দীর্ঘ অনুপস্থিতির পর ইরানি কমান্ডার ইসমাইল কানি মঙ্গলবার জনসমক্ষে উপস্থিত হয়েছেন। এ দিন তাকে লেবাননে নিহত জেনারেল আব্বাস নিলফরৌশানের জানাজায় অংশ নিতে দেখা যায়।
নিলফরৌশান ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের একজন জেনারেল ছিলেন। গত মাসে বৈরুতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হন তিনি।
ওই হামলায় হিজবুল্লাহপ্রধান হাসান নাসরাল্লাহও নিহত হয়েছিলেন। অন্যদিকে কানি হলেন রেভল্যুশনারি গার্ডের বিদেশি অপারেশন শাখা কুদস ফোর্সের প্রধান। তিনি কয়েক সপ্তাহ ধরে জনসম্মুখে ছিলেন না। তিনি লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় লক্ষ্যবস্তু হয়েছিলেন বলেও কিছু গণমাধ্যমে গুজব ছড়ায়
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের সরাসরি সম্প্রচারে দেখা যায়, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে মধ্য তেহরানের ইমাম হোসেন স্কয়ারে নিলফরৌশানের জানাজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। তেহরানের রাস্তায় গার্ডরা কাঁধে নিলফরৌশানের কফিন নিয়ে প্রদক্ষিণ করে। হাজার হাজার মানুষ এতে অংশ নেয়, অনেকেই হিজবুল্লাহর হলুদ ব্যানার, ইরানি ও ফিলিস্তিনি পতাকা বহন করে এবং ‘ইসরায়েলের মৃত্যু হোক’ স্লোগান দেয়। এ আনুষ্ঠানিকতার মাঝেই কানিকে সবুজ সামরিক পোশাকে দেখা যায়।
এর আগে সোমবার ইরাকে নিলফরৌশানের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার তেহরানে আরেকটি বিদায় অনুষ্ঠান শেষে কফিনটি কোম শহরে নিয়ে যাওয়া হবে। বুধবার মাশহাদে আরো একটি আনুষ্ঠানিকতা শেষে বৃহস্পতিবার তার নিজ শহর ইসফাহানে দাফন করা হবে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার জানায়, নিলফরৌশান ও নাসরাল্লাহর মৃত্যুর জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে বিচারের আওতায় আনতে ইসলামী প্রজাতন্ত্র তার ‘সর্বশক্তি’ প্রয়োগ করবে।
ইরান ১ অক্টোবর ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ২০০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল।
নিলফরৌশান ও নাসরাল্লাহর মৃত্যুর প্রতিশোধ হিসেবে এ আক্রমণ করে তারা। এটি ছিল ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ইরানের দ্বিতীয় সরাসরি আক্রমণ। এই হামলা হামাসপ্রধান ইসমাইল হানিয়ার মৃত্যুর প্রতিশোধও ছিল, যিনি জুলাই মাসে তেহরানে ইরানের প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গিয়ে নিহত হন। এর আগে এপ্রিল মাসেও ইরান দামেস্কে তাদের কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন নিক্ষেপ করেছিল।এদিকে ইসরায়েল পাল্টা প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছেন, ‘ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া হবে মারাত্মক, সুনির্দিষ্ট ও চমকপ্রদ।’
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে লেবানন ও গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার এবং সংঘাত যাতে বিস্তৃত না হয় সে বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের কূটনৈতিক আলোচনা চালিয়েছে ইরান। বাগদাদ সফরে রবিবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ পরিস্থিতির জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত।’ পাশাপাশি তিনি এ-ও বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই।’