সিরিয়ায় ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ যে সংখ্যালঘু গোত্রের, সেই আলাউই গোত্রের ১৬২ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে দেশটির সরকার।গতকাল শুক্রবার মৃত্যুদণ্ড পাওয়া সবাই বেসামারিক নাগরিক ছিলেন। ফরাসি সংবাদমাধ্যম ফ্রান্স নিউজের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া বেসামরিকদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। গতকাল রাতে দেশটির নেতা আহমেদ আল শারা বিদ্রোহীদের অস্ত্র নামিয়ে রাখার হুঁশিয়ারি দেয়।
টেলিগ্রামে দেওয়া এক বক্তব্যে অন্তবর্তী এই প্রেসিডন্ট বলেন, রাজ্যে তিনি সবার কাছ থেকে অস্ত্র কেড়ে নিবেন। অনিবন্ধিত কোনো অস্ত্র কারও কাছে থাকবে না।
গত ৮ ডিসেম্বর সশস্ত্র বিদ্রোহীদের নেতৃত্বে এক অভিযানে বাশার আল-আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হন এবং পরিবারসহ রাশিয়ায় পালিয়ে যান। তবে এখনও সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে তার অনুগত বাহিনী সক্রিয় রয়েছে। নতুন শাসকগোষ্ঠী আসাদপন্থীদের নির্মূল করতে ব্যাপক অভিযান চালালেও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন অভিযোগ করেছে যে, অভিযানের নামে বাড়ি দখল, বিচার বহির্ভূত হত্যা ও অপহরণের ঘটনা ঘটছে।
সম্প্রতি সিরিয়ায় নতুন শাসকগোষ্ঠী ব্যাপক নিরাপত্তা অভিযান চালিয়েছে, যেখানে সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুগতদের সঙ্গে তীব্র সংঘর্ষ হয়েছে। বর্তমান সরকারের জন্য এটি এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সিরিয়ার উপকূলীয় প্রদেশ লাতাকিয়ায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। এটি আসাদ পরিবারের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল, যেখানে দেশটির আলাউই সম্প্রদায়ের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি রয়েছে।
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা জানিয়েছে, লাতাকিয়া ও পার্শ্ববর্তী তারতুস শহরে নিরাপত্তা বাহিনী ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করেছে। এই অভিযানে পাহাড়ি এলাকাগুলোর পাশাপাশি শহর ও গ্রামাঞ্চলে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা আসাদ মিলিশিয়াদের বেঁচে থাকা সদস্যদের লক্ষ্য করে অভিযান চালাচ্ছি। সাধারণ জনগণকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
লাতাকিয়ার জাবলে এলাকায় আসাদপন্থী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা মুস্তাফা কনেইফাতি জানান, ‘আসাদপন্থী মিলিশিয়ারা আমাদের অবস্থান ও চেকপয়েন্টে সমন্বিত হামলা চালিয়েছে। আমরা তাদের উপস্থিতি নিশ্চিহ্ন করার জন্য কাজ করছি।’
বৃহস্পতিবার সেখানে নিরাপত্তা বাহিনী হেলিকপ্টার দিয়ে হামলা চালিয়েছিল। লাতাকিয়ার জাবলে এলাকার এক কৃষক আলি জানান, ‘সারা রাত গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। সবাই আতঙ্কে আছে, আমরা ঘর থেকে বের হতে পারছি না।