত্থান হোক তোমার।
হৃদয়ে কখনও এমন আস্ত একটি পুরুষ পুরে রেখো না,
পুরুষ যখন ঢোকে, একা ঢোকে না, গোটা পুরুষতন্ত্র ঢোকে।
এই তন্ত্রের মগজ-মন্ত্রে মুগ্ধ হবে, প্রেমে প্রলুব্ধ হবে, মৃত্যু হবে তোমার তোমার।
ও মন তুমি ওঠো, নাচো, তোমার মত, তোমার মত করে বাঁচো।
মেয়েটি বাঁচতে পারেনি। প্রতারণার কষ্ট মেনে নিতে পারেনি। ফেসবুকে আমাকে একটি বার্তা দিয়ে চলে গেছে। সেখানে ছিল শুধু অভিমান আর জীবনের প্রতি ক্ষোভ। কোথায় সে গেছে জানি না। নিরুদ্দেশ সে। বলেছিল আত্মহত্যা করবে! আমি তাকে সাহসটুকুও পর্যন্ত দিতে পারলাম না।
সম্পর্কের মধ্যে কেন কীট ঢোকে? কেন তুমুল ভালোবাসার মধ্যে থেকেও তৃতীয় ব্যক্তি চলে আসে? সব বিশ্বাস, সততা, অনুভব মিথ্যা হয়ে যায়?
মানুষ হলফ করে বারবার। গোটা অস্তিত্ব দিয়ে ভালোবাসে। কিন্তু বিশ্বাস ভঙ্গ করে বারবার। কেন? কেমন করে এত স্বর্গীয় অনুভূতি বিবর্ণ হয়ে যায়? ঘুণ ধরে যায় সম্পর্কে? আমি নারীবাদী নই। পুরুষ জাতকে গালিগালাজ করে আমার কোনো সুখ-দুঃখ-রাগ-বিরাগের অনুভূতি জন্মে না। আমার কাছে মানুষই সত্য অথবা আবার সেই মানুষই মিথ্যা। সে পুরুষ হোক আর নারী হোক। সেখানে অন্তত নারী পুরুষের ভেদাভেদে আমি বিশ্বাসী নই। হয়তো নিজে মেয়ে বলে, মেয়েটির কষ্টে কষ্ট পাচ্ছি বলে পুরুষতন্ত্রের জাত উদ্ধার করছি। কিন্তু আবার মনে হয় তসলিমা নাসরিনের পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে যে ক্ষোভ ছিল তা কি আসলেই সব অতিশয়োক্তি?
তোমাকে বিশ্বাস করেছিলাম,
যা কিছু নিজের ছিল দিয়েছিলাম,
যা কিছুই অর্জন-উপার্জন!
এখন দেখ না ভিখিরির মতো কেমন
বসে থাকি!
কেউ ফিরে তাকায় না।
তোমার কেন সময় হবে তাকাবার!
কত রকম কাজ তোমার!
আজকাল তো ব্যস্ততাও বেড়েছে খুব।
সেদিন দেখলাম সেই ভালোবাসাগুলো
কাকে যেন দিতে খুব ব্যস্ত তুমি,
যেগুলো তোমাকে আমি দিয়েছিলাম।
কি চমৎকার কবিতা। কিন্তু জীবন কি আসলেই এতটাই নিষ্ঠুর? এতটা অসৎ কি মানুষ হয়? সেদিন ফেসবুকে আমার এক সহকর্মী মন্তব্য করেছিলেন দুনিয়ায় চৌদ্দশো কোটি হাত আছে। একটি হাত সরে গেলে আর একটি হাত আসবে। জীবন তো নিজের এবং জীবন একটাই। এই জীবন কি কারও কারণে নষ্ট করা উচিত? উচিত কি আত্মহননের পথ বেছে নিয়ে অভিমান করে চলে যাওয়া? হয়তো নদীর এপারে আছি বলে জীবনের গুণগান গাইছি। ওপারে হলে হয়তো বা এমনই কষ্ট পেতাম।
ভালোবাসাহীনতায় মানুষ কেন কষ্ট পায়? কষ্ট কি ভালোবাসাহীনতায় না কি ভালোবাসার প্রতারণায়, অসম্মানে? মেয়েটির জন্য বড় কষ্ট হয়। না আমি কিছু করতে পারিনি সেজন্য নয়। কষ্ট হয় তার কষ্টে। তার হতাশায়, তার একাকিত্বে, তার দুঃসহ যন্ত্রণায়, তার অপরিসীম অপমানে।
এত সুন্দর পৃথিবী, কিন্তু এত ক্ষণস্থায়ী এই জীবন। তবে স্বল্প সময়ের এই জীবনে কেন মিছে এই প্রতারণা! কেন এত অপমান, কেন এত কষ্ট? কেনই বা মিথ্যে আশ্বাস! মাঝে মাঝে মনে হয় পৃথিবী কি তার সব ঐশ্বর্য নিয়ে সুন্দর? না মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা আছে বলেই পৃথিবী এত সুন্দর। জানি না। ভীষণ জানতে ইচ্ছে করে, এত প্রবল ভালোবাসা কেন মুখ ফিরে চলে যায়? এত বিশ্বাসহীনতা, ভালোবাসাহীনতা, মিথ্যাচারে পৃথিবীর এই সৌন্দর্য কি টিকে থাকতে পারবে? পারবে কি প্রতারিত বা প্রতারক এই মানব-মানবীরা সুখী হতে?
ভুলে যেতে হলে ভুলে যাও, বাঁচি।
যত মনে রাখবে, যত চাইবে আমাকে, যত কাছে আসবে,
যত বলবে ভালোবাসো, তত আমি বন্দী হতে থাকব তোমার হৃদয়ে, তোমার জালে,
তোমার পায়ের তলায়, তোমার হাতের মুঠোয়, তোমার দশ নখে।
ভুলে যাও
মুখের রংচংগুলো ধুয়ে একটু হালকা হই,
একটুখানি আমি হই…
আমিত্ব বিসর্জন করে আর কতদিন বোকা মেয়েরা নিজেদের অস্তিত্ব বিকিয়ে দেবে! আর কতকাল সাবিরা হোসেনের মতো ভালোবাসার কাঙাল মেয়েরা নির্ঝরদের মতো ছেলেদের জন্য আত্মহননের পথ বেছে নেবে? আর কতকাল আমরা বলব কেমন করে বাঁচি তোমায় ছাড়া…!
প্রতারক পুরুষেরা একবার ডাকলেই
ভুলে যাই পেছনের সজল ভৈরবী
ভুলে যাই মেঘলা আকাশ, না ফুরানো দীর্ঘ রাত।
একবার ডাকলেই
সব ভুলে পা বাড়াই নতুন ভুলের দিকে
একবার ভালোবাসলেই কেঁদে উঠি অমল বালিকা।
ভুল প্রেমে তিরিশ বছর গেল
সহস্র বছর যাবে আরও,
তবু বোধ হবে না নির্বোধ বালিকার।
প্রেমে বোধ নেই বলেই কি রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন,
সখী, ভাবনা কাহারে বলে।
সখী, যাতনা কাহারে বলে।
তোমরা যে বলো দিবস-রজনী ‘ভালোবাসা’ ‘ভালোবাসা’
সখী, ভালোবাসা কারে কয়!
সে কি কেবলই যাতনাময়?
সে কি কেবলই চোখের জল? সে কি কেবলই দুখের শ্বাস?
লোকে তবে করে কী সুখেরই তরে এমন দুখের আশ।…
জীবন পাড়ি দিতে গিয়ে হয়তো আমরা প্রত্যেকে কখনো না কখনো নানাভাবে বলেছি, ধুর বেঁচে আছি কি জন্য! কিন্তু আমরা কি কেউ আসলেই মৃত্যু চাই? চাই কি এই অদ্ভুত সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে? কত কিছু আছে করবার, সামান্য এই মিছে ভালোবাসায় কেন করি নিজের এই সর্বনাশ। আজ আমি নেই তো তাতে কার কি বা এসে যায়? হয়তো পরিবার কষ্ট পাবে। বাবা-মা কষ্ট পাবে। তারপর? তারপর সবাই ভুলে যাবে। হয়তো দু-একদিন। তারপর কোথাও কেউ নেই। কোথাও নেই। তাই পৃথিবীর সব বোকা মেয়েরা তোমাদের বলি, যে ক’টা দিন বাঁচো, মাথা উঁচু করেই বাঁচো। পৃথিবীর সবটুকু আনন্দ নিয়েই বাঁচো। যে যেতে চায়, তাকে যেতেই দাও। প্রতারককে তুচ্ছ কর। সে তোমার যোগ্য নয়। তোমার জন্য কেউ না কেউ আছে এই পৃথিবীতেই, কোথাও না কোথাও অবশ্যই আছে।
শেষ করার আগে দুটি গল্প দিয়ে শেষ করতে চাই। গল্পটি ছিল এক বিবাহিত দম্পতির। স্ত্রী তার স্বামীর আলমারির ড্রয়ার পরিষ্কার করছিল। সেখানে সে তিনটি গলফ খেলার বল খুঁজে পেল, আর পেল প্রায় দুই লাখ টাকা। মহিলা অবাক হয়ে ভাবলো এত টাকা কোথা থেকে এলো! তার স্বামী কেন তাকে এই টাকার কথা বলেনি! আর সঙ্গে গলফের বল কেন? স্বামী বাসায় ফিরে এলে মহিলা স্বামীর কাছে টাকা ও গলফের বলের হিসাব জানতে চাইল। স্বামী বলল, ঠিক আছে তুমি যখন জেনেই গেছ, আমিও সত্যি স্বীকার করতে চাই। আমি খুব দুঃখিত। গত তিরিশ বছর ধরেই আমি তোমাকে প্রতারণা করেছি। আমার জীবনে তুমি ছাড়া অন্য মেয়েও এসেছে। আর প্রত্যেকটি সম্পর্কের সময়ে আমি ড্রয়ারে একটি করে বল রেখেছি নিজেকে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য যে তোমায় প্রতারণা করছি। স্ত্রী কষ্টে হতাশায়, রাগে, ক্ষোভে ভেঙে পড়ে এবং স্বামীকে ছেড়ে চলে যায়। দু-একদিন পরে তার মনে হয়, তার সঙ্গে প্রতারণা করে স্বামী চরম অন্যায় করেছে সত্য, কিন্তু তিরিশ বছরে তিনবার… হয়তো স্বামীর এতটুকু ভুল মাফ করাই যায়। ভালোবাসার টানে স্বামীর কাছে সে আবার ফিরে আসে এবং তার হঠাৎই মনে হয় ড্রয়ারে যে দুই লাখ টাকা সে দেখেছিল সেটা কীসের টাকা! এবার স্বামীর উত্তর ছিল, দেখ এত বল রেখে কি হবে। তাই প্রত্যেকবার যখন বলের সংখ্যা ডজন ছাড়িয়ে যেত, আমি সেগুলো বিক্রি করে দিতাম।
প্রায় এ রকমই আর একটি জোক আছে আর এক বিবাহিত দম্পতিকে নিয়ে। সবাই তাদের বলে সুখী দম্পতি। কারণ প্রায় ষাট বছরের বিবাহিত জীবনে তাদের মধ্যে কেউ কখনো ঝগড়া হতে দেখেনি। তারা জীবনে কেউ কখনো কারও কাছে কিছু গোপন পর্যন্ত করেননি। শুধু একটি মাত্র বিষয় ছাড়া। মহিলাটি তার আলমারির মধ্যে একটি জুতার বাক্স লুকিয়ে রাখত এবং তার স্বামীকে সেটি খুলতে দিত না। মহিলাটি যখন মৃৃত্যুশয্যায় তখন সে তার স্বামীকে বলল বাক্সটি খুলতে। বাক্সটি খুলে স্বামী দেখে তার মধ্যে একটি কাপড়ের পুতুল এবং প্রায় পঞ্চাশ লাখ টাকা।
‘আমার মা বিয়ের সময় বলেছিলেন সুখী জীবনের রহস্য হচ্ছে ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে কখনো ঝগড়া তর্ক বিবাদে যাবে না। সে তোমাকে তাহলে ছেড়ে যাবে এবং অজুহাত দেবে যে তুমি ঝগড়াটে, আগ্রাসী। বরং চুপ করে থেকে নিজের রাগ ক্ষোভ অন্য কিছুর মধ্যে ঝেড়ে ফেলবে। মুখ বুজে থাকলেই কেবল সে তোমার থাকবে। আমি তাই সারাটি জীবন চুপ করে থেকেছি। আর যখনই তোমার ওপর রাগ হতো, তখন রাগ ঝাড়ার জন্য একমনে কাপড়ের পুতুল বুনে যেতাম’— মহিলাটি বলল।
স্বামী আবেগে আপ্লুত হয়ে বলল, ‘ষাট বছরের যুগল জীবনে মোটে একটি পুতুল! তার মানে এই ষাট বছরে তুমি শুধু একটিবারই আমার ওপর ক্রুদ্ধ হয়েছিলে! কিন্তু এত টাকা আসলো কোথা থেকে?’
স্ত্রীর নির্বিকার উত্তর, ‘ওহ, ওই টাকা তো সব পুতুল বিক্রি করে পেয়েছি।’
রবীন্দ্রনাথ কি তাই বলেছিলেন, ভালোবেসে যদি সুখ নাহি তবে কেন মিছে ভালোবাসা! আমার বোকা বন্ধুরা ভালোবাসার বোকামিতে প্রতারিত হবেন? না কি এক মনে পুতুল বুনে যাবেন তাও বোধহয় ভাবার সময় এসেছে। কিন্তু এটাও তো সত্যি পৃথিবীতে ভালোবাসা যতদিন থাকবে, ততদিন ভালোবাসার কষ্ট থাকবে, দুঃখ থাকবে আবার প্রতারক মানুষেরাও থাকবে। সব মিলিয়েই তো এই জীবন। সুখ চাই কিন্তু দুঃখ নিব না তা কি হয়! তাই বোধহয় রবিঠাকুর বলেছিলেন, ‘এরা সুখের লাগি চাহে প্রেম, প্রেম মেলে না— শুধু সুখ চলে যায়।’
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ।