ঢাকা ০৭:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
সংবাদ প্রকাশের পরও গুরুত্ব দেয়নি এলজিইডি, ব্রীজের এ্যাপ্রোচ এখন নদীতে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে মিললো বিশাল সুখবর শরতে কাশফুলের রাজ্যে টানা ৪ দিনের ছুটিতে টাঙ্গুয়ার হাওরে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় মধ্যরাত থেকে ২২ দিন ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ বাফুফে নির্বাচনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেন যারা শেখ হাসিনার ‘ট্রাভেল ডকুমেন্ট’ নিয়ে যা বললেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এমন দেশ গড়তে চাই, সব সম্প্রদায়ের সমান অধিকারের বাংলাদেশ : প্রধান উপদেষ্টা- জ্বালানি সংকট দূর করতে বাপেক্স আরও ১৫০ কূপ খনন করবে: জ্বালানি উপদেষ্টা ইংল্যান্ড আমাদের সঙ্গে ৮০০ করে, বাংলাদেশও হারায়

যুদ্ধের সমাপ্তি চায় বিশ্ব, ভিন্ন সুর পুতিন-জেলেনস্কির

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২৪:৩৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ১১ বার

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে সমঝোতার আহ্বান বাড়লেও, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি নিজেদের অবস্থানে অটল রয়েছেন। কেউই ছাড় দিতে রাজি নন। এরই মধ্যেই ইউক্রেন কুরস্ক অঞ্চলে আকস্মিক হামলা চালিয়ে রাশিয়াকে চমকে দিয়েছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কাছে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছে কিয়েভ, যা পেলে যুদ্ধ আরও বড় আকার নিতে পারে।

রাশিয়ার দখলে থাকা অঞ্চলগুলো পুনরুদ্ধারই এখন ইউক্রেনের প্রধান লক্ষ্য। জেলেনস্কি চান, রাশিয়ার ২০১৪ সালে দখল করা ক্রিমিয়াসহ সব অঞ্চল ফেরত। অপরদিকে পুতিনের দাবি, ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসন অঞ্চলগুলো রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত। তিনি ন্যাটোতে ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্তিরও তীব্র বিরোধিতা করছেন। এছাড়া ইউক্রেনের সামরিক শক্তির ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের দাবি করেছেন পুতিন।

যুদ্ধের দ্বিতীয় বছরে পা রাখলেও উভয় নেতা নিজেদের লক্ষ্য থেকে পিছিয়ে আসার কোনো ইঙ্গিত দেননি। রাশিয়া দোনেৎস্কে অগ্রসর হচ্ছে, যদিও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি স্বীকার করতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের সাম্প্রতিক কুরস্ক অভিযান মস্কোকে হতবাক করেছে। রুশ বাহিনী পুরো বছর দোনেৎস্কের মতো এলাকা দখল করতে না পারলেও, ইউক্রেন মাত্র এক মাসে কুরস্কের ৫০০ বর্গমাইল এলাকা দখল করেছে।

ইউক্রেন এখন এটিএসিএমএস এবং স্টর্ম শ্যাডো ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের অনুমতির অপেক্ষায়। তবে পুতিন স্পষ্টভাবে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, এই অনুমতি দেওয়া মানে ওয়াশিংটন ও লন্ডন সরাসরি রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জড়াচ্ছে, যার ফলাফল হবে ভয়াবহ।

ইউক্রেনীয়দের দুর্দশার কথা মাথায় রেখে অনেকেই ভাবছেন, এই যুদ্ধে শান্তির আলো দেখতে কতটা সময় লাগবে। ইউক্রেনের প্রায় এক কোটি মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে এবং দেশটির সামরিক শক্তি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে। তবে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য নতুন সেনা প্রশিক্ষণ দিচ্ছে কিয়েভ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ৬ হাজার ১০০ কোটি ডলারের সহায়তা পুনরায় শক্তি জোগাচ্ছে।

তবে ইউক্রেনের বড় সমস্যা হলো কৌশলগত দিক থেকে যুদ্ধ পরিচালনায় সক্ষমতার অভাব। দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার হলেও এটি কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। এর মধ্যেও জেলেনস্কি দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের ভয়াবহতা এড়াতে ক্ষেপণাস্ত্রের অনুমতি দিচ্ছে না। কিন্তু এখন ইউক্রেনের পরাজয়ের শঙ্কার  চেয়ে যুদ্ধ বাড়িয়ে দেওয়ার ভয় বেশি।

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য যুদ্ধকে আর বড় করতে চাইছে না, কারণ এতে পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা রয়েছে। তবে ইউক্রেন নিজেদের তৈরি স্বল্পপাল্লার ড্রোন এবং নতুন রকেট ড্রোন পালিয়ানিতসিয়া দিয়ে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে।

যদিও যুদ্ধের সমাপ্তি সম্পর্কে এখনো অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হলে পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। মস্কোর জন্য তা হতে পারে স্বস্তির, তবে কিয়েভের জন্য তা নতুন বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সংবাদ প্রকাশের পরও গুরুত্ব দেয়নি এলজিইডি, ব্রীজের এ্যাপ্রোচ এখন নদীতে

যুদ্ধের সমাপ্তি চায় বিশ্ব, ভিন্ন সুর পুতিন-জেলেনস্কির

আপডেট টাইম : ১১:২৪:৩৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে সমঝোতার আহ্বান বাড়লেও, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি নিজেদের অবস্থানে অটল রয়েছেন। কেউই ছাড় দিতে রাজি নন। এরই মধ্যেই ইউক্রেন কুরস্ক অঞ্চলে আকস্মিক হামলা চালিয়ে রাশিয়াকে চমকে দিয়েছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কাছে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছে কিয়েভ, যা পেলে যুদ্ধ আরও বড় আকার নিতে পারে।

রাশিয়ার দখলে থাকা অঞ্চলগুলো পুনরুদ্ধারই এখন ইউক্রেনের প্রধান লক্ষ্য। জেলেনস্কি চান, রাশিয়ার ২০১৪ সালে দখল করা ক্রিমিয়াসহ সব অঞ্চল ফেরত। অপরদিকে পুতিনের দাবি, ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসন অঞ্চলগুলো রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত। তিনি ন্যাটোতে ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্তিরও তীব্র বিরোধিতা করছেন। এছাড়া ইউক্রেনের সামরিক শক্তির ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের দাবি করেছেন পুতিন।

যুদ্ধের দ্বিতীয় বছরে পা রাখলেও উভয় নেতা নিজেদের লক্ষ্য থেকে পিছিয়ে আসার কোনো ইঙ্গিত দেননি। রাশিয়া দোনেৎস্কে অগ্রসর হচ্ছে, যদিও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি স্বীকার করতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের সাম্প্রতিক কুরস্ক অভিযান মস্কোকে হতবাক করেছে। রুশ বাহিনী পুরো বছর দোনেৎস্কের মতো এলাকা দখল করতে না পারলেও, ইউক্রেন মাত্র এক মাসে কুরস্কের ৫০০ বর্গমাইল এলাকা দখল করেছে।

ইউক্রেন এখন এটিএসিএমএস এবং স্টর্ম শ্যাডো ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের অনুমতির অপেক্ষায়। তবে পুতিন স্পষ্টভাবে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, এই অনুমতি দেওয়া মানে ওয়াশিংটন ও লন্ডন সরাসরি রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জড়াচ্ছে, যার ফলাফল হবে ভয়াবহ।

ইউক্রেনীয়দের দুর্দশার কথা মাথায় রেখে অনেকেই ভাবছেন, এই যুদ্ধে শান্তির আলো দেখতে কতটা সময় লাগবে। ইউক্রেনের প্রায় এক কোটি মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে এবং দেশটির সামরিক শক্তি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে। তবে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য নতুন সেনা প্রশিক্ষণ দিচ্ছে কিয়েভ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ৬ হাজার ১০০ কোটি ডলারের সহায়তা পুনরায় শক্তি জোগাচ্ছে।

তবে ইউক্রেনের বড় সমস্যা হলো কৌশলগত দিক থেকে যুদ্ধ পরিচালনায় সক্ষমতার অভাব। দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার হলেও এটি কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। এর মধ্যেও জেলেনস্কি দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের ভয়াবহতা এড়াতে ক্ষেপণাস্ত্রের অনুমতি দিচ্ছে না। কিন্তু এখন ইউক্রেনের পরাজয়ের শঙ্কার  চেয়ে যুদ্ধ বাড়িয়ে দেওয়ার ভয় বেশি।

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য যুদ্ধকে আর বড় করতে চাইছে না, কারণ এতে পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা রয়েছে। তবে ইউক্রেন নিজেদের তৈরি স্বল্পপাল্লার ড্রোন এবং নতুন রকেট ড্রোন পালিয়ানিতসিয়া দিয়ে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে।

যদিও যুদ্ধের সমাপ্তি সম্পর্কে এখনো অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হলে পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। মস্কোর জন্য তা হতে পারে স্বস্তির, তবে কিয়েভের জন্য তা নতুন বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।