যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দুই মাসের কম সময় বাকি। এর মধ্যে প্রথমবারের মতো সরাসরি বিতর্কে মুখোমুখি হলেন দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। দেড় ঘণ্টার এ বিতর্কে দুজনই কথার লড়াইয়ে মেতে ওঠেন। যুক্তি উপস্থাপন, পাল্টাপাল্টি আক্রমণে একে অপরকে নাস্তানাবুদ করার চেষ্টা করেন। আলোচনা চলে অভিবাসন, গর্ভপাত, গাজা যুদ্ধ নিয়ে। এই বিতর্কের পর আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমই বলে, বিতর্কে আসলে কমলাই জিতেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের ফিলাডেলফিয়ায় স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার রাত ৯টায় সম্প্রচারমাধ্যম এবিসি নিউজের আয়োজনে এ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিতর্কের সঞ্চালক ছিলেন ডেভিড মুইর ও লিনসে ডেভিস। এই বিতর্কের পর কয়েকজন বিশ্লেষকের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজ বলছে, ‘আজ রাতে কমলা জিতেছেন।’
ফক্স নিউজের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ব্রিট হিউম বলেন, ‘বিতর্ক শুনে মনে হয়েছে, কমলা খুব ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলেন। সেভাবেই প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। তিনি কী বলছেন, তা নিয়ে সচেতন ছিলেন।’
সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, নিবন্ধিত যেসব ভোটার মঙ্গলবার বিতর্ক দেখেছেন, তাঁরা মোটামুটি সবাই বলেছেন এই বিতর্কে মূলত কমলাই জিতেছেন। সিএনএনের এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, বিতর্কে কয়েন টসে জিতেছিলেন ট্রাম্প। তবে এই বিতর্কে এটাই তাঁর পাওয়া। বিবিসি বলছে, এই ৯০ মিনিটের বিতর্কে বারবার আক্রমণ করে ট্রাম্পকে কুপোকাত করেছেন কমলা। ভোটারদের মতামতের ভিত্তিতে ওয়াশিংটন পোস্ট বলেছে, গতকাল রাতের বিতর্কে এগিয়ে রয়েছেন কমলা।
গত নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটলে হামলা নিয়েও ট্রাম্পকে আক্রমণ করেন কমলা। একই সঙ্গে ট্রাম্পের প্রশাসনে কাজ করেছেন এবং পরবর্তী সময়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সমালোচনা করেছেন তাঁদের অবস্থান বিতর্কে হাজির করেছেন কমলা। এতে ট্রাম্প বিতর্কে পিছিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
বিতর্ক মঞ্চে উঠেই সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দিকে এগিয়ে গিয়ে হাত বাড়িয়ে দেন বর্তমান মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা। দুজন করমর্দন করেন। বিবিসি বলছে, এই প্রথম তাঁরা মুখোমুখি হলেন, পরস্পরের সঙ্গে করমর্দন করলেন।
বেশ সাবলীলভাবে বিতর্ক এগিয়ে যাচ্ছিল। তবে কমলার একটি খোঁচায় পরিবেশ খানিকটা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ট্রাম্পের নির্বাচনী সমাবেশ নিয়ে কমলা বলেন, সেখানে লোকেরা একঘেয়েমি ও ক্লান্তি থেকে তাড়াতাড়ি চলে যায়। এরপর ট্রাম্পও কমলার বিরুদ্ধে কণ্ঠ চড়ান।
নারীদের গর্ভপাতের অধিকার কেড়ে নেওয়ার বিষয়ে ট্রাম্পের দিকে আঙুল তোলেন কমলা। আরেক মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য ট্রাম্প আদৌ সক্ষম (ফিট) কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। ‘দুর্বল ও ভুল জাতীয় নিরাপত্তানীতি, পররাষ্ট্রনীতির’ জন্যও বিতর্কে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কমলা তোপ দাগেন।
বিতর্কে ট্রাম্প বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে একজন ‘অস্তিত্বহীন’ প্রেসিডেন্ট হিসেবে আখ্যা দেন। জবাবে কমলা বলেন, ‘নির্বাচনে আপনি বাইডেনের বিরুদ্ধে লড়ছেন না, আপনি লড়ছেন আমার বিরুদ্ধে।’