ঢাকা ০৬:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মদনে ভেকু দিয়ে চলছে ফসলি জমি থেকে মাটি কাটার হিড়িক, মানছে না কোনো নিয়মনীতি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১৬:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩
  • ৬৬ বার

নেত্রকোণা জেলা প্রতিনিধিঃ নেত্রকোণার মদনে প্রতি হাওরেই ফসলি জমি হতে মাটি কাটতে নেমে পড়েছে একাধিক ভেকু মেশিন ও লরি ট্রাক্টর। চলছে ফসলি জমি থেকে মাটি কাটার মহোৎসব। কোথাও মানছে না কোনো নিয়মনীতি। এ যেনো এক অরাজক দেশ।

সাপ্তাহ ব্যাপি উপজেলার প্রতিটি হাওর ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি হাওরেই মাটি কাটছে একাধিক ভেকু মেশিন। প্রতিটি ভেকুর সাথে রয়েছে ৫-১০ টি লরি ট্রাক্টর। ভেকু দিয়ে কাটা মাটি লরি ট্রাক্টর দ্বারা ফসলি জমির উপর দিয়েই নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, পৌর শহরসহ বিভিন্ন গন্তব্যে। রাস্তাঘাটে জমছে মাটি, উড়ছে ধূলো, অল্প বৃষ্টি হলে ঘটছে দূর্ঘটনা।

তিন শ্রেণীর সমন্বয়ে এ মহোৎসব পরিচালিত হচ্ছে। ১.ভেকু মেশিনের মালিক, ২.লরি ট্রাক্টরের মালিক, ৩.এই শ্রেণীর কাজ হচ্ছে কৃষকের কাজ থেকে মাটি ক্রয় করে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা এবং প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীকে বিভিন্ন ভাবে সাপোর্ট দেওয়া। তৃতীয় শ্রেণীর অনেকে গ্রাম্য লাটিয়াল ব্যাক্তি বা মাতাব্বর বা গ্রাম্য পর্যায়ের রাজনৈতিক ব্যাক্তি। যাদের আবার উপজেলা পর্যায়ের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সাথে লিংক রয়েছে।

কিন্তু, এ মহোৎসবের কারণে যে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে, সে দিকে কারোর খেয়ালও নেই। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যে অভিযান পরিচালনা করলেও তা তেমন কাজে আসছে না। ভেকু দিয়ে মাটি কাটার এই সিস্টেম প্রথমে চালু হয়েছে ইট ভাটায়। বিভিন্ন সময়ে এ বিষয়ে ইট ভাটা পরিদর্শনে গেলে, ভাটায় দায়িত্বরত ব্যাক্তিরা সংবাদ কর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, যে নিউজ লিখলে কোনো কাজে আসে না। তা লিখার কি দরকার।

এ বিষয়ে সচেতন মহল বলছেন, যথাযথ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণেই ইট ভাটার দায়িত্বরত ব্যাক্তিরা এ ধরনের মন্তব্য করতে সাহস পায়। লোক দেখানো অভিযান পরিচালনা না করে, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া যে সব ইট ভাটা পরিচালিত হচ্ছে বা ভেকু মিশন চলছে তা বন্ধ করা হলে, তারা এধরনের মন্তব্য করতে সাহস পেতো না।

একাধিক কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, হাওরের কোনো একটি ফসলি জমি থেকে যখন গভীর করে মাটি তুলে নেওয়া হয় তখন ঐ জমির চতুর্পাশের জমিতে আর পানি ধরে রাখা যায় না। এক পর্যায়ে পার্শবর্তী জমির মালিকরা মাটি কাটতে বাধ্য হয়ে। মুলত: এভাবেই মাটি কাটার হিড়িক শুরু হয়েছে।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ.টি.এম. আরিফ জানান, ইতোমধ্যে এ বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি। অভিযান চলছে, চলমান থাকবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মদনে ভেকু দিয়ে চলছে ফসলি জমি থেকে মাটি কাটার হিড়িক, মানছে না কোনো নিয়মনীতি

আপডেট টাইম : ১২:১৬:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩

নেত্রকোণা জেলা প্রতিনিধিঃ নেত্রকোণার মদনে প্রতি হাওরেই ফসলি জমি হতে মাটি কাটতে নেমে পড়েছে একাধিক ভেকু মেশিন ও লরি ট্রাক্টর। চলছে ফসলি জমি থেকে মাটি কাটার মহোৎসব। কোথাও মানছে না কোনো নিয়মনীতি। এ যেনো এক অরাজক দেশ।

সাপ্তাহ ব্যাপি উপজেলার প্রতিটি হাওর ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি হাওরেই মাটি কাটছে একাধিক ভেকু মেশিন। প্রতিটি ভেকুর সাথে রয়েছে ৫-১০ টি লরি ট্রাক্টর। ভেকু দিয়ে কাটা মাটি লরি ট্রাক্টর দ্বারা ফসলি জমির উপর দিয়েই নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, পৌর শহরসহ বিভিন্ন গন্তব্যে। রাস্তাঘাটে জমছে মাটি, উড়ছে ধূলো, অল্প বৃষ্টি হলে ঘটছে দূর্ঘটনা।

তিন শ্রেণীর সমন্বয়ে এ মহোৎসব পরিচালিত হচ্ছে। ১.ভেকু মেশিনের মালিক, ২.লরি ট্রাক্টরের মালিক, ৩.এই শ্রেণীর কাজ হচ্ছে কৃষকের কাজ থেকে মাটি ক্রয় করে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা এবং প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীকে বিভিন্ন ভাবে সাপোর্ট দেওয়া। তৃতীয় শ্রেণীর অনেকে গ্রাম্য লাটিয়াল ব্যাক্তি বা মাতাব্বর বা গ্রাম্য পর্যায়ের রাজনৈতিক ব্যাক্তি। যাদের আবার উপজেলা পর্যায়ের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সাথে লিংক রয়েছে।

কিন্তু, এ মহোৎসবের কারণে যে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে, সে দিকে কারোর খেয়ালও নেই। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যে অভিযান পরিচালনা করলেও তা তেমন কাজে আসছে না। ভেকু দিয়ে মাটি কাটার এই সিস্টেম প্রথমে চালু হয়েছে ইট ভাটায়। বিভিন্ন সময়ে এ বিষয়ে ইট ভাটা পরিদর্শনে গেলে, ভাটায় দায়িত্বরত ব্যাক্তিরা সংবাদ কর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, যে নিউজ লিখলে কোনো কাজে আসে না। তা লিখার কি দরকার।

এ বিষয়ে সচেতন মহল বলছেন, যথাযথ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণেই ইট ভাটার দায়িত্বরত ব্যাক্তিরা এ ধরনের মন্তব্য করতে সাহস পায়। লোক দেখানো অভিযান পরিচালনা না করে, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া যে সব ইট ভাটা পরিচালিত হচ্ছে বা ভেকু মিশন চলছে তা বন্ধ করা হলে, তারা এধরনের মন্তব্য করতে সাহস পেতো না।

একাধিক কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, হাওরের কোনো একটি ফসলি জমি থেকে যখন গভীর করে মাটি তুলে নেওয়া হয় তখন ঐ জমির চতুর্পাশের জমিতে আর পানি ধরে রাখা যায় না। এক পর্যায়ে পার্শবর্তী জমির মালিকরা মাটি কাটতে বাধ্য হয়ে। মুলত: এভাবেই মাটি কাটার হিড়িক শুরু হয়েছে।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ.টি.এম. আরিফ জানান, ইতোমধ্যে এ বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি। অভিযান চলছে, চলমান থাকবে।