ঢাকা ০২:৩০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫, ১২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তামিমের জটিল চিকিৎসায় দ্রুত সিদ্ধান্ত নেন ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫
  • ৫ বার

বিশ্বখ্যাত ক্রিকেটার তামিম ইকবাল যখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে, তখন তার প্রাণ বাঁচাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন চুয়াডাঙ্গার কৃতি সন্তান ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ।

হার্ট অ্যাটাকের পর দ্রুততম সময়ে সঠিক চিকিৎসা না পেলে হয়ত অন্য কোনো ইতিহাস লিখতে হতো। কিন্তু দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও সাহসিকতার সমন্বয়ে তামিম ইকবালকে আল্লাহর ইচ্ছায় নতুন জীবন দিলেন এই চিকিৎসক।

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়িয়ার হাটবোয়ালিয়া গ্রামের সন্তান ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ কেপিজে স্পেশালাইজড হাসপাতালের কার্ডিওলজিস্ট হিসেবে কর্মরত।

সোমবার (২৪ মার্চ) সকাল ৯টার দিকে বিকেএসপির মাঠে ম্যাচ চলাকালে তামিম ইকবাল বুকে তীব্র ব্যথা অনুভব করেন। পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে দ্রুত তাকে গাজীপুরের কেপিজে স্পেশালাইজড হাসপাতালে আনা হয়। সেখানেই দায়িত্ব নেন ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, তামিম ইকবাল যখন হাসপাতালে পৌঁছান, তখন তার শরীরে অক্সিজেন ও রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। হার্টের গুরুত্বপূর্ণ ধমনি ‘লেফট অ্যান্টেরিয়র ডিজেন্ডিং আর্টারি’ শতভাগ ব্লক হয়ে গিয়েছিল। দ্রুত তার হৃদযন্ত্র সচল করতে সিপিআর ও ডি-সি শক দেওয়া হয়। এরপর এনজিওগ্রাম করে দেখা যায়, হৃদযন্ত্রের মূল রক্তনালিতে মারাত্মক ব্লক রয়েছে।

সময়ের বিপরীতে লড়াই করে সফলভাবে এনজিওপ্লাস্টি ও রিং (স্টেন্ট) পরানোর কাজ সম্পন্ন করেন ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ ও তার চিকিৎসক দল।

চুয়াডাঙ্গার কৃতি চিকিৎসক ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ বলেন, ‘তামিম ভাইকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পর আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। দ্রুত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিশ্চিত করে তার হার্টে রিং পরানো হয়েছে। বর্তমানে তিনি ৪৮ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে আছেন। আল্লাহর অশেষ রহমতে, বলা যায় তিনি এখন বিপদমুক্ত।

সময়মতো চিকিৎসা না পেলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারতো, তবে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে এখন তিনি সুস্থতার পথে রয়েছেন।’

অপারেশন শেষে হাসপাতালের চিকিৎসা বিষয়ক পরিচালক রাজিব হাসান বলেন, তামিম ইকবালের অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়েছিল। তার হার্টের প্রধান ধমনি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আমরা সঙ্গে সঙ্গে এনজিওপ্লাস্টি ও স্টেন্টিং করার সিদ্ধান্ত নিই। আল্লাহর রহমতে, এখন তিনি বিপদমুক্ত।

অপারেশনের পর তামিম ইকবালকে সিসিইউতে রাখা হয়। ঘণ্টা দুয়েক পর তার জ্ঞান ফিরে আসে এবং তিনি কথা বলতে শুরু করেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তামিম ইকবাল এখন পর্যবেক্ষণে আছেন এবং ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন।

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায় জন্ম নেওয়া ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ দীর্ঘদিন ধরে কার্ডিওলজির জটিল রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। হৃদরোগের জরুরি চিকিৎসায় তিনি বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেছেন।

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে হার্ট অ্যাটাকের পর জরুরি চিকিৎসা পাওয়ার সুযোগ সীমিত। কিন্তু সময়মতো সঠিক চিকিৎসা পেলে রোগী বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। তামিম ইকবালের ক্ষেত্রেও তা প্রমাণ হলো। ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ ও তার চিকিৎসক দলের সফলতা বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

তামিমের জটিল চিকিৎসায় দ্রুত সিদ্ধান্ত নেন ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ

আপডেট টাইম : ১১:০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫

বিশ্বখ্যাত ক্রিকেটার তামিম ইকবাল যখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে, তখন তার প্রাণ বাঁচাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন চুয়াডাঙ্গার কৃতি সন্তান ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ।

হার্ট অ্যাটাকের পর দ্রুততম সময়ে সঠিক চিকিৎসা না পেলে হয়ত অন্য কোনো ইতিহাস লিখতে হতো। কিন্তু দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও সাহসিকতার সমন্বয়ে তামিম ইকবালকে আল্লাহর ইচ্ছায় নতুন জীবন দিলেন এই চিকিৎসক।

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়িয়ার হাটবোয়ালিয়া গ্রামের সন্তান ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ কেপিজে স্পেশালাইজড হাসপাতালের কার্ডিওলজিস্ট হিসেবে কর্মরত।

সোমবার (২৪ মার্চ) সকাল ৯টার দিকে বিকেএসপির মাঠে ম্যাচ চলাকালে তামিম ইকবাল বুকে তীব্র ব্যথা অনুভব করেন। পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে দ্রুত তাকে গাজীপুরের কেপিজে স্পেশালাইজড হাসপাতালে আনা হয়। সেখানেই দায়িত্ব নেন ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, তামিম ইকবাল যখন হাসপাতালে পৌঁছান, তখন তার শরীরে অক্সিজেন ও রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। হার্টের গুরুত্বপূর্ণ ধমনি ‘লেফট অ্যান্টেরিয়র ডিজেন্ডিং আর্টারি’ শতভাগ ব্লক হয়ে গিয়েছিল। দ্রুত তার হৃদযন্ত্র সচল করতে সিপিআর ও ডি-সি শক দেওয়া হয়। এরপর এনজিওগ্রাম করে দেখা যায়, হৃদযন্ত্রের মূল রক্তনালিতে মারাত্মক ব্লক রয়েছে।

সময়ের বিপরীতে লড়াই করে সফলভাবে এনজিওপ্লাস্টি ও রিং (স্টেন্ট) পরানোর কাজ সম্পন্ন করেন ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ ও তার চিকিৎসক দল।

চুয়াডাঙ্গার কৃতি চিকিৎসক ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ বলেন, ‘তামিম ভাইকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পর আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। দ্রুত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিশ্চিত করে তার হার্টে রিং পরানো হয়েছে। বর্তমানে তিনি ৪৮ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে আছেন। আল্লাহর অশেষ রহমতে, বলা যায় তিনি এখন বিপদমুক্ত।

সময়মতো চিকিৎসা না পেলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারতো, তবে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে এখন তিনি সুস্থতার পথে রয়েছেন।’

অপারেশন শেষে হাসপাতালের চিকিৎসা বিষয়ক পরিচালক রাজিব হাসান বলেন, তামিম ইকবালের অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়েছিল। তার হার্টের প্রধান ধমনি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আমরা সঙ্গে সঙ্গে এনজিওপ্লাস্টি ও স্টেন্টিং করার সিদ্ধান্ত নিই। আল্লাহর রহমতে, এখন তিনি বিপদমুক্ত।

অপারেশনের পর তামিম ইকবালকে সিসিইউতে রাখা হয়। ঘণ্টা দুয়েক পর তার জ্ঞান ফিরে আসে এবং তিনি কথা বলতে শুরু করেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তামিম ইকবাল এখন পর্যবেক্ষণে আছেন এবং ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন।

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায় জন্ম নেওয়া ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ দীর্ঘদিন ধরে কার্ডিওলজির জটিল রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। হৃদরোগের জরুরি চিকিৎসায় তিনি বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেছেন।

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে হার্ট অ্যাটাকের পর জরুরি চিকিৎসা পাওয়ার সুযোগ সীমিত। কিন্তু সময়মতো সঠিক চিকিৎসা পেলে রোগী বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। তামিম ইকবালের ক্ষেত্রেও তা প্রমাণ হলো। ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ ও তার চিকিৎসক দলের সফলতা বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত।