বাংলাদেশে জিআই সনদ দেয় শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেড মার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি)। জানা গেছে, সুন্দরবনের মধুর জন্য বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয় ২০১৭ সালের ৭ আগস্ট।
তালিকাভুক্ত হলে ভারতের উৎপাদিত সুন্দরবনের মধু ভারতের জিআই হিসেবে উল্লেখ থাকবে, আর বাংলাদেশের অংশে উৎপাদিত মধু বাংলাদেশের জিআই হিসেবে উল্লেখ থাকবে। ভৌগোলিকভাবে একই এলাকা হওয়ায় এতে কোনো বাঁধা নেই। আন্তর্জাতিক বাজারে যখন সুন্দরবনের মধু যাবে তখন বাংলাদেশ ও ভারতের নাম আলাদাভাবে উল্লেখ থাকবে।
ডিপিডিটির মহাপরিচালক মো. মুনিম হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সুন্দরবনের মধু এখনো জিআই হয়নি।
বাগেরহাট জেলার জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে সব তথ্য দেওয়া হয়েছে। প্রায় দুই মাস আগে আমাদের কাছ থেকে দুই কেজি মধু চাওয়া হয়েছিল, যা আমরা পাঠিয়ে দিয়েছি। এখন জিআই সনদের বিষয়ে সব তাঁরা (ডিপিডিটি) দেখবেন।’ জানা গেছে, ২০১৩ সালে জিআই সনদ দেওয়ার আইন পাস করে বাংলাদেশ সরকার। ২০১৫ সালে যার বিধিমালা প্রকাশ করা হয়। এরপর ২০১৬ সালে জামদানি শাড়ি প্রথম জিআই মর্যাদা পায়। গত আট বছরে জিআই মর্যাদা পেয়েছে মোট ৩১টি পণ্য। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে টাঙ্গাইলের শাড়ি, বাগদা চিংড়ি, ইলিশ মাছ, কাটারিভোগ ধান, কালিজিরা, জামদানি শাড়ি, শতরঞ্জির (ম্যাট), ক্ষীরশাপাতি আম, বিজয়পুরের সাদা মাটি, রাজশাহী সিল্ক, ফজলি আম, শীতলপাটি, বগুড়ার দই অন্যতম।
প্রসঙ্গত, যেসব পণ্য কোনো নির্দিষ্ট এলাকা বা অঞ্চলকেন্দ্রিক হয়ে থাকে, একই সঙ্গে আঞ্চলিকভাবে খ্যাতি রয়েছে, ৫০ বছরের বেশি সময়ের ঐতিহ্য রয়েছে, এসব পণ্য জিআই সনদ পাওয়ার যোগ্যতা রাখে। এসব পণ্যের গুণাগুণের প্রমাণ বিভিন্ন দালিলিক নথি, প্রাচীন সাহিত্য ও পুঁথিতে থাকতে হয়। একই সঙ্গে ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য থাকতে হয়। অর্থাৎ ওই পণ্য শুধু নির্দিষ্ট অঞ্চলের হতে হবে। তাহলেই সেই পণ্যকে জিআই হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। এ জন্য কোনো প্রতিষ্ঠান, সংগঠন বা ব্যক্তিকে তথ্য-উপাত্তসহ ডিপিডিটি আবেদন করতে হয়। তখন তারা যাচাই-বাছাই শেষে যৌক্তিক মনে হলে সনদ দেয়। এরপর দেশের মধ্যে একক মর্যাদাসম্পন্ন হয় ওই পণ্য।