ঢাকা ০৬:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে ৭ অঙ্গরাজ্যই গড়ে দেবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভাগ্য

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:১৩:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ অক্টোবর ২০২৪
  • ৩০ বার

আসন্ন নভেম্বরের নির্বাচনের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ডেমোক্রেক প্রার্থী কমলা হ্যারিস এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। যা সাম্প্রতিক ইতিহাসের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হিসাবে ধরা হচ্ছে।

আগামী ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। যে নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসছে এবং মাত্র এক মাসেরও কম সময় বাকি।

২০২৪ সালের এ নির্বাচনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কিছু অঙ্গরাজ্যে উভয় প্রার্থীর মধ্যে পার্থক্য খুবই কম লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

মার্কিন সংবিধানের অধীনে দেশটির প্রতিষ্ঠাতারা নির্ধারণ করেছিলেন যে, ৫০টি অঙ্গরাজ্যের প্রতিটিই আলাদাভাবে প্রেসিডেন্টের জন্য ভোট দেবে। তারপর জটিল ইলেক্টোরাল কলেজ ব্যবস্থায় প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের জনসংখ্যার ওপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট সংখ্যক ইলেক্টোরাল থাকে। বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্যেই ‘সবকিছুই বিজয়ীর হস্তগত হবে’ নীতি অনুসরণ করে। যার মাধ্যমে জনপ্রিয় ভোটে বিজয়ী প্রার্থীই সমস্ত ইলেক্টর পেয়ে যায়।

মার্কিন নির্বাচনে জিততে প্রার্থীদের ৫৩৮ ইলেক্টোরাল ভোটের মধ্যে ২৭০টি দরকার হয়। এ কারণে আসল নির্বাচন মূলত সুইং স্টেটগুলোতেই অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে রিপাবলিকান এবং ডেমোক্রেট প্রার্থীরা পালাক্রমে বিজয়ী হয়ে থাকেন।

এ বছরও তেমন সাতটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গরাজ্য রয়েছে, যেগুলো প্রায় সমান প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। তাহলে চলুন, এই অঙ্গরাজ্যগুলো নিয়েই একটু আলোচনা করা যাক:

পেনসিলভানিয়া (১৯ ইলেক্টোরাল ভোট)

পেনসিলভানিয়া এক সময় নির্ভরযোগ্যভাবে ডেমোক্রেটিকদের দখলে ছিল। তবে সম্প্রতি এটি সুইং স্টেটগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি হয়ে উঠেছে।

২০১৬ সালে ট্রাম্প মাত্র ০.৭ শতাংশের ব্যবধানে এই অঙ্গরাজ্যে জয়ী হয়েছিলেন। আর ২০২০ সালে বাইডেন ১.২ শতাংশ ব্যবধানে এই অঙ্গরাজ্যে বিজয় লাভ করেন।

এ অঙ্গরাজ্যের ‘রাস্ট বেল্ট’ শহরগুলো- যেমন ফিলাডেলফিয়া এবং পিটসবার্গ মূলত ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের পতনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ট্রাম্প এখানকার গ্রামীণ শ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠীকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন এবং অভিবাসীদের সমস্যা তুলে ধরে প্রচার চালাচ্ছেন।

অন্যদিকে কমলা হ্যারিস স্থানীয় অবকাঠামোগত উন্নয়নের কথা বলছেন এবং ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে ১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

জর্জিয়া (১৬ ইলেক্টোরাল ভোট)

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্বের এই অঙ্গরাজ্যটি ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের শেষের দিকে একটি নির্বাচনী সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিল।

২০২০ সালের নির্বাচনে বাইডেনের বিজয়কে উল্টে দেওয়ার জন্য ট্রাম্প এ অঙ্গরাজ্যের কর্মকর্তাদের কাছে অতিরিক্ত ভোট ‘খুঁজে’ বের করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। যার ফলে তিনি মামলারও মুখোমুখি হন।

তবে সেই মামলাটি নির্বাচনের পর পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়েছে।

নর্থ ক্যারোলিনা (১৬ ইলেক্টোরাল ভোট)

১৯৮০ সালের পর থেকে এই অঙ্গরাজ্যটি একবারই ডেমোক্রেটদের জিতিয়ে দিয়েছে। তবে কমলা হ্যারিসের প্রচারণা দলের বিশ্বাস যে, নর্থ ক্যারোলিনার ভোটাররা এবার তাদের পক্ষেই যেতে পারে।

এখানকার জনসংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বৈচিত্র্যময় হচ্ছে, যা ডেমোক্রেটদের জন্য ইতিবাচক।

মিশিগান (১৫ ইলেক্টোরাল ভোট)

২০১৬ সালে ট্রাম্প মিশিগানকে রিপাবলিকানদের পক্ষে নিয়ে গিয়েছিলেন। তবে ২০২০ সালে বাইডেন এই অঙ্গরাজ্যটি পুনরুদ্ধার করেন।

যদিও এবারের নির্বাচনে হ্যারিসের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে অঙ্গরাজ্যটির ২ লাখ সদস্য বিশিষ্ট আরব-আমেরিকান সম্প্রদায়। যারা গাজা ও লেবানন সংঘাতের কারণে বাইডেনের সমালোচনা করছেন।

অ্যারিজোনা (১১ ইলেক্টোরাল ভোট)

২০২০ সালের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই অঙ্গরাজ্যে বাইডেন মাত্র ১০,৪৫৭ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন। তবে ট্রাম্প এবার আশা করছেন যে, বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসনের অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে জেগে ওঠা ক্ষোভ তাকে আবারও এ অঙ্গরাজ্যে জিততে সহায়তা করবে।

উইসকনসিন (১০ ইলেক্টোরাল ভোট)

২০১৬ সালে ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন উইসকনসিনে পরাজিত হন। তবে ২০২০ সালে বাইডেন ২১,০০০ ভোটের ব্যবধানে রাজ্যটি পুনরুদ্ধার করেন। তবে এবারের নির্বাচনে কমলা হ্যারিস কী করেন- সেটাই দেখার বিষয়।

নেভাদা (৬ ইলেক্টোরাল ভোট)

নেভাদায় ২০২০ সালের নির্বাচনে বাইডেন ২.৪ শতাংশ ব্যবধানে জয়ী হন। তবে এ বছর এটি আবারও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতে পারে

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

যে ৭ অঙ্গরাজ্যই গড়ে দেবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভাগ্য

আপডেট টাইম : ০৬:১৩:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ অক্টোবর ২০২৪

আসন্ন নভেম্বরের নির্বাচনের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ডেমোক্রেক প্রার্থী কমলা হ্যারিস এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। যা সাম্প্রতিক ইতিহাসের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হিসাবে ধরা হচ্ছে।

আগামী ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। যে নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসছে এবং মাত্র এক মাসেরও কম সময় বাকি।

২০২৪ সালের এ নির্বাচনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কিছু অঙ্গরাজ্যে উভয় প্রার্থীর মধ্যে পার্থক্য খুবই কম লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

মার্কিন সংবিধানের অধীনে দেশটির প্রতিষ্ঠাতারা নির্ধারণ করেছিলেন যে, ৫০টি অঙ্গরাজ্যের প্রতিটিই আলাদাভাবে প্রেসিডেন্টের জন্য ভোট দেবে। তারপর জটিল ইলেক্টোরাল কলেজ ব্যবস্থায় প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের জনসংখ্যার ওপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট সংখ্যক ইলেক্টোরাল থাকে। বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্যেই ‘সবকিছুই বিজয়ীর হস্তগত হবে’ নীতি অনুসরণ করে। যার মাধ্যমে জনপ্রিয় ভোটে বিজয়ী প্রার্থীই সমস্ত ইলেক্টর পেয়ে যায়।

মার্কিন নির্বাচনে জিততে প্রার্থীদের ৫৩৮ ইলেক্টোরাল ভোটের মধ্যে ২৭০টি দরকার হয়। এ কারণে আসল নির্বাচন মূলত সুইং স্টেটগুলোতেই অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে রিপাবলিকান এবং ডেমোক্রেট প্রার্থীরা পালাক্রমে বিজয়ী হয়ে থাকেন।

এ বছরও তেমন সাতটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গরাজ্য রয়েছে, যেগুলো প্রায় সমান প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। তাহলে চলুন, এই অঙ্গরাজ্যগুলো নিয়েই একটু আলোচনা করা যাক:

পেনসিলভানিয়া (১৯ ইলেক্টোরাল ভোট)

পেনসিলভানিয়া এক সময় নির্ভরযোগ্যভাবে ডেমোক্রেটিকদের দখলে ছিল। তবে সম্প্রতি এটি সুইং স্টেটগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি হয়ে উঠেছে।

২০১৬ সালে ট্রাম্প মাত্র ০.৭ শতাংশের ব্যবধানে এই অঙ্গরাজ্যে জয়ী হয়েছিলেন। আর ২০২০ সালে বাইডেন ১.২ শতাংশ ব্যবধানে এই অঙ্গরাজ্যে বিজয় লাভ করেন।

এ অঙ্গরাজ্যের ‘রাস্ট বেল্ট’ শহরগুলো- যেমন ফিলাডেলফিয়া এবং পিটসবার্গ মূলত ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের পতনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ট্রাম্প এখানকার গ্রামীণ শ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠীকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন এবং অভিবাসীদের সমস্যা তুলে ধরে প্রচার চালাচ্ছেন।

অন্যদিকে কমলা হ্যারিস স্থানীয় অবকাঠামোগত উন্নয়নের কথা বলছেন এবং ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে ১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

জর্জিয়া (১৬ ইলেক্টোরাল ভোট)

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্বের এই অঙ্গরাজ্যটি ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের শেষের দিকে একটি নির্বাচনী সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিল।

২০২০ সালের নির্বাচনে বাইডেনের বিজয়কে উল্টে দেওয়ার জন্য ট্রাম্প এ অঙ্গরাজ্যের কর্মকর্তাদের কাছে অতিরিক্ত ভোট ‘খুঁজে’ বের করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। যার ফলে তিনি মামলারও মুখোমুখি হন।

তবে সেই মামলাটি নির্বাচনের পর পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়েছে।

নর্থ ক্যারোলিনা (১৬ ইলেক্টোরাল ভোট)

১৯৮০ সালের পর থেকে এই অঙ্গরাজ্যটি একবারই ডেমোক্রেটদের জিতিয়ে দিয়েছে। তবে কমলা হ্যারিসের প্রচারণা দলের বিশ্বাস যে, নর্থ ক্যারোলিনার ভোটাররা এবার তাদের পক্ষেই যেতে পারে।

এখানকার জনসংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বৈচিত্র্যময় হচ্ছে, যা ডেমোক্রেটদের জন্য ইতিবাচক।

মিশিগান (১৫ ইলেক্টোরাল ভোট)

২০১৬ সালে ট্রাম্প মিশিগানকে রিপাবলিকানদের পক্ষে নিয়ে গিয়েছিলেন। তবে ২০২০ সালে বাইডেন এই অঙ্গরাজ্যটি পুনরুদ্ধার করেন।

যদিও এবারের নির্বাচনে হ্যারিসের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে অঙ্গরাজ্যটির ২ লাখ সদস্য বিশিষ্ট আরব-আমেরিকান সম্প্রদায়। যারা গাজা ও লেবানন সংঘাতের কারণে বাইডেনের সমালোচনা করছেন।

অ্যারিজোনা (১১ ইলেক্টোরাল ভোট)

২০২০ সালের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই অঙ্গরাজ্যে বাইডেন মাত্র ১০,৪৫৭ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন। তবে ট্রাম্প এবার আশা করছেন যে, বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসনের অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে জেগে ওঠা ক্ষোভ তাকে আবারও এ অঙ্গরাজ্যে জিততে সহায়তা করবে।

উইসকনসিন (১০ ইলেক্টোরাল ভোট)

২০১৬ সালে ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন উইসকনসিনে পরাজিত হন। তবে ২০২০ সালে বাইডেন ২১,০০০ ভোটের ব্যবধানে রাজ্যটি পুনরুদ্ধার করেন। তবে এবারের নির্বাচনে কমলা হ্যারিস কী করেন- সেটাই দেখার বিষয়।

নেভাদা (৬ ইলেক্টোরাল ভোট)

নেভাদায় ২০২০ সালের নির্বাচনে বাইডেন ২.৪ শতাংশ ব্যবধানে জয়ী হন। তবে এ বছর এটি আবারও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতে পারে