ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহ উভয়ই বলছে যে তারা যুদ্ধ চায় না, তবে উভয়পক্ষই যুদ্ধের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। রোববার (২৫ আগস্ট) সকালে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী প্রায় ১০০টি যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে দক্ষিণ লেবাননের হিজবুল্লাহ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায়। হিজবুল্লাহ পাল্টা জবাব হিসেবে উত্তর ইসরায়েলে রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১০০টি যুদ্ধবিমান দিয়ে হামলার চালানোর ইসরায়েলি দাবিটি যদি সঠিক হয় তাহলে সেটি হবে লেবাননে ২০০৬ সালের ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ সর্বাত্মক যুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় হামলা। ইসরায়েলি হামলাটি স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ৩০ মিনিটে শুরু হয়। ইসরায়েলি গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, হিজবুল্লাহ সকাল ৫টায় তেল আবিবে বড় আকারের রকেট হামলা করার পরিকল্পনা করেছিল।
তবে, শেষ পর্যন্ত হিজবুল্লাহ উত্তর ইসরায়েলের সামরিক স্থাপনাগুলোতে ৩০০টিরও বেশি রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এই নতুন সংঘর্ষের ফলে আবারো পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ বলেছে, রোববারের এই হামলা গত ৩০ জুলাই লেবাননে তাদের কমান্ডার ফুয়াদ শুকরের হত্যার প্রতিশোধের প্রথম ধাপ।
ফুয়াদ শোকর হত্যাকাণ্ডের পরের দিন ইরানে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া হত্যাকাণ্ডেও ইসরায়েলের হাত আছে বলে ধারণা করা হয়। এর জেরে হিজবুল্লাহর পাশাপাশি ইরানের কাছ থেকেও প্রতিশোধ হামলার মুখে আছে ইসরায়েল।
কয়েক সপ্তাহ ধরে কাতার, মিশর ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকরা গাজা যুদ্ধকে বৃহত্তর আঞ্চলিক যুদ্ধে পরিণত হওয়া এড়াতে চেষ্টা করছেন।
যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক করে বলেছে, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির চুক্তিতে সম্মত হতে চলমান ব্যর্থতা সেই কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করতে পারে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলছে, তারা দুটি ফ্রন্টে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত: গাজা এবং লেবাননের সাথে তার উত্তর সীমান্তে।
কিন্তু হিজবুল্লাহ হামাসের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী শক্তি। ধারণা করা হয়, হিজবুল্লাহর কাছে প্রায় দেড় লাখ রকেট রয়েছে, যার মধ্যে কিছু রকেট ইসরায়েল জুড়ে লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছাতে সক্ষম। হিজবুল্লাহর অনেক যোদ্ধার সিরিয়ার যুদ্ধে লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে, তারা হামাসের চেয়ে ভালো প্রশিক্ষিত এবং সজ্জিত।
এই মুহূর্তে হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, ফুয়াদ শুকরের হত্যার প্রতিশোধের প্রথম ধাপ তারা সম্পন্ন করেছে। রোববার সকালের পাল্টাপাল্টি হামলায় দুই পক্ষেই কম সংখ্যক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি কি আগের মতোই সীমান্ত সংঘর্ষের মতো থাকবে, নাকি তা আরো বড় আকার ধারণ করবে, সেটাই প্রশ্ন।
ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহ নেতারা বলছেন, তারা আরেকটি সর্বাত্মক যুদ্ধ চান না। কিন্তু উভয়পক্ষই এই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছে।