পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় কৃষকের কয়েকশ সবজি এবং ফলের গাছ গভীর রাতে কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। জমি নিয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি গাজী মো. ইউসুফ আলীর (মহুরি) বিরুদ্ধে কয়েকশ ফল ও সবজি গাছ কেটে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী কৃষক।
কুয়াকাটা পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের মেলাপাড়ায় প্রায় দুই একর জায়গা জুড়ে বিভিন্ন দুই লাখ টাকা খরচ করে ফলজ গাছের পাশাপাশি প্রায় তিনশ লাউ, কুমড়া, বেগুন, টমেটোর চাষাবাদ করেন কচ্ছপখালী এলাকার কৃষক হাবিবুর রহমান মৃর্ধা। গত কয়েকদিন আগে সবজি বিক্রি শুরু করলেও সোমবার সকালে উঠে কৃষক দেখেন তার ক্ষেতের প্রায় ৭০ শতাংশ গাছ কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা।
কৃষক হাবিবুর রহমান মূর্ধার বাবা আবু সালেহ মূর্ধা বলেন, গতকাল রাতে আমি এশার নামাজ শেষে সবকিছু ঠিকঠাক দেখে শুয়ে পড়ি। কিন্তু গভীর রাতে বেশ কয়েকজন লোকের আনাগোনার শব্দ পাওয়া যায় তবে আমি ভয়ে বের হইনি। সকাল বেলা উঠে দেখি আমাদের সর্বনাশ করেছে। এই এলাকায় আমাদের কোনো শত্রু নেই, কারা কেটেছে আমরা চোখে দেখিনি, তবে এখানে এই জমি দখলের চেষ্টা করে যাচ্ছে ইউসুফ মহুরির লোকজন। এই ক্ষতির বিচার চাই।
স্থানীয় বাসিন্দা সোলাইমান বলেন, এই এলাকায় তাদের সঙ্গে কারো কোনো দ্বন্দ্ব দেখিনি। তাদের এই কৃষি কাজে অনেক পরিশ্রম করেছে যা আমরা চোখে দেখেছি। এটা অমানবিক, এই কাজে শুধু এই কৃষকের না দেশের ক্ষতি করা হয়েছে। এই ধরনের অমানুষদের কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত।
কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, আমার কমপক্ষে পাঁচ লাখ টাকার সবজি-ফল বিক্রি হতো। কিন্তু নিমিষেই সব শেষ করে দিলো। আমার সব গাছে ফল ছিল। আমাদের এই সম্পত্তি এতদিন আওয়ামী লীগের ক্ষমতার জোরে আটকে রেখেছে, এখনো তারা থেমে নেই, রাতের আঁধারে সক্রিয়। ইউসুফ মহুরির লোকজন ছাড়া আর কেউ আমার এই ক্ষতি করেনি। আমি থানায় অভিযোগ দিয়েছি। আমি ক্ষতিপূরণ চাই।
এবিষয়ে অভিযুক্ত গাজী মো. ইউসুফ আলী (মহুরি) অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ৫ তারিখের পরে আমরা পরিবারসহ এলাকার বাইরে ছিলাম। এখন আমার বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য ষড়যন্ত্র করে দোষ আমার মাথায় চাপাচ্ছে। তাদের গাছগুলো কে বা কারা কেটেছে এগুলো আমার কিংবা আমার পরিবারের কারো জানা নেই।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শনে পুলিশ পাঠিয়েছি। তবে এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।