২০১০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর মাশরুর হোসেন সিদ্দিকীকে বিয়ে করেছিলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। দাম্পত্যজীবনের মাত্র চার বছর পরই ভেঙে যায় সেই সংসার। এরপর থেকে একমাত্র মেয়ে মিশেল আমানি সায়রাকে নিয়ে সিঙ্গেল মাদার হিসেবে থাকছেন এই অভিনেত্রী। সম্প্রতি জীবনের ৪১টি বসন্ত পার করে ফেলেছেন বাঁধন। গেল ২৮ অক্টোবর ৪২-এ পা রেখেছেন তিনি। এই সময়ে এসে উপলব্ধি করছেন একজন সঙ্গীর। যা বাঁধন নিজেই জানিয়েছেন এক সাক্ষাৎকারে।
অভিনেত্রীর কথায়, ‘আমার মেয়ে তো এখন একটু বড় হয়েছে। ও আস্তে আস্তে বুঝছে, মায়ের সবকিছুই একা একাই করতে হয়। মাকে একা কষ্ট করতে হয়, যুদ্ধ করতে হয়। সবকিছু দেখে মেয়ের মনে হয়েছে, মায়ের একজন সঙ্গী দরকার।’
তিনি আরও বলেন, ‘এক-দেড় বছর হবে জীবনসঙ্গীর কথা চিন্তা করছি। আমি এখনো কাউকে খুঁজে পাইনি। আমি তো বললাম, বিষয়টা এ রকম না যে আশপাশে জীবনসঙ্গী ছড়ায়ে-ছিটায়ে আছে। কিন্তু নিঃসন্দেহে মনে করি, জীবনসঙ্গী দরকার আছে। এখন অনেক বেশি মনে করি যে, একজন জীবনসঙ্গী থাকতেই পারে সঙ্গে। মানুষের থাকে না…। জীবনসঙ্গী শব্দটা যে বুঝবে, সে রকম কেউ যদি আসে, নিঃসন্দেহে সঙ্গী হিসেবে তার সঙ্গে পথচলা যাবে।’
কেমন জীবনসঙ্গী চান জানতে চাইলে বাঁধন বলেন, ‘জীবনসঙ্গীর ক্ষেত্রে আমাকে আমার মতো যে গ্রহণ করবে, সেই জিনিসটা খুব জরুরি। আর এটা আমাদের সমাজে তো খুবই দুর্লভ। এ রকম না যে আশপাশে অজস্র খুঁজে পেয়েছি, সে রকমও না।’
হঠাৎ বিয়ের পরিকল্পনা সামনে আনার বিশেষ কোনো কারণ আছে কি-না জানতে চাইলে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’খ্যাত এই অভিনেত্রী বলেন, ‘বিশেষ কোনো কারণ নেই। ৪০ বছর বয়স পার হয়ে গেছে তো। আমি তো আপনাকে আগেও বলছি, ৪০ বছরে আমি অন্যরকম একটা জীবন লাভ করছি। তাই এই নতুন জীবনে মনে হয়েছে, একজন সঙ্গী থাকতেই পারে। সঙ্গী ছাড়া তো মানুষ থাকতে পারে না। আমার পুরো জীবনটা সঙ্গী ছাড়াই কেটেছে, অলমোস্ট। বিয়ে হোক বা ওই রকম কিছু হোক, আমার জীবনে কখনো ওই রকম কিছু হয় নাই যে পথচলায় সত্যিকারের একজন সঙ্গী পেয়েছি কখনো। সব সময় হয় একজন দানব পেয়েছি, না হলে যে আমাকে অত্যাচার করছে, এ রকম মানুষ পেয়েছি। আমাকে অ্যাবিউজ করছে, এ রকম মানুষই পেয়েছি। আমার জীবনে যারা আসছে, সবাই বাধা হিসেবেই আসছে। আমার চলার পথটাকে মসৃণ করতে আসেনি কেউ। তাই আমার জীবনে যারা বাধা হবে, তারা তো আমার জীবনে থাকতে পারবে না। এটা সম্ভবও না। তাই ওই অর্থে আমি কোনো জীবনসঙ্গী পাইনি, এটা সত্যি। সব মিলিয়ে এখন মনে হয়েছে, পথচলার একজন সঙ্গী হতেই পারে।’
যারা এসেছিল, আসার আগে কী ভেবেছিলেন তারা দানব হতে পারে এমন প্রশ্নের উত্তরে বাঁধন বলেন, ‘নিঃসন্দেহে না। মানুষকে তো আর ওইভাবে দূর থেকে দেখে কিছু বোঝা যায় না।’