ঢাকা ১০:২৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রেমালের তাণ্ডবে মৃত্যু বেড়ে ১৬

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:০১:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪
  • ২৪ বার

দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’। দীর্ঘ ৭ ঘণ্টাব্যাপী প্রচণ্ড শক্তি নিয়ে তাণ্ডব চালায় বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এ ঘূর্ণিঝড়টি। এর প্রভাবে প্লাবিত হয়েছে জনপদ, ঘরবাড়ি, তছনছ হয়েছে বেড়িবাঁধ, গাছপালা। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত রাজধানীসহ ৭ জেলায় অন্তত ১৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে ঢাকায় ৪, ভোলায় ৩, বরিশালে ৩, পটুয়াখালীতে ২, খুলনা, সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লায় একজন করে মোট ১৬ জন জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী ১৯ জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১০৭টি উপজেলার সাড়ে ৩৭ লাখ মানুষ। পৌনে ৩ কোটি গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ছেদ পড়েছে। ১৫ হাজার মোবাইল টাওয়ার নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে।

ঘূর্ণিঝড় ‘রেমালের’ তাণ্ডবে সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে ৩৫ হাজার ৪৮৩টি ঘরবাড়ি। এ ছাড়া আংশিকভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার ৯৯২টি ঘরবাড়ি।

ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলো হলো- সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, বরিশাল, পিরোজপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম, ফেনী, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নড়াইল, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর ও যশোর।

রাজধানীতে বৃষ্টির মধ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আলাদা ঘটনায় নারীসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। মৃতরা হলেন- খিলগাঁও রিয়াজবাগ এলাকার রিকশার গ্যারেজে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া রাকিব (২৫), খিলগাঁও সিপাহীবাগে রাস্তায় জমে থাকা পানির মধ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া মরিয়ম বেগম (৪৫), যাত্রাবাড়ীতে টিনের প্রাচীর স্পর্শ করে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া লিজা আক্তার (১৬) ও অপরজন বাড্ডার বাসিন্দা। তার নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ভোলায় বসতঘরে গাছ পড়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। জেলার লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চরউম্মেদ ইউনিয়নে তীব্র বাতাসে টিনের ঘরে গাছ পড়ে মনেজা (৫৪) নামে একজনের মৃত্যু হয়। গাছের ডাল পড়ে জেলার বোরহানউদ্দিনে সাচড়া ৬নং ওয়ার্ডে জাহাঙ্গীর (৫০) নামে আরেকজন ও দৌলতখান পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডে বসতঘরে গাছ পড়ে মাইশা নামে চার বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের নাপিতখালী আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে শওকত মোড়ল (৬৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। পটুয়াখালীতে জোয়ারের পানিতে ডুবে মো. শরীফ (২৭) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়।

এ ছাড়া বাউফলে ঘরের নিচে চাপা পড়ে করিম খানের (৬২) মৃত্যু হয়েছে। বরিশালে রেমালের প্রভাবে রূপাতলী বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন একটি বিল্ডিংয়ের ৩য় তলার দেয়াল ধসে লোকমান হোটেলের মালিকসহ দুইজন মারা গেছেন। তারা হলেন- লোকমান (৫৫) ও মোকলেস (২৫)। এ ছাড়া জালাল সিকদার নামের আরও একজন মারা গেছেন হয়েছেন।

কুমিল্লা নগরীতে নির্মাণাধীন একটি ভবনের দেয়াল ধসে সাইফুল ইসলাম সাগর (১২) নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ এলাকায় নির্মাণাধীন ভবনের দেয়াল ধসে এক যুবক মারা গেছেন। যুবকের নাম সাইফুল ইসলাম হৃদয় (২৬)।

খুলনায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে তীব্র বাতাস ও বৃষ্টিতে ঘরের ওপর গাছ উপড়ে পড়ে লালচাঁদ মোড়ল (৩৬) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

রেমালের তাণ্ডবে মৃত্যু বেড়ে ১৬

আপডেট টাইম : ১১:০১:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪

দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’। দীর্ঘ ৭ ঘণ্টাব্যাপী প্রচণ্ড শক্তি নিয়ে তাণ্ডব চালায় বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এ ঘূর্ণিঝড়টি। এর প্রভাবে প্লাবিত হয়েছে জনপদ, ঘরবাড়ি, তছনছ হয়েছে বেড়িবাঁধ, গাছপালা। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত রাজধানীসহ ৭ জেলায় অন্তত ১৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে ঢাকায় ৪, ভোলায় ৩, বরিশালে ৩, পটুয়াখালীতে ২, খুলনা, সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লায় একজন করে মোট ১৬ জন জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী ১৯ জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১০৭টি উপজেলার সাড়ে ৩৭ লাখ মানুষ। পৌনে ৩ কোটি গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ছেদ পড়েছে। ১৫ হাজার মোবাইল টাওয়ার নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে।

ঘূর্ণিঝড় ‘রেমালের’ তাণ্ডবে সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে ৩৫ হাজার ৪৮৩টি ঘরবাড়ি। এ ছাড়া আংশিকভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার ৯৯২টি ঘরবাড়ি।

ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলো হলো- সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, বরিশাল, পিরোজপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম, ফেনী, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নড়াইল, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর ও যশোর।

রাজধানীতে বৃষ্টির মধ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আলাদা ঘটনায় নারীসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। মৃতরা হলেন- খিলগাঁও রিয়াজবাগ এলাকার রিকশার গ্যারেজে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া রাকিব (২৫), খিলগাঁও সিপাহীবাগে রাস্তায় জমে থাকা পানির মধ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া মরিয়ম বেগম (৪৫), যাত্রাবাড়ীতে টিনের প্রাচীর স্পর্শ করে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া লিজা আক্তার (১৬) ও অপরজন বাড্ডার বাসিন্দা। তার নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ভোলায় বসতঘরে গাছ পড়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। জেলার লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চরউম্মেদ ইউনিয়নে তীব্র বাতাসে টিনের ঘরে গাছ পড়ে মনেজা (৫৪) নামে একজনের মৃত্যু হয়। গাছের ডাল পড়ে জেলার বোরহানউদ্দিনে সাচড়া ৬নং ওয়ার্ডে জাহাঙ্গীর (৫০) নামে আরেকজন ও দৌলতখান পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডে বসতঘরে গাছ পড়ে মাইশা নামে চার বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের নাপিতখালী আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে শওকত মোড়ল (৬৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। পটুয়াখালীতে জোয়ারের পানিতে ডুবে মো. শরীফ (২৭) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়।

এ ছাড়া বাউফলে ঘরের নিচে চাপা পড়ে করিম খানের (৬২) মৃত্যু হয়েছে। বরিশালে রেমালের প্রভাবে রূপাতলী বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন একটি বিল্ডিংয়ের ৩য় তলার দেয়াল ধসে লোকমান হোটেলের মালিকসহ দুইজন মারা গেছেন। তারা হলেন- লোকমান (৫৫) ও মোকলেস (২৫)। এ ছাড়া জালাল সিকদার নামের আরও একজন মারা গেছেন হয়েছেন।

কুমিল্লা নগরীতে নির্মাণাধীন একটি ভবনের দেয়াল ধসে সাইফুল ইসলাম সাগর (১২) নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ এলাকায় নির্মাণাধীন ভবনের দেয়াল ধসে এক যুবক মারা গেছেন। যুবকের নাম সাইফুল ইসলাম হৃদয় (২৬)।

খুলনায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে তীব্র বাতাস ও বৃষ্টিতে ঘরের ওপর গাছ উপড়ে পড়ে লালচাঁদ মোড়ল (৩৬) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।