টয়লেটে মিললো গৃহবধূর মরদেহ, পালিয়ে গেছে স্বামী-শাশুড়ি

গাজীপুরের শ্রীপুরে টয়লেট থেকে আমেনা খাতুন (২০) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে গৃহবধূর স্বামী আনোয়ার হোসেন।

এ ছাড়াও পলাতক রয়েছেন গৃহবধূর শাশুড়ি আনোয়ারা, দেবর দেলোয়ার ও মামিশাশুড়ি রেনু আক্তার। তবে গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তার স্বজনদের।

শনিবার (২৩ মার্চ) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাওনা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মিন্টু মিয়া। এর আগে একইদিন দুপুর দেড়টার দিকে মাওনা ইউনিয়নের চকপাড়া গ্রামের সলিংমোড় এলাকা থেকে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহত গৃহবধূ আমেনার বাবার বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলার কুটিয়াপাড়া গ্রামে। তার স্বামী আনোয়ার পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। এই দম্পতির লাবিব হোসাইন নামে পাঁচ বছর বয়সী ছেলে ও আয়েশা সিদ্দিক জান্নাত নামে দেড় বছর বয়সী একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে।

ফাঁড়ি ইনচার্জ বলেন, বসতবাড়ির একটি ঘরের টয়লেটের ভেতর থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গৃহবধূর থুতনির নিচে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সব লোক পলাতক রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমাদেরও সন্দেহ রয়েছে। যেহেতু ওরা পালিয়ে গেছে, তাহলে রহস্য আছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহিদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে বলেও জানান পুলিশের এই এসআই।

নিহতের মা মনোয়ারা বলেন, বিয়ের পর থেকে মেয়েকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন নির্যাতন করতো। এ নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বার একাধিকবার সালিস বৈঠক করেন, কিন্তু তাতেও নির্যাতন থামেনি। শনিবার বেলা ১১টার দিকে মামি রেনু আক্তার মোবাইল ফোনে জানায়, মেয়ে মারা গেছে। এরপর আমরা লোকজনসহ মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে এসে দেখি খালি বাড়ির একটি রুমের ভেতরে টয়লেটে মেয়ের নিথর দেহ পড়ে রয়েছে।

মনোয়ারা আরও বলেন, মেয়ের স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সব লোক পালিয়ে গেছে। এরপর আশপাশের লোকজনের কাছে জানতে পেরেছি গত শুক্রবার (২২ মার্চ) রাতে মেয়েকে অনেক নির্যাতন করেছে। একপর্যায়ে আহত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে আসে। তারপর প্রতিবেশীরা মেয়েকে রাস্তা থেকে তুলে এনে বাড়িতে দিয়ে গেলে দ্বিতীয়বার মারধর করে হত্যা করে পালিয়ে যায় ওরা। শাশুড়ি আনোয়ারা, দেবর দেলোয়ার হোসেন ও মামি রেনু আক্তার তাকে সব সময় নির্যাতন করতো। ওরা মেয়েকে খুন করে আমার নাতি-নাতনি নিয়ে পালিয়েছে।

প্রতিবেশী মোহাম্মদ রমজান আলী বলেন, রাত ১১টার দিকে ওই গৃহবধূ আহত অবস্থায় রাস্তার পাশে পড়ে ছিল। এরপর স্থানীয় আদম আলী ওই গৃহবধূকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়। এরপর দ্বিতীয় দফা মারধর করে তাকে হত্যা করে। ধারণা করা হচ্ছে, গৃহবধূ আমেনা খাতুন মারা যাওয়ার পরপরই রাতেই সবাই বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর