ঢাকা ০৯:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তামিমের সঙ্গে ব্যাটিং সব সময় দারুণ লাগত ইমরুলের

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:৩৬:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪
  • ১ বার

মিরপুরে একাডেমি মাঠে খুলনা বিভাগের অনুশীলন চলছে। মাঠে প্রবেশ করতে করতে ইমরুল কায়েসের দৃষ্টি বেশ দূরে, কোথাও যেন স্মৃতির গলি দিয়ে হাঁটছেন। চোখে স্মৃতি, গায়ে কিছুটা ক্লান্তি—সব কিছুই যেন জানিয়ে দেয়, বিশেষ কিছু অপেক্ষা করছে তাঁর জন্য। সত্যিই তাই, ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণ টেস্ট ও প্রথম শ্রেণি ক্রিকেটকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানাতে কালকের দিনটাই অপেক্ষা করছে এ বাঁহাতি ওপেনারের জন্য।

বাংলাদেশের হয়ে ৩৯ টেস্টে ১৭৯৭ রান ইমরুলের, গড় ২৪.২৮। তিনটি সেঞ্চুরির সঙ্গে রয়েছে ৪টি ফিফটি। সবশেষ ২০১৯ সালের নভেম্বরে ইডেন গার্ডেনে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট খেলেছিলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৩৭ ম্যাচে ৭৯৩০ রান, গড় ৩৪.১৮। ২০টি সেঞ্চুরির পাশাপাশি রয়েছে ২৭টি ফিফটি। মিরপুরে কাল থেকে শুরু হচ্ছে জাতীয় ক্রিকেট লিগের পঞ্চম রাউন্ড। ইমরুল খেলছেন খুলনার হয়ে। এ ম্যাচ খেলেই লাল বলের ক্রিকেটকে বিদায় বলবেন তিনি।

জাতীয় দলের হয়ে সবশেষ টেস্ট ২০১৯, ওয়ানডে ২০১৮ ও টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ২০১৮ সালে। ওয়ানডে সংস্করণে শেষ পাঁচ ইনিংসের মধ্যে আছে দুটি সেঞ্চুরি ও একটি ৯০ রানের ইনিংস। দলে সঠিক সুযোগ না পাওয়া নিয়ে কিছুটা আফসোস থেকেই যায় ইমরুলের, ‘আমি মনে করি, আমার ক্যারিয়ার থেকে আরও অনেক কিছু পাওয়া যেত। কিন্তু নির্বাচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারিনি। ব্যাপারটা অবশ্য কিছুটা ভাগ্যেরও ওপর ছাড়লেন, ‘এটা ছিল আমার ভাগ্য। কিন্তু সাদা বলের ক্রিকেটে যতটুকু পারব, শেষ পর্যন্ত ভালো খেলার চেষ্টা করব।’

তামিম ইকবাল-ইমরুলের ওপেনিং জুটি ছিল বেশ কার্যকরিও। টেস্টে ৫৩ ইনিংসে ২৩৩৬ রান তুলেছে এই জুটি, গড় ৪৫.৮০। সীমিত ওভারেও দুজনের বোঝাপড়া ছিল দারুণ। একে অপরের ওপর আস্থা ও উৎসাহ দিতেন দলের কঠিন সময়ে। তামিমের সঙ্গে জুটি প্রসঙ্গে ইমরুল বললেন, ‘তামিমের সঙ্গে ব্যাটিং করতে সব সময়ই দারুণ লাগত। কখনোই একে অপরকে ছেড়ে চলতে হয়নি, বরং একে অপরকে শক্তি দিয়েছি।’

২০১৫ সালে খুলনায় শেখ আবু নাসের স্টেডিয়াডামে প্রায় হেরে প্রায় হেরে যাওয়া মাচটা পাকিস্তানের বিপক্ষে ড্র করেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে ওপেনিং জুটিতে তামিম ও ইমরুল গড়েন ৩১২ রানের অসাধারণ এক জুটি। তামিম ডাবল সেঞ্চুরি, আর ইমরুল প্রথম ইনিংসে ফিফটির পর দ্বিতীয় ইনিংস খেলেছেন ১৫০ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। সেই টেস্টের স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে ইমরুল বললেন, ‘তামিম বলত, দোস্ত, যদি আমরা আরেকটা সেশন খেলতে পারি, আমরা এই টেস্ট ড্র করতে পারব। আর সেই বোঝাপড়াতেই আমরা সফল হয়েছিলাম।’

টেস্টের পাশপাশি জাতীয় ক্রিকেট লিগ থেকে অবসরের ঘোষণার ব্যাপারটি নিজের একান্ত সিদ্ধান্তই বললেন ইমরুল। সম্মানের সঙ্গে বিদায় নেওয়াটা তাঁর কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বললেন, ‘খুলনা দলের কিছু খেলোয়াড় আমাকে জিজ্ঞেস করেছে, কেন আমি এখন অবসর নিচ্ছি? আমি বললাম, হয়তো দু’বছর পর তোমরা আমাকে বলবে, আপনি কবে ছাড়বেন? তখন হয়তো খারাপ লাগবে। আমি চাই সম্মানের সঙ্গে নিজের ইচ্ছায় সরে দাঁড়াতে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

তামিমের সঙ্গে ব্যাটিং সব সময় দারুণ লাগত ইমরুলের

আপডেট টাইম : ০৮:৩৬:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

মিরপুরে একাডেমি মাঠে খুলনা বিভাগের অনুশীলন চলছে। মাঠে প্রবেশ করতে করতে ইমরুল কায়েসের দৃষ্টি বেশ দূরে, কোথাও যেন স্মৃতির গলি দিয়ে হাঁটছেন। চোখে স্মৃতি, গায়ে কিছুটা ক্লান্তি—সব কিছুই যেন জানিয়ে দেয়, বিশেষ কিছু অপেক্ষা করছে তাঁর জন্য। সত্যিই তাই, ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণ টেস্ট ও প্রথম শ্রেণি ক্রিকেটকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানাতে কালকের দিনটাই অপেক্ষা করছে এ বাঁহাতি ওপেনারের জন্য।

বাংলাদেশের হয়ে ৩৯ টেস্টে ১৭৯৭ রান ইমরুলের, গড় ২৪.২৮। তিনটি সেঞ্চুরির সঙ্গে রয়েছে ৪টি ফিফটি। সবশেষ ২০১৯ সালের নভেম্বরে ইডেন গার্ডেনে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট খেলেছিলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৩৭ ম্যাচে ৭৯৩০ রান, গড় ৩৪.১৮। ২০টি সেঞ্চুরির পাশাপাশি রয়েছে ২৭টি ফিফটি। মিরপুরে কাল থেকে শুরু হচ্ছে জাতীয় ক্রিকেট লিগের পঞ্চম রাউন্ড। ইমরুল খেলছেন খুলনার হয়ে। এ ম্যাচ খেলেই লাল বলের ক্রিকেটকে বিদায় বলবেন তিনি।

জাতীয় দলের হয়ে সবশেষ টেস্ট ২০১৯, ওয়ানডে ২০১৮ ও টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ২০১৮ সালে। ওয়ানডে সংস্করণে শেষ পাঁচ ইনিংসের মধ্যে আছে দুটি সেঞ্চুরি ও একটি ৯০ রানের ইনিংস। দলে সঠিক সুযোগ না পাওয়া নিয়ে কিছুটা আফসোস থেকেই যায় ইমরুলের, ‘আমি মনে করি, আমার ক্যারিয়ার থেকে আরও অনেক কিছু পাওয়া যেত। কিন্তু নির্বাচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারিনি। ব্যাপারটা অবশ্য কিছুটা ভাগ্যেরও ওপর ছাড়লেন, ‘এটা ছিল আমার ভাগ্য। কিন্তু সাদা বলের ক্রিকেটে যতটুকু পারব, শেষ পর্যন্ত ভালো খেলার চেষ্টা করব।’

তামিম ইকবাল-ইমরুলের ওপেনিং জুটি ছিল বেশ কার্যকরিও। টেস্টে ৫৩ ইনিংসে ২৩৩৬ রান তুলেছে এই জুটি, গড় ৪৫.৮০। সীমিত ওভারেও দুজনের বোঝাপড়া ছিল দারুণ। একে অপরের ওপর আস্থা ও উৎসাহ দিতেন দলের কঠিন সময়ে। তামিমের সঙ্গে জুটি প্রসঙ্গে ইমরুল বললেন, ‘তামিমের সঙ্গে ব্যাটিং করতে সব সময়ই দারুণ লাগত। কখনোই একে অপরকে ছেড়ে চলতে হয়নি, বরং একে অপরকে শক্তি দিয়েছি।’

২০১৫ সালে খুলনায় শেখ আবু নাসের স্টেডিয়াডামে প্রায় হেরে প্রায় হেরে যাওয়া মাচটা পাকিস্তানের বিপক্ষে ড্র করেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে ওপেনিং জুটিতে তামিম ও ইমরুল গড়েন ৩১২ রানের অসাধারণ এক জুটি। তামিম ডাবল সেঞ্চুরি, আর ইমরুল প্রথম ইনিংসে ফিফটির পর দ্বিতীয় ইনিংস খেলেছেন ১৫০ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। সেই টেস্টের স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে ইমরুল বললেন, ‘তামিম বলত, দোস্ত, যদি আমরা আরেকটা সেশন খেলতে পারি, আমরা এই টেস্ট ড্র করতে পারব। আর সেই বোঝাপড়াতেই আমরা সফল হয়েছিলাম।’

টেস্টের পাশপাশি জাতীয় ক্রিকেট লিগ থেকে অবসরের ঘোষণার ব্যাপারটি নিজের একান্ত সিদ্ধান্তই বললেন ইমরুল। সম্মানের সঙ্গে বিদায় নেওয়াটা তাঁর কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বললেন, ‘খুলনা দলের কিছু খেলোয়াড় আমাকে জিজ্ঞেস করেছে, কেন আমি এখন অবসর নিচ্ছি? আমি বললাম, হয়তো দু’বছর পর তোমরা আমাকে বলবে, আপনি কবে ছাড়বেন? তখন হয়তো খারাপ লাগবে। আমি চাই সম্মানের সঙ্গে নিজের ইচ্ছায় সরে দাঁড়াতে।’