ব্যাপক ধরপাকড়, কার্যালয়ে পুলিশি তল্লাশি, শীর্ষনেতাদের আত্মগোপন থাকা অবস্থায় গতকাল ৮ আগস্ট ইসলামাবাদে বিরাট বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। সমাবেশ থেকে দলটির প্রতিষ্ঠাতা জেলবন্দি ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে দুই সপ্তাহের আল্টিমেটাম দিয়েছে পিটিআই।
রোববার সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, সাংজানি এলাকায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে পিটিআই সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তব্য দেয়ার সময় এই আল্টিমেটাম দেন খাইবার পাখতুনখোয়ার (কেপি) মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্ডাপুর।
তিনি বলেন, পিটিআই-এর প্রতিষ্ঠাতাকে যদি এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে আইন মেনে মুক্তি না দেয়া হয়, আমরা নিজেরাই তাকে মুক্ত করব। এ জন্য প্রয়োজন হলে সবার আগে বুলেটের সামনে নিজের বুক পেতে দিতে চান তিনি।
পিটিআই নেতা হাম্মাদ আজহার বলেন, সমাবেশে ক্ষমতাসীন শাসকদের বাধা প্রমাণ করে যে তারা বন্দি ইমরান খান এবং তার সমর্থকদের ভয় পায়।
তিনি পাঞ্জাবে একটি আন্দোলন শুরু করার ইঙ্গিত দেন এবং দলীয় কর্মীদের ‘প্রস্তুত’ থাকার আহ্বান জানান।
এছাড়া আরেক পিটিআই নেতা শের আফজাল মারওয়াত বলেন, তারা শিগগিরই জেলে থাকা ইমরানের মুক্তি এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য পাঞ্জাবে সমাবেশ করবেন।
আফজাল আরও বলেন, আমরা এক সপ্তাহের মধ্যে খাইবার পাখতুনখোয়া থেকে ৫০ হাজার লোক নিয়ে পাঞ্জাবে প্রবেশ করব।
এর আগে আদিয়ালা কারাগার থেকে সমর্থকদের ইসলামাবাদে দলের সমাবেশে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন ইমরান খান। একইসঙ্গে সমাবেশে যোগদানে কোনো বাধা আসলে তা রুখে দেওয়ার বার্তা দেন তিনি। ইমরানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যেও ব্যাপক লোক সমাগম হয় সমাবেশ।
পিটিআইয়ের সমাবেশ ভণ্ডুল করতে তার ঠিক একদিন আগে নতুন আইন পাশ করে পাকিস্তান। যেটার নাম রাখা হয়, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ এবং পাবলিক অর্ডার বিল-২০২৪। শান্তি-শৃঙ্খলা ব্যাহত হয় এমন বেআইনি মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয় এই আইনের মাধ্যমে। এরপরও ইমরানের সমর্থকদের পিছু হঁটানো যায়নি। চলতি বছর দলটির অন্যতম বড় সমাবেশ ছিল ভাবা হচ্ছে এটিকে।
‘নয়া পাকিস্তানের’ স্লোগান নিয়ে ইমরান খান ক্রিকেট তারকা থেকে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতা হন ১৯৯৬ সালে। তারপর প্রধানমন্ত্রী হন ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট। কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হন তিনি। এরপর গত এক বছর ধরে বিভিন্ন মামলায় কারাগারে বন্দি আছেন ইমরান।