ঢাকা ০৩:২০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

রয়টার্সের প্রতিবেদন আদানির কাছে সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ সরবরাহ চেয়েছে বাংলাদেশ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৩২:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ১৯ বার

ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির প্রতিষ্ঠান আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ সরবরাহের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) এক শীর্ষ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। সংবাদমাধ্যমটি জানায়, ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যে অবস্থিত ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে আদানি গ্রুপের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম রয়টার্সকে বলেন, গত মাসেরও বেশি সময় ধরে ভারতের আদানি গ্রুপ বাংলাদেশে কম বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। এ জন্য সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে আহ্বান জানানো হয়েছে গ্রুপটির প্রতি।

২০১৭ সালে আদানি পাওয়ারের সঙ্গে ২৫ বছরের চুক্তি করেন গণঅভ্যুত্থানের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে আদানি পাওয়ার। তবে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে আনে আদানি পাওয়ার। কারণ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছিল, বকেয়া বিল বাকি থাকা এবং শীতকালে চাহিদা কম থাকায় তারা সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘আমাদের বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী আদানি তাদের দ্বিতীয় ইউনিটটি পুনরায় চালু করার পরিকল্পনা করেছিল, তবে প্রযুক্তিগত কিছু সমস্যার কারণে ইউনিটটি পুনরায় চালু করা যায়নি বলে আমরা জানতে পেরেছি।’

গত ডিসেম্বরে আদানি গ্রুপ জানিয়েছিল, বিপিডিবির কাছে তাদের ৯০০ মিলিয়ন ডলার পাওনা রয়েছে। তবে বিপিডিবির চেয়ারম্যান বলেছিলেন, আদানির কাছে বকেয়া বিলের পরিমাণ ৬৫০ মিলিয়ন ডলারের মতো। রেজাউল করিম জানান, বিপিডিবি প্রতি মাসে আদানি পাওয়ারকে ৮৫ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করছে এবং বকেয়া কমানোর চেষ্টা করছে। আদানির সঙ্গে আর কোনো সমস্য নেই বলেও দাবি করেন তিনি।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হওয়া এই চুক্তি নিয়ে বিতর্ক ওঠে সরকার পতনের পর। বিশ্লেষকেরা বলছেন, চুক্তিতে যেভাবে মূল্য নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে, তা ত্রুটিপূর্ণ। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চুক্তি অনুযায়ী বিদ্যুতের দাম নির্ধারিত হয় দুটি সূচকের গড়ের ভিত্তিতে, যা অন্যান্য ভারতীয় বিদ্যুৎ সরবরাহের তুলনায় বাংলাদেশকে ৫৫ শতাংশ বেশি দাম পরিশোধ করতে হচ্ছে।

এরই মধ্যে বাংলাদেশ সরকার আদানির সঙ্গে চুক্তির শর্ত পর্যালোচনা করার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে। চলতি মাসেই কমিটিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, কমিটির প্রতিবেদনের সুপারিশের ভিত্তিতে চুক্তির শর্ত পুনর্নির্ধারণ করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও মিঠামইনে বজ্রপাতে নিহত ৩ আহত ১

রয়টার্সের প্রতিবেদন আদানির কাছে সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ সরবরাহ চেয়েছে বাংলাদেশ

আপডেট টাইম : ০৬:৩২:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির প্রতিষ্ঠান আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ সরবরাহের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) এক শীর্ষ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। সংবাদমাধ্যমটি জানায়, ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যে অবস্থিত ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে আদানি গ্রুপের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম রয়টার্সকে বলেন, গত মাসেরও বেশি সময় ধরে ভারতের আদানি গ্রুপ বাংলাদেশে কম বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। এ জন্য সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে আহ্বান জানানো হয়েছে গ্রুপটির প্রতি।

২০১৭ সালে আদানি পাওয়ারের সঙ্গে ২৫ বছরের চুক্তি করেন গণঅভ্যুত্থানের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে আদানি পাওয়ার। তবে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে আনে আদানি পাওয়ার। কারণ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছিল, বকেয়া বিল বাকি থাকা এবং শীতকালে চাহিদা কম থাকায় তারা সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘আমাদের বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী আদানি তাদের দ্বিতীয় ইউনিটটি পুনরায় চালু করার পরিকল্পনা করেছিল, তবে প্রযুক্তিগত কিছু সমস্যার কারণে ইউনিটটি পুনরায় চালু করা যায়নি বলে আমরা জানতে পেরেছি।’

গত ডিসেম্বরে আদানি গ্রুপ জানিয়েছিল, বিপিডিবির কাছে তাদের ৯০০ মিলিয়ন ডলার পাওনা রয়েছে। তবে বিপিডিবির চেয়ারম্যান বলেছিলেন, আদানির কাছে বকেয়া বিলের পরিমাণ ৬৫০ মিলিয়ন ডলারের মতো। রেজাউল করিম জানান, বিপিডিবি প্রতি মাসে আদানি পাওয়ারকে ৮৫ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করছে এবং বকেয়া কমানোর চেষ্টা করছে। আদানির সঙ্গে আর কোনো সমস্য নেই বলেও দাবি করেন তিনি।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হওয়া এই চুক্তি নিয়ে বিতর্ক ওঠে সরকার পতনের পর। বিশ্লেষকেরা বলছেন, চুক্তিতে যেভাবে মূল্য নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে, তা ত্রুটিপূর্ণ। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চুক্তি অনুযায়ী বিদ্যুতের দাম নির্ধারিত হয় দুটি সূচকের গড়ের ভিত্তিতে, যা অন্যান্য ভারতীয় বিদ্যুৎ সরবরাহের তুলনায় বাংলাদেশকে ৫৫ শতাংশ বেশি দাম পরিশোধ করতে হচ্ছে।

এরই মধ্যে বাংলাদেশ সরকার আদানির সঙ্গে চুক্তির শর্ত পর্যালোচনা করার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে। চলতি মাসেই কমিটিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, কমিটির প্রতিবেদনের সুপারিশের ভিত্তিতে চুক্তির শর্ত পুনর্নির্ধারণ করা হবে।