ঢাকা ০৩:০৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা স্থগিত করলেন ট্রাম্প

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:০৮:২৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫
  • ১৫ বার

ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা স্থগিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত সপ্তাহে জেলেনস্কির সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডার জের ধরে এবার এই সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি।

হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।

রয়টার্স ও আল-জাজিরার প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের যেসব সামরিক সরঞ্জাম এখন ইউক্রেনে নেই, সেগুলো এই সাময়িক সহযোগিতা স্থগিতের আওতায় পড়বে। এর মধ্যে রয়েছে বিমান বা জাহাজে করে যেসব অস্ত্র ইউক্রেনে যাচ্ছে এবং ইউক্রেনে প্রবেশের অপেক্ষায় পোল্যান্ডে সেসব অস্ত্র রয়েছে।

নাম না প্রকাশের শর্তে সোমবার একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্টভাবে শান্তির ওপর জোর দিয়েছেন। আমরা চাই আমাদের মিত্ররা সেই লক্ষ্যেই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকুক। এ জন্য সামরিক সহায়তা স্থগিত করা হয়েছে এবং এটি সমাধানে পৌঁছানো না পর্যন্ত এটি বিবেচনার মধ্য থাকবে।’

সাময়িক এই অস্ত্র সহযোগিতা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

যদিও কতদিন পর্যন্ত সামরিক সহায়তা স্থগিত রাখা হবে সে সম্পর্কে হোয়াইট হাউস তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি। এ বিষয়ে পেন্টাগনের পক্ষ থেকেও বিস্তারিত কোনো তথ্য সরবরাহ করা হয়নি।

বিষয়টি নিয়ে মন্তব্যের জন্য জেলেনস্কির অফিসে রয়টার্স যোগাযোগ করলেও তাতে সাড়া দেয়নি। এছাড়া ওয়াশিংটনে অবস্থিত ইউক্রেনের দূতাবাস থেকেও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

তিন বছর আগে রাশিয়া পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন শুরু করার পর থেকে ইউক্রেনের জন্য অস্ত্রের প্রধান সরবরাহকারী দেশ ছিল যুক্তরাষ্ট্র।

ট্রাম্প গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন। এরপরই তিনি ইউক্রেন এবং রাশিয়ার বিষয়ে মার্কিন নীতি বাতিল করে মস্কোর প্রতি আরও সমঝোতামূলক অবস্থান গ্রহণ করেন।

সর্বশেষ গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কির সঙ্গে নজিরবিহীন তর্ক-বিতর্কের পরে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে ওয়াশিংটনের সমর্থনের জন্য অপর্যাপ্ত কৃতজ্ঞতার জন্য জেলেনস্কির সমালোচনা করেছিলেন ট্রাম্প।

এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি যুদ্ধের অবসান চান না বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ইউরোপের সঙ্গে জেলেনস্কির সাম্প্রতিক ঘনিষ্ঠতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক পণ্ড হওয়ার পরের দিন রবিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন জেলেনস্কি। সেখানে তিনি বলেন, ‘আপাতত নিকট ভবিষ্যতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। যুদ্ধ থামানোর জন্য একটি যথাযথ চুক্তি এখনও অনেক অনেক দূরে। কোনো পক্ষই এখন পর্যন্ত এ ইস্যুতে পদক্ষেপ গ্রহণ শুরু করেনি। তবে যে চুক্তিই হোক না কেন, সেটিকে অবশ্যই ন্যায্য হতে হবে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো— (সেটিকে) টেকসই হতে হবে।’

জেলেনস্কির এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সোমবার ট্রাম্প তার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, ‘জেলেনস্কি এ পর্যন্ত যত বিবৃতি দিয়েছেন, তার মধ্যে এটি (এপিকে দেওয়া বক্তব্য) ছিল সবচেয়ে জঘন্য এবং যুক্তরাষ্ট্র আর এসব সহ্য করবে না। যতদিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন থাকবে, ততদিন পর্যন্ত এই ব্যক্তি ইউক্রেনে শান্তি চাইবে না।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

খালেদা জিয়া-তারেক রহমানের সঙ্গে কী কথা হয়েছিল, জানালেন জামায়াত আমির

ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা স্থগিত করলেন ট্রাম্প

আপডেট টাইম : ১০:০৮:২৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫

ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা স্থগিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত সপ্তাহে জেলেনস্কির সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডার জের ধরে এবার এই সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি।

হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।

রয়টার্স ও আল-জাজিরার প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের যেসব সামরিক সরঞ্জাম এখন ইউক্রেনে নেই, সেগুলো এই সাময়িক সহযোগিতা স্থগিতের আওতায় পড়বে। এর মধ্যে রয়েছে বিমান বা জাহাজে করে যেসব অস্ত্র ইউক্রেনে যাচ্ছে এবং ইউক্রেনে প্রবেশের অপেক্ষায় পোল্যান্ডে সেসব অস্ত্র রয়েছে।

নাম না প্রকাশের শর্তে সোমবার একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্টভাবে শান্তির ওপর জোর দিয়েছেন। আমরা চাই আমাদের মিত্ররা সেই লক্ষ্যেই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকুক। এ জন্য সামরিক সহায়তা স্থগিত করা হয়েছে এবং এটি সমাধানে পৌঁছানো না পর্যন্ত এটি বিবেচনার মধ্য থাকবে।’

সাময়িক এই অস্ত্র সহযোগিতা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

যদিও কতদিন পর্যন্ত সামরিক সহায়তা স্থগিত রাখা হবে সে সম্পর্কে হোয়াইট হাউস তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি। এ বিষয়ে পেন্টাগনের পক্ষ থেকেও বিস্তারিত কোনো তথ্য সরবরাহ করা হয়নি।

বিষয়টি নিয়ে মন্তব্যের জন্য জেলেনস্কির অফিসে রয়টার্স যোগাযোগ করলেও তাতে সাড়া দেয়নি। এছাড়া ওয়াশিংটনে অবস্থিত ইউক্রেনের দূতাবাস থেকেও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

তিন বছর আগে রাশিয়া পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন শুরু করার পর থেকে ইউক্রেনের জন্য অস্ত্রের প্রধান সরবরাহকারী দেশ ছিল যুক্তরাষ্ট্র।

ট্রাম্প গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন। এরপরই তিনি ইউক্রেন এবং রাশিয়ার বিষয়ে মার্কিন নীতি বাতিল করে মস্কোর প্রতি আরও সমঝোতামূলক অবস্থান গ্রহণ করেন।

সর্বশেষ গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কির সঙ্গে নজিরবিহীন তর্ক-বিতর্কের পরে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে ওয়াশিংটনের সমর্থনের জন্য অপর্যাপ্ত কৃতজ্ঞতার জন্য জেলেনস্কির সমালোচনা করেছিলেন ট্রাম্প।

এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি যুদ্ধের অবসান চান না বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ইউরোপের সঙ্গে জেলেনস্কির সাম্প্রতিক ঘনিষ্ঠতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক পণ্ড হওয়ার পরের দিন রবিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন জেলেনস্কি। সেখানে তিনি বলেন, ‘আপাতত নিকট ভবিষ্যতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। যুদ্ধ থামানোর জন্য একটি যথাযথ চুক্তি এখনও অনেক অনেক দূরে। কোনো পক্ষই এখন পর্যন্ত এ ইস্যুতে পদক্ষেপ গ্রহণ শুরু করেনি। তবে যে চুক্তিই হোক না কেন, সেটিকে অবশ্যই ন্যায্য হতে হবে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো— (সেটিকে) টেকসই হতে হবে।’

জেলেনস্কির এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সোমবার ট্রাম্প তার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, ‘জেলেনস্কি এ পর্যন্ত যত বিবৃতি দিয়েছেন, তার মধ্যে এটি (এপিকে দেওয়া বক্তব্য) ছিল সবচেয়ে জঘন্য এবং যুক্তরাষ্ট্র আর এসব সহ্য করবে না। যতদিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন থাকবে, ততদিন পর্যন্ত এই ব্যক্তি ইউক্রেনে শান্তি চাইবে না।’