জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট রাশিয়ার উপর আরো আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করে হামলা বন্ধ করতে বাধ্য করার আর্জি জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার তিনি ‘বিজয় পরিকল্পনা’ পেশ করবেন
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদোমির জেলেনস্কি রাশিয়ার সঙ্গে ২০২২ সাল থেকে চলে আসা হামলা আলোচনার মাধ্যমে বন্ধের কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না। তাঁর মতে, এবার আন্তর্জাতিক উদ্যোগে রাশিয়াকে শান্তির পথে যেতে ‘বাধ্য’ করার সময় এসে গেছে। নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ভাষণে তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ’-এর অভিযোগ এনেছেন। জেলেনস্কি বলেন, যুদ্ধের প্রথম দিন থেকে মস্কো এমন সব কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে, যেগুলি জাতিসংঘের সনদের সঙ্গে একেবারেই ন্যায্য হতে পারে না। তাঁর মতে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন এতগুলি আন্তর্জাতিক নিয়ম ভেঙেছেন, যে তিনি মোটেই নিজের ইচ্ছেতে থামবেন না। ফলে তাঁকে শান্তি মেনে নিতে বাধ্য করতে হবে।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বিশ্বের একাধিক দেশের শীর্ষ নেতার উপস্থিতিতে জেলেনস্কি ইউক্রেনের প্রতি আরো সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন। তিনি ইরান ও উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে রাশিয়ার কুকীর্তিতে সরাসরি মদত দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন রাশিয়ার মদতকারী দেশগুলির বিরুদ্ধে আরো কড়া পদক্ষেপের ডাক দিয়েছেন। তাঁর মতে, সেই মদতের বিনিময়ে রাশিয়ার সমর্থন পেয়ে ইরান ও উত্তর কোরিয়া বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে শান্তির জন্য হুমকি হয়ে উঠবে। ব্লিংকেন চীনের ভূমিকা সম্পর্কেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁর ‘বিজয় পরিকল্পনা’ পেশ করতে চলেছেন। সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা না গেলেও সেই উদ্যোগের আওতায় রাশিয়ার ভূখণ্ডের গভীরে পশ্চিমা ক্ষেপণাস্ত্র প্রয়োগ করে হামলার প্রস্তাবও আছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। অ্যামেরিকা এবং ব্রিটেন সম্ভবত এমন অনুরোধ মেনে নিলেও জার্মানি সেই ছাড়পত্র দিতে প্রস্তুত নয়।
নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই জেলেনস্কি বাইডেন প্রশাসনের কাছ থেকে যতটা সম্ভব সহযোগিতা আদায়ের চেষ্টা করছেন। নতুন সামরিক সহায়তার প্যাকেজের পাশাপাশি রাশিয়ার গভীরে সামরিক স্থাপনার উপর হামলার ছাড়পত্র পেতে তিনি বদ্ধপরিকর। ডনাল্ড ট্রাম্প অ্যামেরিকার আগামী প্রেসিডেন্ট হলে ইউক্রেন সমর্থন ও মদত হারানোর আশঙ্কা করছে। চলতি বছরেই দ্বিতীয় শান্তি সম্মেলন আয়োজন করে জেলেনস্কি যুদ্ধ বন্ধ করতে কূটনৈতিক উদ্যোগও জোরদার করতে চান। চীন, ভারত ও রাশিয়াও সেই সম্মেলনে উপস্থিত থাকবে বলে তিনি মনে করছেন।