গোড়ল গ্রামের মনিরুজ্জামানের স্বপ্ন ছিল কোয়েল পাখির গ্রাম বানাবেন। সেই গ্রামে পাখির পাশাপাশি বেকারদের কর্মসংস্থান তৈরি করবেন। মনিরুজ্জামানের সে স্বপ্ন আজ পূরণ হয়েছে। তিনি সত্যিই কোয়েল পাখির গ্রাম করেছেন।
লালমনিরহাট শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরের উপজেলা কালিগঞ্জ। সেখানেই গোড়ল গ্রাম। এখানকারই বাসিন্দা মনিরুজ্জামান। বেকার জীবনে যখন চোখে মুখে অন্ধকার দেখছিলেন, ঠিক তখনই (২০১১ সালে) ৩০০ কোয়েল পাখি নিয়ে একটি খামার তৈরি করেন। স্ত্রী আনজুয়ারার নামে নাম রাখেন ‘এ এগ্রো ফার্ম’। ৩০০ কোয়েল পাখি নিয়ে শুরু করলেও এখন তার খামারে ১৫ হাজার পাখি। প্রতিদিন ডিম আর বাচ্চা বিক্রি করে তাদের বেশ আয় হচ্ছে। পাখির মাংস লালমনিরহাট ছাড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। এতেও প্রতিদিন গড়ে আয় হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। পাখি, ডিম আর বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের কথা মাথায় রেখে গড়ে তোলা কোয়েল পাখির এই খামার থেকে মনিরুজ্জামান এখন সফল খামারি হিসাবে পরিচিত। স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে কোয়েল পাখি আর ডিমের ব্যবসায় ব্যস্ত সময় কাটে তাদের। মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন, প্রথম দুই বছর তাকে বেশ লোকসান দিতে হয়েছে। তবুও প্রতিজ্ঞা করেন, গ্রামের বেকার মানুষের স্বার্থে হলেও এই কোয়েল পাখি পালন করতে হবে। গ্রামের মানুষের ডিমের চাহিদা মেটাতেও এটা করতে হবে। তিনি নতুন চিন্তায় নতুন করে খামার করার পরিকল্পনা করেন। নিজের জমিতে গড়ে তোলেন খামার। খনন করেন পুকুর। তাতে করেন মাছের চাষ। আর তারই চারপাশে বিশাল চালায় গড়ে তোলেন কোয়েল পাখির খামার। তারপর এক বছরের মাথায় পাখির সংখ্যা যেমন বাড়তে থাকে, তেমনি বাড়তে থাকে ডিম। মাত্র ৬ মাসের মধ্যে এটি ১৫ হাজার পাখির খামারে পরিণত হয়। এই কোয়েল পাখির ব্যবসা করে সংসার চলছে গ্রামের অন্তত ৩৫ জন বেকার মানুষের। ফেরি করে পাখি ও ডিম বিক্রি করে ছেলে-মেয়ের পড়ালেখা ও সংসার খরচ জোগাচ্ছেন তারা। লালমনিরহাট জেলা পশু সম্পদ কর্মকর্তা আবু হোসেন সরকার জানান, মনিরুজ্জামান একজন সফল উদ্যোক্তা।তাকে মডেল হিসেবে ধরেই আমরা এখন কোয়েল পাখির ছোট ছোট খামার গড়ার কথা ভাবছি।