ঢাকা ০৫:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কোরবানি যাদের ওপর ওয়াজিব Copied from: https://rtvonline.com/

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:০১:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
  • ২৯ বার

ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোরবানি করা। সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলমানের ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। তবে অপ্রাপ্তবয়স্ক, পাগল, মুসাফির নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলেও তাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব নয়।

কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন,

অর্থ: নিশ্চয় আমি তোমাকে কাওসার দান করেছি। সুতরাং তোমার রবের উদ্দেশে সালাত আদায় করো ও কোরবানি করো। নিশ্চয় তোমার প্রতি শত্রুতা পোষণকারীই নির্বংশ। (সুরা কাওসার: ১-৩)

আরেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন,

অর্থ: প্রত্যেক জাতির জন্য আমি কোরবানির নিয়ম করে দিয়েছি; যাতে তারা আল্লাহর নাম স্মরণ করতে পারে, যে সমস্ত জন্তু তিনি রিজিক হিসেবে দিয়েছেন সেগুলোর ওপর। তোমাদের ইলাহ তো এক ইলাহ; অতএব তাঁরই কাছে আত্মসমর্পণ কর; আর অনুগতদেরকে সুসংবাদ দাও। (সুরা হজ: ৩৪)

আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যার কোরবানি করার সামর্থ্য রয়েছে কিন্তু কোরবানি করে না সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে। (সুনানে ইবনে মাজা: ৩১২৩)

কোরবানি ওয়াজিব যাদের ওপর

যাদের ওপর জাকাত ওয়াজিব, তাদের ওপর কোরবানিও ওয়াজিব। প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন ওই মুসলিম নর-নারীর ওপর কোরবানি ওয়াজিব, যারা ১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে।

নিসাব কী

স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি স্বর্ণের মালিক হলেই তাকে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক বলে গণ্য করা হবে। আর রুপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি। টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার দামের সমপরিমাণ অর্থ বা এমন প্রয়োজনাতিরিক্ত জিনিস, যার দাম সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার দামের সমপরিমাণ বা বেশি হয়।

কারও কাছে যদি স্বর্ণ বা রুপা কিংবা টাকা-পয়সা- এগুলোর কোনো একটি পৃথকভাবে নিসাব পরিমাণ না-ও থাকে, কিন্তু প্রয়োজনাতিরিক্ত একাধিক বস্তু মিলে সাড়ে ৫২ তোলা রুপার দামের সমপরিমাণ হয়ে যায় তাহলেও তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। (আল-মুহীতুল বুরহানী : ৮/৪৫৫)

যেমন- কারও কাছে দুই ভরি স্বর্ণ ও ৫০০ টাকা আছে, যার কোনো একটিও পৃথকভাবে নিসাব পরিমাণ নয়। কিন্তু দুই ভরি স্বর্ণের দাম ও ৫০০ টাকা একত্র করলে সাড়ে ৫২ তোলা রুপার দামের বেশি হয়ে যায়। তাই তিনি নিসাবের মালিক বলে গণ্য হবেন এবং তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে।

কোরবানির ক্ষেত্রে নেসাব পরিমাণ সম্পদের ওপর এক বছর অতিবাহিত হওয়া শর্ত নয়; বরং জিলহজের ১০ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে যে কোনো সময় নেসাবের মালিক হলেও কোরবানি ওয়াজিব হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

কোরবানি যাদের ওপর ওয়াজিব Copied from: https://rtvonline.com/

আপডেট টাইম : ১২:০১:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোরবানি করা। সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলমানের ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। তবে অপ্রাপ্তবয়স্ক, পাগল, মুসাফির নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলেও তাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব নয়।

কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন,

অর্থ: নিশ্চয় আমি তোমাকে কাওসার দান করেছি। সুতরাং তোমার রবের উদ্দেশে সালাত আদায় করো ও কোরবানি করো। নিশ্চয় তোমার প্রতি শত্রুতা পোষণকারীই নির্বংশ। (সুরা কাওসার: ১-৩)

আরেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন,

অর্থ: প্রত্যেক জাতির জন্য আমি কোরবানির নিয়ম করে দিয়েছি; যাতে তারা আল্লাহর নাম স্মরণ করতে পারে, যে সমস্ত জন্তু তিনি রিজিক হিসেবে দিয়েছেন সেগুলোর ওপর। তোমাদের ইলাহ তো এক ইলাহ; অতএব তাঁরই কাছে আত্মসমর্পণ কর; আর অনুগতদেরকে সুসংবাদ দাও। (সুরা হজ: ৩৪)

আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যার কোরবানি করার সামর্থ্য রয়েছে কিন্তু কোরবানি করে না সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে। (সুনানে ইবনে মাজা: ৩১২৩)

কোরবানি ওয়াজিব যাদের ওপর

যাদের ওপর জাকাত ওয়াজিব, তাদের ওপর কোরবানিও ওয়াজিব। প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন ওই মুসলিম নর-নারীর ওপর কোরবানি ওয়াজিব, যারা ১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে।

নিসাব কী

স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি স্বর্ণের মালিক হলেই তাকে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক বলে গণ্য করা হবে। আর রুপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি। টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার দামের সমপরিমাণ অর্থ বা এমন প্রয়োজনাতিরিক্ত জিনিস, যার দাম সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার দামের সমপরিমাণ বা বেশি হয়।

কারও কাছে যদি স্বর্ণ বা রুপা কিংবা টাকা-পয়সা- এগুলোর কোনো একটি পৃথকভাবে নিসাব পরিমাণ না-ও থাকে, কিন্তু প্রয়োজনাতিরিক্ত একাধিক বস্তু মিলে সাড়ে ৫২ তোলা রুপার দামের সমপরিমাণ হয়ে যায় তাহলেও তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। (আল-মুহীতুল বুরহানী : ৮/৪৫৫)

যেমন- কারও কাছে দুই ভরি স্বর্ণ ও ৫০০ টাকা আছে, যার কোনো একটিও পৃথকভাবে নিসাব পরিমাণ নয়। কিন্তু দুই ভরি স্বর্ণের দাম ও ৫০০ টাকা একত্র করলে সাড়ে ৫২ তোলা রুপার দামের বেশি হয়ে যায়। তাই তিনি নিসাবের মালিক বলে গণ্য হবেন এবং তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে।

কোরবানির ক্ষেত্রে নেসাব পরিমাণ সম্পদের ওপর এক বছর অতিবাহিত হওয়া শর্ত নয়; বরং জিলহজের ১০ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে যে কোনো সময় নেসাবের মালিক হলেও কোরবানি ওয়াজিব হবে।