নিজাম (নেত্রকোণা) প্রতিনিধিঃ টানা বৃষ্টিতে নেত্রকোণার মদনে বর্ণী নদীর পাশের সড়ক ডুবে গেছে। এতে নৌকা ভিড়াতে হচ্ছে ফেরী ঘাটে। সেই সুযোগে অবৈধ নৌকা ঘাটের নামে চলছে নিরব চাঁদাবাজি। আর এসব চাঁদাবাজিতে যুক্ত হয়েছে স্থানীয় ইউপি সদস্য বকুল মিয়াসহ একটি কু-চক্রী মহল।
নৌকা চালকদের অভিযোগ চাঁদা না দিলে যাত্রীসহ নৌকা নদীতে বাসিয়ে দেন। যাত্রী নামার বিকল্প কোনো জায়গা না থাকায় বাধ্য হয়েই চাঁদা দিতে হচ্ছে। ঘাটে চাঁদা নেওয়ায় যাত্রীদের কাছ থেকেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন নৌকা চালকরা।
স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, মদন উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের ধানকুনিয়া গ্রামের পাশে বর্ণী নদীতে নতুন সেতু নির্মাণ হওয়ায় মদন-তাড়াইল সড়কের সংযোগ স্থাপন হয়ে। এতে নেত্রকোণা ও কিশোরগঞ্জ এই দুই জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়েছে। তবে গত কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় যাতায়াতের এক মাত্র সড়কটি ডুবে যায়।
বিকল্প হিসেবে নদী পারাপারের জন্য ইঞ্জিন চালিত নৌকা বেঁচে নিতে হয় যাত্রীদের। নদী পাড় হতে একজন যাত্রীর কাছ থেকে ৪০/৫০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। নদী পারাপারের জন্য প্রতিদিন ২৫/৩০ টি নৌকা চলাচল করে। এ সুযোগে একটি অসাধু চক্র চাঁদাবাজিতে মেতে ওঠেছে। প্রতিটি নৌকা থেকে অবৈধ ভাবে ৪০০/৫০০ টাকা চাঁদা আদায় করছেন। টাকা না দিলে নৌকা চালকদের হুমতি ধমকি ও গালমন্দ করে।
নৌকা চালক কবির, ভিক্ষু মিয়া, সাদ্দাম মিয়া, আকুল মিয়া জানান, বর্ণী নদীর পাশে নৌকা থামালে বকুল মেম্বার, দুলাল মিয়া, হিরণ মুন্সি ও বাবলু এই চারজনের নামে প্রতিদিন চাঁদা দিতে হয়। প্রতিবাদ করলে তারা নির্যাতন করে। টাকা না দিলে নৌকা ঘাটে লাগাতে দেয় না। তাই নিরুপায় হয়ে জীবিকা নির্বাহের তাগিদে নৌকার মালিকরা প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা তাদের দিচ্ছি। আমরা এর প্রতিকার চাই।
এ ব্যাপারে বকুল মেম্বার টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তবে তার সহযোগী দুলাল মিয়া বলেন, আমাদের জমিতে নৌকা ভিড়ালে টাকা দিতেই হবে।
ইউপি চেয়ারম্যান সামিউল হাযদার সফি জানান, নৌকা থেকে চাঁদা তোলার খবর পেয়ে আমি বর্ণী নদীর ঘাটে যাই। নৌকার মালিকদের সাথে কথা বলে জানতে পারি চাদাঁবাজির সাথে আমার মেম্বার বকুলসহ আরও কয়েকজন জড়িত। বিষয়টি ইউএনও স্যারকে অবগত করেছি। তবে মেম্বার হউক আর যে কেউ হউক এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ শাহ আলম মিয়া জানান, পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় নৌকা থেকে একটি চক্র চাঁদা আদায় করছে বলে সংবাদ পেয়েছি। সরজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।