ঢাকা ০৭:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

এবার টিউলিপের বোনের বিনামূল্যের ফ্ল্যাটের সন্ধান

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৩২:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৫ বার

যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে দেশটির ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক (৪২) পরিবারের আরেকটি বিনামূল্যে পাওয়া ফ্ল্যাটের সন্ধান মিলেছে। শনিবার যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য সানডে টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

টিউলিপ বর্তমানে যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের (ট্রেজারি) অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি)। মন্ত্রী হিসেবে তিনি দেশটির আর্থিক খাতের অপরাধ-দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বে আছেন। তিনি বাংলাদেশের সাবেক স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে। দ্য সানডে টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, টিউলিপ উত্তর লন্ডনের হ্যাম্পস্টেডের এমন একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন, যেটি তার পরিবারকে দিয়েছেন তার খালা শেখ হাসিনার এক মিত্র। হ্যাম্পস্টেডের ফিঞ্চলে রোডের এই ফ্ল্যাট টিউলিপের বোন আজমিনাকে বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছিল।

শেখ হাসিনা পরিবারের যেসব সদস্য সুবিধা নিয়েছেন বলে অভিযোগে বলা হচ্ছে, তাদের মধ্যে টিউলিপও আছেন। তবে তিনি কোনো অন্যায়-অনিয়ম করার কথা অস্বীকার করে আসছেন। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেছেন, টিউলিপের ওপর তার আস্থা রয়েছে।

হ্যাম্পস্টেডের ফ্ল্যাটটি ২০০৯ সালে আজমিনাকে হস্তান্তর করেন বাংলাদেশি আইনজীবী মঈন গণি। তিনি শেখ হাসিনার সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার ছবি আছে।

যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধনসংক্রান্ত নথিপত্রে বলা হয়েছে, অর্থ বা আর্থিক মূল্য রয়েছে, এমন কিছু ছাড়াই ফ্ল্যাটটি আজমিনাকে দেওয়া হয়েছে। ফ্ল্যাট হস্তান্তরের সময় আজমিনার বয়স ছিল ১৮ বছর। তখন তিনি অক্সফোর্ডে পড়াশোনা শুরু করতে যাচ্ছিলেন।

টিউলিপ ঠিক কখন ফ্ল্যাটটিতে উঠেছিলেন, তা স্পষ্ট নয়। তবে ২০১২ সালের ডিসেম্বরে টিউলিপ ওয়ার্কিং মেনস কলেজের পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার পর তিনি নথিতে তার ঠিকানা হিসেবে ফ্ল্যাটটি তালিকাভুক্ত করেন।

২০১৪ সালের জানুয়ারিতে ক্যামডেন আর্টস সেন্টারের ট্রাস্টি হওয়ার পর, ২০১৪ সালের মার্চে হ্যাম্পস্টেড ওয়েলস অ্যান্ড ক্যাম্পডেন ট্রাস্টের ট্রাস্টি হওয়ার পরও তিনি একই ঠিকানা ব্যবহার করেন। এ ছাড়া তার স্বামী ক্রিশ্চিয়ান পার্সি ২০১৬ সালের মে মাস পর্যন্ত এটিকে তার ঠিকানা হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছিলেন। তখন টিউলিপ হ্যাম্পস্টেড ও কিলবার্নের লেবার এমপি ছিলেন।

টিউলিপের বোন আজমিনার টনি ব্লেয়ারস ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল চেঞ্জে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে। তিনি সম্প্রতি শিশুদের একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু করেছেন। তিনি ফ্ল্যাটটি ২০২১ সালে ৬ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ডে বিক্রি করে দেন।

ফ্ল্যাটটির আগের মালিক আইনজীবী মঈন গণি আন্তর্জাতিক বিরোধসংক্রান্ত বিষয়ে কয়েক বছর বাংলাদেশের পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছেন। ২০২১ সালে শেখ হাসিনার তৎকালীন সরকার বিশ্বব্যাংকের একটি প্যানেলে দায়িত্ব পালনের জন্য তাকে মনোনীত করেছিল। তখন তিনি বলেছিলেন, শেখ হাসিনার কাছ থেকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদসংবলিত একটি ব্যক্তিগত চিঠি পাওয়াটা তার জন্য সম্মানের বিষয়।

হ্যাম্পস্টেডের ফ্ল্যাটটি লন্ডনের কিংস ক্রস এলাকার কাছের অ্যাপার্টমেন্টটি থেকে ভিন্ন। কিংস ক্রস এলাকার কাছের অ্যাপার্টমেন্টটি ২০০৪ সালে টিউলিপ বিনামূল্যে পান। তিনি এখনও এই অ্যাপার্টমেন্টটির মালিক।

গত শুক্রবার যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, কিংস ক্রস এলাকার কাছের অ্যাপার্টমেন্টটি টিউলিপকে বিনামূল্যে দিয়েছিলেন আবদুল মোতালিফ নামের একজন আবাসন ব্যবসায়ী। তিনি শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের সহযোগী।

হ্যাম্পস্টেডের ফ্ল্যাটটির বিষয়ে টিউলিপ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তার ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, তিনি একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তার বোনের এই ফ্ল্যাটটিতে বসবাস করেছিলেন, যা অনেক পরিবারের জন্য সাধারণ একটি বিষয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে একসাথে সাকিব-তামিম

এবার টিউলিপের বোনের বিনামূল্যের ফ্ল্যাটের সন্ধান

আপডেট টাইম : ১০:৩২:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫

যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে দেশটির ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক (৪২) পরিবারের আরেকটি বিনামূল্যে পাওয়া ফ্ল্যাটের সন্ধান মিলেছে। শনিবার যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য সানডে টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

টিউলিপ বর্তমানে যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের (ট্রেজারি) অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি)। মন্ত্রী হিসেবে তিনি দেশটির আর্থিক খাতের অপরাধ-দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বে আছেন। তিনি বাংলাদেশের সাবেক স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে। দ্য সানডে টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, টিউলিপ উত্তর লন্ডনের হ্যাম্পস্টেডের এমন একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন, যেটি তার পরিবারকে দিয়েছেন তার খালা শেখ হাসিনার এক মিত্র। হ্যাম্পস্টেডের ফিঞ্চলে রোডের এই ফ্ল্যাট টিউলিপের বোন আজমিনাকে বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছিল।

শেখ হাসিনা পরিবারের যেসব সদস্য সুবিধা নিয়েছেন বলে অভিযোগে বলা হচ্ছে, তাদের মধ্যে টিউলিপও আছেন। তবে তিনি কোনো অন্যায়-অনিয়ম করার কথা অস্বীকার করে আসছেন। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেছেন, টিউলিপের ওপর তার আস্থা রয়েছে।

হ্যাম্পস্টেডের ফ্ল্যাটটি ২০০৯ সালে আজমিনাকে হস্তান্তর করেন বাংলাদেশি আইনজীবী মঈন গণি। তিনি শেখ হাসিনার সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার ছবি আছে।

যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধনসংক্রান্ত নথিপত্রে বলা হয়েছে, অর্থ বা আর্থিক মূল্য রয়েছে, এমন কিছু ছাড়াই ফ্ল্যাটটি আজমিনাকে দেওয়া হয়েছে। ফ্ল্যাট হস্তান্তরের সময় আজমিনার বয়স ছিল ১৮ বছর। তখন তিনি অক্সফোর্ডে পড়াশোনা শুরু করতে যাচ্ছিলেন।

টিউলিপ ঠিক কখন ফ্ল্যাটটিতে উঠেছিলেন, তা স্পষ্ট নয়। তবে ২০১২ সালের ডিসেম্বরে টিউলিপ ওয়ার্কিং মেনস কলেজের পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার পর তিনি নথিতে তার ঠিকানা হিসেবে ফ্ল্যাটটি তালিকাভুক্ত করেন।

২০১৪ সালের জানুয়ারিতে ক্যামডেন আর্টস সেন্টারের ট্রাস্টি হওয়ার পর, ২০১৪ সালের মার্চে হ্যাম্পস্টেড ওয়েলস অ্যান্ড ক্যাম্পডেন ট্রাস্টের ট্রাস্টি হওয়ার পরও তিনি একই ঠিকানা ব্যবহার করেন। এ ছাড়া তার স্বামী ক্রিশ্চিয়ান পার্সি ২০১৬ সালের মে মাস পর্যন্ত এটিকে তার ঠিকানা হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছিলেন। তখন টিউলিপ হ্যাম্পস্টেড ও কিলবার্নের লেবার এমপি ছিলেন।

টিউলিপের বোন আজমিনার টনি ব্লেয়ারস ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল চেঞ্জে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে। তিনি সম্প্রতি শিশুদের একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু করেছেন। তিনি ফ্ল্যাটটি ২০২১ সালে ৬ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ডে বিক্রি করে দেন।

ফ্ল্যাটটির আগের মালিক আইনজীবী মঈন গণি আন্তর্জাতিক বিরোধসংক্রান্ত বিষয়ে কয়েক বছর বাংলাদেশের পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছেন। ২০২১ সালে শেখ হাসিনার তৎকালীন সরকার বিশ্বব্যাংকের একটি প্যানেলে দায়িত্ব পালনের জন্য তাকে মনোনীত করেছিল। তখন তিনি বলেছিলেন, শেখ হাসিনার কাছ থেকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদসংবলিত একটি ব্যক্তিগত চিঠি পাওয়াটা তার জন্য সম্মানের বিষয়।

হ্যাম্পস্টেডের ফ্ল্যাটটি লন্ডনের কিংস ক্রস এলাকার কাছের অ্যাপার্টমেন্টটি থেকে ভিন্ন। কিংস ক্রস এলাকার কাছের অ্যাপার্টমেন্টটি ২০০৪ সালে টিউলিপ বিনামূল্যে পান। তিনি এখনও এই অ্যাপার্টমেন্টটির মালিক।

গত শুক্রবার যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, কিংস ক্রস এলাকার কাছের অ্যাপার্টমেন্টটি টিউলিপকে বিনামূল্যে দিয়েছিলেন আবদুল মোতালিফ নামের একজন আবাসন ব্যবসায়ী। তিনি শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের সহযোগী।

হ্যাম্পস্টেডের ফ্ল্যাটটির বিষয়ে টিউলিপ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তার ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, তিনি একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তার বোনের এই ফ্ল্যাটটিতে বসবাস করেছিলেন, যা অনেক পরিবারের জন্য সাধারণ একটি বিষয়।