নিজের সন্তানের জন্য জীবনের সব সুখ বিসর্জন দেন বাবা-মা। নিজের যত কষ্টই হোক না কেন, সন্তান যেন ভালো থাকে সেটাই প্রতিটি মা-বাবার কাম্য। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের এক মা নিজের যৌবন ধরে রাখা, সৌন্দর্য বজায় রাখা এবং বার্ধক্য প্রতিরোধের চেষ্টায় অভিনব এক উদ্যোগ নিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
৪৭ বছর বয়সী এই নারীর নাম মার্সেলা ইগলেসিয়াস।
তিনি নিজেকে ‘হিউম্যান বার্বি’ বলে দাবি করেন। তিনি দাবি করেছেন, নিজের যৌবন ধরে রাখার জন্য তার ২৩ বছর বয়সী ছেলের রক্ত ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছেন।রক্ত নেয়ার পরিকল্পনার বিষয়ে নিউ ইয়র্ক পোস্টকে মার্সেলা জানিয়েছেন, শরীরে তারুণ্যের কোষ পুনর্জীবিত এবং ধরে রাখার জন্য অভিনব ও কার্যকর পদ্ধতি হচ্ছে তরুণ-তরুণীর শরীরের রক্ত গ্রহণ করা। এক্ষেত্রে নিজের ছেলে বা মেয়ের রক্ত ব্যবহার করলে এর কার্যকারিতা ও উপকারিতা ব্যাপক মাত্রায় বেড়ে যায়।
তার ছেলে রদ্রিগো এ পদ্ধতি সম্পর্কে সচেতন এবং সে এটি তার মায়ের জন্য করতে আগ্রহী। এমনকি এই পদ্ধতিতে তার দাদিকেও সহায়তা করার জন্য উচ্ছ্বসিত ও মুখিয়ে রয়েছে রদ্রিগো।তিনি আরও জানান, স্টেম সেল থেরাপি নেয়ার পর তিনি জানতে পারেন, কম বয়সী দাতার কোষ থেকে অনেক উপকার পাওয়া যায়, বিশেষ করে যখন দাতা তার নিজের ছেলে।
মার্সেলা জানিয়েছেন, এমন রক্ত সঞ্চালন পদ্ধতি শরীরে পূর্ণমাত্রায় অক্সিজেন বহনকারী নতুন রক্তকোষ নিয়ে আসে।
এতে বিপুল পরিমাণে প্লাজমা প্রোটিন এবং ক্লটিং ফ্যাক্টর গ্রহণকারীর শরীরে চলে আসে; যা দ্রুত রক্তপাত বন্ধের সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি বা রোগ নিরাময়ে সহায়ক হয়।তিনি জানিয়েছেন, এই প্রক্রিয়া তার শরীরকে পুনর্জীবিত করতে পারবে এবং তাকে শক্তিশালী ও সুস্থ অনুভব করতে সহায়ক হবে। তিনি চলতি বছরের শুরুতেই পদ্ধতিটি নেয়ার পরিকল্পনা করেছেন এবং বর্তমানে একজন দক্ষ চিকিৎসক খুঁজছেন।
তবে এই বিষয়টি মোটেও ভালো নজরে দেখছে না প্রশাসন। ২০১৯ সালেই ‘অল্পবয়সী দাতা’দের শরীর থেকে বেশি বয়সী গ্রহিতার শরীরে প্লাজমা ইনফিউশন নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্য়াডমিনিস্ট্রেশন’ (এফডিএ)।
তাদের স্পষ্ট কথা, এর ফলে ভয়ঙ্কর শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।সেই সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, এর ফলে বয়সবৃদ্ধির লক্ষণ দেখা দিতে পারে এবং স্মৃতিভ্রংশ ঘটতে পারে। এমনকি, ডিমেনশিয়া, পারকিনসন ডিসিজ, অ্যালঝাইমার মতো গুরুতর অসুখেও আক্রান্ত পারেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
নিউ ইয়র্ক পোস্টের খবরে বলা হয়, যৌবন ধরে রাখতে এই নারী ইতিমধ্যেই প্রায় ১ লক্ষ মার্কিন ডলার খরচ করেছেন, শুধুমাত্র বিভিন্ন ধরনের বিউটি ট্রিটমেন্ট করানোর জন্য। আর এবার তিনি নিজের সন্তানের শরীর থেকে রক্ত চান।
পশ্চিমা দুনিয়ার কল্পকাহিনিতে ড্রাকুলা বা ভ্যাম্পায়ার নামক যে পিশাচের কথা বলা হয়, তারাও নাকি বেঁচে থাকতে এবং চির যৌবন ধরে রাখতে অন্য মানুষের রক্ত পান করত। এই নারী যদিও সরাসরি ছেলের রক্ত পান করবেন না, বিকল্প উপায়ে তা শরীরে গ্রহণ করবেন।