ঢাকা ০১:৩৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করলাগাছের সঙ্গে এ কেমন শত্রুতা!

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১৮:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৩ বার

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে মো. স্বপন নামের এক কৃষকের ১ একরের জমির করলাগাছ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গত রোববার (২২ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার চরজুবিলী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কচ্ছপিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

কৃষক স্বপন সুবর্ণচরের চরজুবিলী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কচ্ছপিয়া গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক স্বপন বলেন, এক একর জমিতে করলা চাষ করেছি। মাচা দিয়ে দুই-আড়াই হাজার করলাগাছ রোপণ করেছিলাম। সবগুলো গাছে করলা ধরেছিল। প্রতিদিনের মতো রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্ষেতেই ছিলাম। কিন্তু রাতে সব গাছ কেটে ও উপড়ে ফেলে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পরদিন সকালে গিয়ে দেখতে পাই ক্ষেতের সব করলাগাছ নুয়ে পড়েছে। এরপর দেখি সবগুলো গাছ কেটে নষ্ট করে ফেলা হয়েছে

জানা যায়, শাকসবজি চাষ করেই স্বপন সংসার চালান। সোমবার সকালে ক্ষেতে গিয়ে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে তার। একটি–দুটি নয়, ক্ষেতের এক হাজারের বেশি করলাগাছের একই অবস্থা। ধার-দেনা করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যত্ন করে বড় করে তোলা করলাক্ষেতের এমন দৃশ্যে তিনি হতবাক হয়ে পড়েন।

ক্ষতিগ্রস্ত এই কৃষক আরও বলেন, আমি গরিব কৃষক। অনেক ধারদেনা করে এক একর জমিতে করলা চাষ করেছি। আমার যা পুঁজি ছিল ওই ক্ষেতেই লাগিয়েছি। এতে প্রায় ৩-৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। করলা বিক্রি করে দেনার টাকা পরিশোধ করার কথা ছিল। এখন দেখছি সবই শেষ।

চর জুবলী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. ইব্রাহিম খলিল বলেন, রাতের অন্ধকারে ক্ষেতের করলাগাছ কেটে দেওয়ার ঘটনাটি আমি শুনেছি। ব্যস্ততার কারণে দেখতে যেতে পারিনি। মানুষের সঙ্গে মানুষের বিরোধ থাকতে পারে, ভুল–বোঝাবুঝি থাকতে পারে। কিন্তু ক্ষেতের ফসলের সঙ্গে কারও তো শত্রুতা হয় না। কারা ওই ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে, তাদের শনাক্ত করতে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছি এবং কোনও তথ্য পাওয়া গেলে পরিষদ থেকে ব্যবস্থা নেব।

সুবর্ণচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ বলেন, কে বা কারা স্বপনের করলা গাছ কেটে উপড়ে ফেলেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কৃষি বিভাগ থেকে ওই কৃষককে কৃষি প্রণোদনা দিয়ে সহযোগিতা করা হবে।

চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি তবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কেউ জানায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

করলাগাছের সঙ্গে এ কেমন শত্রুতা!

আপডেট টাইম : ১১:১৮:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে মো. স্বপন নামের এক কৃষকের ১ একরের জমির করলাগাছ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গত রোববার (২২ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার চরজুবিলী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কচ্ছপিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

কৃষক স্বপন সুবর্ণচরের চরজুবিলী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কচ্ছপিয়া গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক স্বপন বলেন, এক একর জমিতে করলা চাষ করেছি। মাচা দিয়ে দুই-আড়াই হাজার করলাগাছ রোপণ করেছিলাম। সবগুলো গাছে করলা ধরেছিল। প্রতিদিনের মতো রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্ষেতেই ছিলাম। কিন্তু রাতে সব গাছ কেটে ও উপড়ে ফেলে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পরদিন সকালে গিয়ে দেখতে পাই ক্ষেতের সব করলাগাছ নুয়ে পড়েছে। এরপর দেখি সবগুলো গাছ কেটে নষ্ট করে ফেলা হয়েছে

জানা যায়, শাকসবজি চাষ করেই স্বপন সংসার চালান। সোমবার সকালে ক্ষেতে গিয়ে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে তার। একটি–দুটি নয়, ক্ষেতের এক হাজারের বেশি করলাগাছের একই অবস্থা। ধার-দেনা করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যত্ন করে বড় করে তোলা করলাক্ষেতের এমন দৃশ্যে তিনি হতবাক হয়ে পড়েন।

ক্ষতিগ্রস্ত এই কৃষক আরও বলেন, আমি গরিব কৃষক। অনেক ধারদেনা করে এক একর জমিতে করলা চাষ করেছি। আমার যা পুঁজি ছিল ওই ক্ষেতেই লাগিয়েছি। এতে প্রায় ৩-৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। করলা বিক্রি করে দেনার টাকা পরিশোধ করার কথা ছিল। এখন দেখছি সবই শেষ।

চর জুবলী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. ইব্রাহিম খলিল বলেন, রাতের অন্ধকারে ক্ষেতের করলাগাছ কেটে দেওয়ার ঘটনাটি আমি শুনেছি। ব্যস্ততার কারণে দেখতে যেতে পারিনি। মানুষের সঙ্গে মানুষের বিরোধ থাকতে পারে, ভুল–বোঝাবুঝি থাকতে পারে। কিন্তু ক্ষেতের ফসলের সঙ্গে কারও তো শত্রুতা হয় না। কারা ওই ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে, তাদের শনাক্ত করতে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছি এবং কোনও তথ্য পাওয়া গেলে পরিষদ থেকে ব্যবস্থা নেব।

সুবর্ণচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ বলেন, কে বা কারা স্বপনের করলা গাছ কেটে উপড়ে ফেলেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কৃষি বিভাগ থেকে ওই কৃষককে কৃষি প্রণোদনা দিয়ে সহযোগিতা করা হবে।

চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি তবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কেউ জানায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।