ঢাকা ০৭:২২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুদ্ধ বন্ধে হিজবুল্লাহর একমাত্র শর্ত

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৩৫:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ জুলাই ২০২৪
  • ৩৬ বার

লেবাননভিত্তিক ইরান-সমর্থিত গ্রুপ হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, ইসরাইল-লেবানন সীমান্তে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে পারে মাত্র একটি ব্যবস্থা। আর তা হলো গাজায় পূর্ণ যুদ্ধবিরতি।

হিজবুল্লাহর উপ-নেতা শেখ নাইম কাসেম বার্তা সংস্থা এপিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে এ কথা বলেন। মঙ্গলবার প্রকাশিত সাক্ষাতকারটি নেয়া হয়েছে বৈরুতের উপকণ্ঠে।

নাইম কাসেম বলেন, ‘গাজায় যদি যুদ্ধবিরতি হয়, তবে আমরা কোনো আলোচনা ছাড়াই থামিয়ে দেব।’

তিনি বলেন, ইসরাইল-হামাস যুদ্ধে হিজবুল্লাহ অংশগ্রহণ করছে মিত্রকে সমর্থন দিতে। তিনি বলেন, ‘ওই যুদ্ধ থেমে গেলে এই সামরিক সমর্থনের আর কোনোই প্রয়োজন পড়বে না।’

তবে তিনি বলেন, কোনো আনুষ্ঠানিক যুদ্ধবিরতি চুক্তি ছাড়া এবং গাজা থেকে পূর্ণ প্রত্যাহার ছাড়া ইসরাইল যদি যুদ্ধের গতি কমিয়ে দেয়, তবে ইসরাইল-লেবানন সীমান্তের পরিস্থিতি কেমন হবে তা স্পষ্ট নয়।

৪০ মিনিটের ওই সাক্ষাতকারে হিজবুল্লাহ নেতা বলেন, ‘গাজায় যদি যুদ্ধবিরতি এবং কোনো যুদ্ধবিরতি নয়, যুদ্ধ এবং যুদ্ধ নয়- এমন মিশ্র ধরনের কিছু হয়, তবে আমরা কী করব, তা পরিষ্কার নয়। কারণ অবয়ব, ফলাফল, প্রভাব সম্পর্কে আমাদের জানা থাকবে না।’

সাম্প্রতিক সময়ে গাজায় যুদ্ধবিরতি আলোচনা থমকে আছে। এর ফলে ইসরাইলের উত্তর সীমান্তে উত্তেজনা বেড়ে গেছে।

গত ৮ অক্টোবর থেকেই ইসরাইল-হিজবুল্লাহ গোলাবিনিময় চলছে। ওই দিনই গাজায় ইসরাইল হামলা শুরু করে। আর গাজার সমর্থনে হিজবুল্লাহও হামলা করে।

আন্তর্জাতিক মধ্যস্ততাকারীরা চেষ্টা করলেও গাজায় যুদ্ধবিরতি হচ্ছে না। ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস বলেছে, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরাইলের পূর্ণ প্রত্যাহারের মাধ্যমেই শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব। ইসরাইল স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি নয়।

ইসরাইলের অনেকই লেবাননের সাথে পূর্ণ যুদ্ধ চাচ্ছে। তবে অনেকে যুদ্ধ এড়াতেও চাচ্ছে। কারণ হামাসের চেয়ে হিজবুল্লাহ অনেক বেশি শক্তিশালী। তাদের যে রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র মজুত আছে, তা দিয়ে তারা ইসরাইলের যেকোনো স্থানে আঘাত হানতে সক্ষম হবে।

এই প্রেক্ষাপটে হিজবুল্লাহর উপনেতা কাসেম বলেন, এখনই ইসরাইল যুদ্ধ শুরু করবে বলে তিনি মনে করেন না। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ইসরাইল যদি লেবাননে সীমিত যুদ্ধ করার ইচ্ছা করে থাকে, তবে তাদের জেনে রাখা উচিত, যুদ্ধ আর সীমিত থাকবে না।

তিনি বলেন, ‘ইসরাইল সীমিত যুদ্ধ, পূর্ণ যুদ্ধ, আংশিক যুদ্ধ- কোনটা বেছে নেবে, সেটা তাদের বিষয়। তবে তাদের উচিত হবে আমাদের প্রতিক্রিয়ার প্রত্যাশা করা এবং আমাদের প্রতিরোধ কোনো নির্দিষ্ট সীমায় থাকবে না। ইসরাইল যদি যুদ্ধে মত্ত হয়, তবে তার মানে হবে এর কোনো মাত্রা থাকবে না।’

তিনি ইঙ্গিত দেন যে হিজবুল্লাহ আক্রান্ত হলে এই অঞ্চলে ইরান-সমর্থিত অন্যান্য গ্রুপ আরো সক্রিয় হয়ে ওঠবে। বিশেষ করে ইরাক, সিরিয়া, ইয়েমেন এবং অন্যান্য স্থানের সশস্ত্র গ্রুপগুলো ইসরাইলের বিরুদ্ধে পূর্ণ শক্তিতে নামবে। আর এটি যুদ্ধে ইসরাইলের মিত্র যুক্তরাষ্ট্রকেও নামতে বাধ্য করা হবে।

সূত্র : টাইমস অব ইসরাইল

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

যুদ্ধ বন্ধে হিজবুল্লাহর একমাত্র শর্ত

আপডেট টাইম : ১১:৩৫:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ জুলাই ২০২৪

লেবাননভিত্তিক ইরান-সমর্থিত গ্রুপ হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, ইসরাইল-লেবানন সীমান্তে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে পারে মাত্র একটি ব্যবস্থা। আর তা হলো গাজায় পূর্ণ যুদ্ধবিরতি।

হিজবুল্লাহর উপ-নেতা শেখ নাইম কাসেম বার্তা সংস্থা এপিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে এ কথা বলেন। মঙ্গলবার প্রকাশিত সাক্ষাতকারটি নেয়া হয়েছে বৈরুতের উপকণ্ঠে।

নাইম কাসেম বলেন, ‘গাজায় যদি যুদ্ধবিরতি হয়, তবে আমরা কোনো আলোচনা ছাড়াই থামিয়ে দেব।’

তিনি বলেন, ইসরাইল-হামাস যুদ্ধে হিজবুল্লাহ অংশগ্রহণ করছে মিত্রকে সমর্থন দিতে। তিনি বলেন, ‘ওই যুদ্ধ থেমে গেলে এই সামরিক সমর্থনের আর কোনোই প্রয়োজন পড়বে না।’

তবে তিনি বলেন, কোনো আনুষ্ঠানিক যুদ্ধবিরতি চুক্তি ছাড়া এবং গাজা থেকে পূর্ণ প্রত্যাহার ছাড়া ইসরাইল যদি যুদ্ধের গতি কমিয়ে দেয়, তবে ইসরাইল-লেবানন সীমান্তের পরিস্থিতি কেমন হবে তা স্পষ্ট নয়।

৪০ মিনিটের ওই সাক্ষাতকারে হিজবুল্লাহ নেতা বলেন, ‘গাজায় যদি যুদ্ধবিরতি এবং কোনো যুদ্ধবিরতি নয়, যুদ্ধ এবং যুদ্ধ নয়- এমন মিশ্র ধরনের কিছু হয়, তবে আমরা কী করব, তা পরিষ্কার নয়। কারণ অবয়ব, ফলাফল, প্রভাব সম্পর্কে আমাদের জানা থাকবে না।’

সাম্প্রতিক সময়ে গাজায় যুদ্ধবিরতি আলোচনা থমকে আছে। এর ফলে ইসরাইলের উত্তর সীমান্তে উত্তেজনা বেড়ে গেছে।

গত ৮ অক্টোবর থেকেই ইসরাইল-হিজবুল্লাহ গোলাবিনিময় চলছে। ওই দিনই গাজায় ইসরাইল হামলা শুরু করে। আর গাজার সমর্থনে হিজবুল্লাহও হামলা করে।

আন্তর্জাতিক মধ্যস্ততাকারীরা চেষ্টা করলেও গাজায় যুদ্ধবিরতি হচ্ছে না। ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস বলেছে, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরাইলের পূর্ণ প্রত্যাহারের মাধ্যমেই শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব। ইসরাইল স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি নয়।

ইসরাইলের অনেকই লেবাননের সাথে পূর্ণ যুদ্ধ চাচ্ছে। তবে অনেকে যুদ্ধ এড়াতেও চাচ্ছে। কারণ হামাসের চেয়ে হিজবুল্লাহ অনেক বেশি শক্তিশালী। তাদের যে রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র মজুত আছে, তা দিয়ে তারা ইসরাইলের যেকোনো স্থানে আঘাত হানতে সক্ষম হবে।

এই প্রেক্ষাপটে হিজবুল্লাহর উপনেতা কাসেম বলেন, এখনই ইসরাইল যুদ্ধ শুরু করবে বলে তিনি মনে করেন না। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ইসরাইল যদি লেবাননে সীমিত যুদ্ধ করার ইচ্ছা করে থাকে, তবে তাদের জেনে রাখা উচিত, যুদ্ধ আর সীমিত থাকবে না।

তিনি বলেন, ‘ইসরাইল সীমিত যুদ্ধ, পূর্ণ যুদ্ধ, আংশিক যুদ্ধ- কোনটা বেছে নেবে, সেটা তাদের বিষয়। তবে তাদের উচিত হবে আমাদের প্রতিক্রিয়ার প্রত্যাশা করা এবং আমাদের প্রতিরোধ কোনো নির্দিষ্ট সীমায় থাকবে না। ইসরাইল যদি যুদ্ধে মত্ত হয়, তবে তার মানে হবে এর কোনো মাত্রা থাকবে না।’

তিনি ইঙ্গিত দেন যে হিজবুল্লাহ আক্রান্ত হলে এই অঞ্চলে ইরান-সমর্থিত অন্যান্য গ্রুপ আরো সক্রিয় হয়ে ওঠবে। বিশেষ করে ইরাক, সিরিয়া, ইয়েমেন এবং অন্যান্য স্থানের সশস্ত্র গ্রুপগুলো ইসরাইলের বিরুদ্ধে পূর্ণ শক্তিতে নামবে। আর এটি যুদ্ধে ইসরাইলের মিত্র যুক্তরাষ্ট্রকেও নামতে বাধ্য করা হবে।

সূত্র : টাইমস অব ইসরাইল