ঢাকা ০৯:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার : করণীয়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৪৪:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৩
  • ৬০ বার

খন্দকার আল মঈন: সাম্প্রতিক সময়ে দেশে বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার আশঙ্কাজনক হারে পরিলক্ষিত হচ্ছে। অনেকেই রাজনৈতিক অথবা সামাজিক অনুষ্ঠানে বৈধ অস্ত্র প্রদর্শন করছে, যা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। বৈধ অস্ত্র ঠেকিয়ে ভয়ভীতি দেখানো, নিজ স্বার্থ হাসিল, আধিপত্য বিস্তার, এমনকি হত্যার মতো ঘটনাও সংঘটিত হচ্ছে। এমনকি রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে অস্ত্র প্রদর্শন করে বিরোধী পক্ষকে হুমকি দিতে দেখা যায়। যা অস্ত্র আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দেশে বৈধ-অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহারের আশঙ্কা রয়েছে। বৈধ-অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে নির্বাচনকালে যেন কোনো ধরনের নাশকতামূূলক কর্মকাণ্ড ঘটাতে না পারে সে লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করতে হয়। সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ‘দেশে বৈধ লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্র রয়েছে ৫০৩১০টি। এর মধ্যে ব্যক্তির নামে ৪৫২২৬টি এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ৫০৮৪টি। এসব বৈধ অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে একনলা, দোনলা বন্দুক, শটগান, পিস্তল, রিভলভার ও রাইফেল। এসব অস্ত্র ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এমনকি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীও রয়েছে।

আগ্নেয়াস্ত্র নীতিমালা, লাইসেন্সপ্রাপ্তির যোগ্যতা ও অযোগ্যতা আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ ব্যবহার সংক্রান্ত সর্বপ্রথম ১৮৭৮ সালে অস্ত্র আইন প্রণীত হয়। পরে ১৯২৪ সালে ভারত উপমহাদেশে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়ন করা হয় এবং বাংলাদেশে ২০১৬ সালে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হতে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, গ্রহণ, ক্রয়-বিক্রয়, ব্যবহার, সংরক্ষণ, হস্তান্তর সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রজ্ঞাপন, সার্কুলার ও অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে। ‘আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা, ২০১৬’ অনুসারে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। কেবল লাইসেন্সের আবদেনকারীর জীবনের ঝুঁকি থাকলে তিনি আত্মরক্ষার জন্য লাইসেন্সের আবেদন করতে পারবেন। এ ছাড়াও আবেদনকারীর বয়স ৩০-৭০ বছর এবং তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সামর্থ্যবান হতে হবে। আবেদনকারীকে ব্যক্তি শ্রেণির আয়করদাতা হতে হবে। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জাতীয় বেতন স্কেলের ষষ্ঠ গ্রেড ভুক্ত চাকরিজীবী বা অবসরে যাওয়া ক্যাডার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে লাইসেন্স ফি এবং নবায়ন ফি ব্যতীত অস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান করা হয়ে থাকে। একই ব্যক্তি সর্বোচ্চ একটি এনপিবি পিস্তল/রিভলভার এবং একটি শটগান/এনপিবি রাইফেল অস্ত্রের লাইসেন্স পেতে পারেন। কারও বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন থাকলে অথবা কোনো মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হলে দশ বছরের মধ্যে তিনি লাইসেন্স পাবেন না।

আগ্নেয়াস্ত্র বহন, লাইসেন্স বাতিল ও হারালে করণীয়

কোনো ব্যক্তি স্বীয় লাইসেন্সে এন্ট্রিকৃত অস্ত্র আত্মরক্ষার নিমিত্তে নিজে বহন বা ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু অন্যকে ভয়ভীতি দেখানোর জন্য অস্ত্র প্রদর্শন করতে পারবেন না। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্তব্যরত গার্ড নির্ধারিত ইউনিফর্ম ছাড়া প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করতে পারবে না। এ ছাড়াও আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সধারী কোনো ব্যক্তি অন্য কারও নিরাপত্তা বা সম্পত্তি রক্ষার জন্য অস্ত্রধারী প্রহরী হিসেবে নিয়োজিত হলে তার অস্ত্রের লাইসেন্স তাৎক্ষণিকভাবে বাতিলের বিধান রয়েছে। আগেয়াস্ত্রের লাইসেন্সপ্রাপ্ত কোনো প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ হলে বা বিলুপ্ত হয়ে গেলে প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী অথবা নির্বাহী প্রধান নিকটস্থ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট আগেয়াস্ত্র জমা দেবেন। প্রবাসী বাংলাদেশি বা বাংলাদেশি দ্বৈত নাগরিককে বিদেশে অবস্থানকালে লাইসেন্সকৃত অস্ত্র সংশ্লিষ্ট থানায় বা সেফ কিপিং লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানে জমা রাখতে হবে। আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের শর্তসমূহ যথাযথভাবে প্রতিপালন না করলে বা অন্য কোনো যৌক্তিক কারণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে কোনো লাইসেন্স বাতিল করতে পারেন। লাইসেন্স বাতিল হলে সংশ্লিষ্ট অস্ত্র তিন দিনের মধ্যে নিকটস্থ থানায় জমা দিতে হয়। কেউ আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রি বা হস্তান্তর করলে তার লাইসেন্স বাতিল হয়ে যায়। এ ছাড়াও ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৮ ধারা অনুসারে জনগণের নিরাপত্তার জন্য যদি ম্যাজিস্ট্রেট প্রয়োজন মনে করেন বা লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যক্তি সাজাপ্রাপ্ত হয় সে ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট তার লাইসেন্স বাতিল করতে পারেন। আগ্নেয়াস্ত্র বহনকালে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স সঙ্গে রাখতে হয়। লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে অন্য থানা এলাকায় গেলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট থানাকে পূর্বে জানাতে হয়। উল্লেখ্য, আগ্নেয়াস্ত্র হারিয়ে গেলে অথবা চুরি হলে তাৎক্ষণিক সংশ্লিষ্ট থানায় জিডি/মামলা করতে হবে এবং বিষয়টি দ্রুত সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে লিখিতভাবে জানাতে হবে।

বৈধ অস্ত্র ব্যবহারে করণীয়

সর্বশেষ প্রণীত ‘আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা ২০১৬’ অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি নিজের লাইসেন্সের বিপরীতে নেওয়া অস্ত্র শুধু আত্মরক্ষার জন্য ব্যবহার করতে পারবেন। পুরনো অস্ত্র বছর শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে বার্ষিক নবায়ন এবং গুলি ক্রয় বা সংগ্রহের ক্ষেত্রেও জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিতে হয়। গুলি খরচের হিসাব সংশ্লিষ্ট থানা এবং জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে অবহিত করতে হয়। ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১২ ধারা মতে, কোনো ব্যক্তির নিকট লাইসেন্স থাকুক বা না থাকুক যদি তিনি আগ্নেয়াস্ত্র এমনভাবে ব্যবহার করেন, যাতে ঐ অস্ত্র বেআইনি উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতে পারে বলে সন্দেহ হয়, সে ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ম্যাজিস্ট্রেট বা অন্য যে কোনো ব্যক্তি বিনা পরোয়ানায় তাকে গ্রেপ্তারসহ তার অস্ত্র জব্দ করতে পারবেন। প্রতিষ্ঠানের নামে ইস্যুকৃত আগ্নেয়াস্ত্র ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার কিংবা নিজের নামে লাইসেন্সকৃত অস্ত্র অন্য কাউকে ভাড়া দেওয়া যাবে না। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আর্থিক লাভবান হওয়ার জন্য অথবা কারও বিরক্তি তৈরি হতে পারে এমনভাবে অস্ত্র প্রদর্শন করলে তাৎক্ষণিক তার লাইসেন্স বাতিল হওয়ার বিধান রয়েছে। এ ছাড়াও সরকার প্রয়োজনে সময়ে সময়ে যে কোনো আগ্নেয়াস্ত্র থানা বা সেফ কিপিং লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারেন এবং এ আদেশ প্রত্যেক লাইসেন্সধারীকে অবশ্যই পালন করতে হয়। সর্বোপরি আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার সংক্রান্ত প্রচলিত আইন ও বিধি-বিধান অনুসরণ করে বৈধ অস্ত্রের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

নির্বাচনকালীন করণীয়

জাতীয় সংসদ নির্বাচন বা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আগে আইনশৃৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সকল বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র নিকটবর্তী থানায় জমা দিতে হয়। নির্বাচনকালীন সময়ে ভোটকেন্দ্র ও তার পাশর্^বর্তী এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে চলাচল ও প্রদর্শন নিষিদ্ধ থাকে। নির্বাচনকালীন বিভিন্ন সরকারি, আধা সরকারি ও বেসরকারি দপ্তর, আর্থিক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার কাজে প্রহরীদের ব্যবহৃত অস্ত্র এই নির্দেশনার আওতামুক্ত থাকে। তবে নির্বাচনকালীন সময়ে ব্যক্তিমালিকাধীন প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত অস্ত্র কর্তৃপক্ষের নির্দেশে থানায় জমা রাখতে হয় অথবা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অস্ত্রাগারে জমা রেখে উক্ত অস্ত্রাগার সিলগালা করা হয় এবং অস্ত্রাগারের চাবি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য থানায় জমা রাখা হয়। এ ছাড়াও ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইন অনুসারে সরকার জনস্বার্থে কোনো লাইসেন্সধারী ব্যক্তিকে তার লাইসেন্সকৃত অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরার ওপর নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারেন। উক্ত বিধিনিষেধ ভঙ্গ করলে ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ অফিসার বা সরকার কর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত লোক ঐ ব্যক্তির অস্ত্র জব্দ করতে পারেন এবং জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সময় তার লাইসেন্স বাতিল বা লাইসেন্সের কার্যকারিতা স্থগিত রাখতে পারবেন। অনেক সময় লক্ষ করা যায় নির্বাচনকালীন সময়ে অনেকে অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে মহড়া দেয়। এটি আইনত দণ্ডনীয় এবং নির্বাচনকালে কেউ এ ধরনের কাজ করলে তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

লাইসেন্সের শর্তভঙ্গের শাস্তি

কেউ আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করলে বা অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করলে অস্ত্র আইন, ১৮৭৮-এর ধারা ১৯, ১৯-২৪-এ বিভিন্ন প্রকারের শাস্তির বিধান রয়েছে। কোনো ব্যক্তি এই আইনের ধারা ৫, ৬, ১০ ও ১৩-১৭-এ বর্ণিত যে কোনো অপরাধ করলে বা কোনো শর্ত ভঙ্গ করলে সে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা অন্যূন ৭ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এ ছাড়া যদি কোনো ব্যক্তি হত্যাকাণ্ড সংঘটনের উদ্দেশ্যে পিস্তল, রিভলভার, রাইফেল, শটগান বা অন্য কোনো আগ্নেয়াস্ত্রে দখলে রাখেন, তবে তিনি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা অন্য যে কোনো মেয়াদের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন; যার মেয়াদ ১৪ বছর পর্যন্ত হতে পারে। আবার কেউ আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করলে তিনি ৬ মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড বা ৫০০ (পাঁচশ) টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। লাইসেন্সপ্রাপ্ত নয় এমন লোকের নিকট হতে জেনেশুনে আগ্নেয়াস্ত্র ক্রয় করলে বা এমন লোকের নিকট আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রয় করলে ৬ মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড বা ৫০০ (পাঁচশ) টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

সম্প্রতি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশে বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহারের আশঙ্কা রয়েছে। নির্বাচন কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশনের পরামর্শক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রালয় ‘আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার’ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করে থাকেন। যেখানে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সপ্রাপ্ত সবাইকে নির্বাচনকালীন সময়ে তাদের কাছে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র সম্পর্কে করণীয় উল্লেখ থাকে। আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সধারী সবার উচিত সে নির্দেশনা মেনে চলা। ইতিপূর্বে বিভিন্ন রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে অনেককে অস্ত্র উঁচিয়ে ধরে হুঙ্কার দিতে অথবা গুলি ছুড়তে দেখা গিয়েছে, যা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের নীতিমালার লঙ্ঘন এবং জননিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা বিঘ্ন করে। বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার এলাকায় যদি কেউ জনমনে ভীতি সঞ্চারের জন্য আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করে, তবে তথ্য-প্রমাণসহ দ্রুততম সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করুন। সর্বোপরি আসন্ন জাতীয় নির্বাচন কেন্দ্র করে বৈধ-অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে কেউ যেন দেশে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে না পারে, সে লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন : বিপিএম (বার), পিএসসি ও পরিচালক, লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং, র‌্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তর

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার : করণীয়

আপডেট টাইম : ১১:৪৪:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৩

খন্দকার আল মঈন: সাম্প্রতিক সময়ে দেশে বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার আশঙ্কাজনক হারে পরিলক্ষিত হচ্ছে। অনেকেই রাজনৈতিক অথবা সামাজিক অনুষ্ঠানে বৈধ অস্ত্র প্রদর্শন করছে, যা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। বৈধ অস্ত্র ঠেকিয়ে ভয়ভীতি দেখানো, নিজ স্বার্থ হাসিল, আধিপত্য বিস্তার, এমনকি হত্যার মতো ঘটনাও সংঘটিত হচ্ছে। এমনকি রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে অস্ত্র প্রদর্শন করে বিরোধী পক্ষকে হুমকি দিতে দেখা যায়। যা অস্ত্র আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দেশে বৈধ-অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহারের আশঙ্কা রয়েছে। বৈধ-অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে নির্বাচনকালে যেন কোনো ধরনের নাশকতামূূলক কর্মকাণ্ড ঘটাতে না পারে সে লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করতে হয়। সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ‘দেশে বৈধ লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্র রয়েছে ৫০৩১০টি। এর মধ্যে ব্যক্তির নামে ৪৫২২৬টি এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ৫০৮৪টি। এসব বৈধ অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে একনলা, দোনলা বন্দুক, শটগান, পিস্তল, রিভলভার ও রাইফেল। এসব অস্ত্র ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এমনকি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীও রয়েছে।

আগ্নেয়াস্ত্র নীতিমালা, লাইসেন্সপ্রাপ্তির যোগ্যতা ও অযোগ্যতা আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ ব্যবহার সংক্রান্ত সর্বপ্রথম ১৮৭৮ সালে অস্ত্র আইন প্রণীত হয়। পরে ১৯২৪ সালে ভারত উপমহাদেশে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়ন করা হয় এবং বাংলাদেশে ২০১৬ সালে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হতে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, গ্রহণ, ক্রয়-বিক্রয়, ব্যবহার, সংরক্ষণ, হস্তান্তর সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রজ্ঞাপন, সার্কুলার ও অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে। ‘আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা, ২০১৬’ অনুসারে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। কেবল লাইসেন্সের আবদেনকারীর জীবনের ঝুঁকি থাকলে তিনি আত্মরক্ষার জন্য লাইসেন্সের আবেদন করতে পারবেন। এ ছাড়াও আবেদনকারীর বয়স ৩০-৭০ বছর এবং তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সামর্থ্যবান হতে হবে। আবেদনকারীকে ব্যক্তি শ্রেণির আয়করদাতা হতে হবে। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জাতীয় বেতন স্কেলের ষষ্ঠ গ্রেড ভুক্ত চাকরিজীবী বা অবসরে যাওয়া ক্যাডার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে লাইসেন্স ফি এবং নবায়ন ফি ব্যতীত অস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান করা হয়ে থাকে। একই ব্যক্তি সর্বোচ্চ একটি এনপিবি পিস্তল/রিভলভার এবং একটি শটগান/এনপিবি রাইফেল অস্ত্রের লাইসেন্স পেতে পারেন। কারও বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন থাকলে অথবা কোনো মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হলে দশ বছরের মধ্যে তিনি লাইসেন্স পাবেন না।

আগ্নেয়াস্ত্র বহন, লাইসেন্স বাতিল ও হারালে করণীয়

কোনো ব্যক্তি স্বীয় লাইসেন্সে এন্ট্রিকৃত অস্ত্র আত্মরক্ষার নিমিত্তে নিজে বহন বা ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু অন্যকে ভয়ভীতি দেখানোর জন্য অস্ত্র প্রদর্শন করতে পারবেন না। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্তব্যরত গার্ড নির্ধারিত ইউনিফর্ম ছাড়া প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করতে পারবে না। এ ছাড়াও আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সধারী কোনো ব্যক্তি অন্য কারও নিরাপত্তা বা সম্পত্তি রক্ষার জন্য অস্ত্রধারী প্রহরী হিসেবে নিয়োজিত হলে তার অস্ত্রের লাইসেন্স তাৎক্ষণিকভাবে বাতিলের বিধান রয়েছে। আগেয়াস্ত্রের লাইসেন্সপ্রাপ্ত কোনো প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ হলে বা বিলুপ্ত হয়ে গেলে প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী অথবা নির্বাহী প্রধান নিকটস্থ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট আগেয়াস্ত্র জমা দেবেন। প্রবাসী বাংলাদেশি বা বাংলাদেশি দ্বৈত নাগরিককে বিদেশে অবস্থানকালে লাইসেন্সকৃত অস্ত্র সংশ্লিষ্ট থানায় বা সেফ কিপিং লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানে জমা রাখতে হবে। আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের শর্তসমূহ যথাযথভাবে প্রতিপালন না করলে বা অন্য কোনো যৌক্তিক কারণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে কোনো লাইসেন্স বাতিল করতে পারেন। লাইসেন্স বাতিল হলে সংশ্লিষ্ট অস্ত্র তিন দিনের মধ্যে নিকটস্থ থানায় জমা দিতে হয়। কেউ আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রি বা হস্তান্তর করলে তার লাইসেন্স বাতিল হয়ে যায়। এ ছাড়াও ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৮ ধারা অনুসারে জনগণের নিরাপত্তার জন্য যদি ম্যাজিস্ট্রেট প্রয়োজন মনে করেন বা লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যক্তি সাজাপ্রাপ্ত হয় সে ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট তার লাইসেন্স বাতিল করতে পারেন। আগ্নেয়াস্ত্র বহনকালে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স সঙ্গে রাখতে হয়। লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে অন্য থানা এলাকায় গেলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট থানাকে পূর্বে জানাতে হয়। উল্লেখ্য, আগ্নেয়াস্ত্র হারিয়ে গেলে অথবা চুরি হলে তাৎক্ষণিক সংশ্লিষ্ট থানায় জিডি/মামলা করতে হবে এবং বিষয়টি দ্রুত সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে লিখিতভাবে জানাতে হবে।

বৈধ অস্ত্র ব্যবহারে করণীয়

সর্বশেষ প্রণীত ‘আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা ২০১৬’ অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি নিজের লাইসেন্সের বিপরীতে নেওয়া অস্ত্র শুধু আত্মরক্ষার জন্য ব্যবহার করতে পারবেন। পুরনো অস্ত্র বছর শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে বার্ষিক নবায়ন এবং গুলি ক্রয় বা সংগ্রহের ক্ষেত্রেও জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিতে হয়। গুলি খরচের হিসাব সংশ্লিষ্ট থানা এবং জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে অবহিত করতে হয়। ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১২ ধারা মতে, কোনো ব্যক্তির নিকট লাইসেন্স থাকুক বা না থাকুক যদি তিনি আগ্নেয়াস্ত্র এমনভাবে ব্যবহার করেন, যাতে ঐ অস্ত্র বেআইনি উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতে পারে বলে সন্দেহ হয়, সে ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ম্যাজিস্ট্রেট বা অন্য যে কোনো ব্যক্তি বিনা পরোয়ানায় তাকে গ্রেপ্তারসহ তার অস্ত্র জব্দ করতে পারবেন। প্রতিষ্ঠানের নামে ইস্যুকৃত আগ্নেয়াস্ত্র ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার কিংবা নিজের নামে লাইসেন্সকৃত অস্ত্র অন্য কাউকে ভাড়া দেওয়া যাবে না। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আর্থিক লাভবান হওয়ার জন্য অথবা কারও বিরক্তি তৈরি হতে পারে এমনভাবে অস্ত্র প্রদর্শন করলে তাৎক্ষণিক তার লাইসেন্স বাতিল হওয়ার বিধান রয়েছে। এ ছাড়াও সরকার প্রয়োজনে সময়ে সময়ে যে কোনো আগ্নেয়াস্ত্র থানা বা সেফ কিপিং লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারেন এবং এ আদেশ প্রত্যেক লাইসেন্সধারীকে অবশ্যই পালন করতে হয়। সর্বোপরি আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার সংক্রান্ত প্রচলিত আইন ও বিধি-বিধান অনুসরণ করে বৈধ অস্ত্রের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

নির্বাচনকালীন করণীয়

জাতীয় সংসদ নির্বাচন বা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আগে আইনশৃৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সকল বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র নিকটবর্তী থানায় জমা দিতে হয়। নির্বাচনকালীন সময়ে ভোটকেন্দ্র ও তার পাশর্^বর্তী এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে চলাচল ও প্রদর্শন নিষিদ্ধ থাকে। নির্বাচনকালীন বিভিন্ন সরকারি, আধা সরকারি ও বেসরকারি দপ্তর, আর্থিক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার কাজে প্রহরীদের ব্যবহৃত অস্ত্র এই নির্দেশনার আওতামুক্ত থাকে। তবে নির্বাচনকালীন সময়ে ব্যক্তিমালিকাধীন প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত অস্ত্র কর্তৃপক্ষের নির্দেশে থানায় জমা রাখতে হয় অথবা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অস্ত্রাগারে জমা রেখে উক্ত অস্ত্রাগার সিলগালা করা হয় এবং অস্ত্রাগারের চাবি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য থানায় জমা রাখা হয়। এ ছাড়াও ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইন অনুসারে সরকার জনস্বার্থে কোনো লাইসেন্সধারী ব্যক্তিকে তার লাইসেন্সকৃত অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরার ওপর নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারেন। উক্ত বিধিনিষেধ ভঙ্গ করলে ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ অফিসার বা সরকার কর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত লোক ঐ ব্যক্তির অস্ত্র জব্দ করতে পারেন এবং জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সময় তার লাইসেন্স বাতিল বা লাইসেন্সের কার্যকারিতা স্থগিত রাখতে পারবেন। অনেক সময় লক্ষ করা যায় নির্বাচনকালীন সময়ে অনেকে অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে মহড়া দেয়। এটি আইনত দণ্ডনীয় এবং নির্বাচনকালে কেউ এ ধরনের কাজ করলে তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

লাইসেন্সের শর্তভঙ্গের শাস্তি

কেউ আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করলে বা অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করলে অস্ত্র আইন, ১৮৭৮-এর ধারা ১৯, ১৯-২৪-এ বিভিন্ন প্রকারের শাস্তির বিধান রয়েছে। কোনো ব্যক্তি এই আইনের ধারা ৫, ৬, ১০ ও ১৩-১৭-এ বর্ণিত যে কোনো অপরাধ করলে বা কোনো শর্ত ভঙ্গ করলে সে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা অন্যূন ৭ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এ ছাড়া যদি কোনো ব্যক্তি হত্যাকাণ্ড সংঘটনের উদ্দেশ্যে পিস্তল, রিভলভার, রাইফেল, শটগান বা অন্য কোনো আগ্নেয়াস্ত্রে দখলে রাখেন, তবে তিনি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা অন্য যে কোনো মেয়াদের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন; যার মেয়াদ ১৪ বছর পর্যন্ত হতে পারে। আবার কেউ আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করলে তিনি ৬ মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড বা ৫০০ (পাঁচশ) টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। লাইসেন্সপ্রাপ্ত নয় এমন লোকের নিকট হতে জেনেশুনে আগ্নেয়াস্ত্র ক্রয় করলে বা এমন লোকের নিকট আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রয় করলে ৬ মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড বা ৫০০ (পাঁচশ) টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

সম্প্রতি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশে বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহারের আশঙ্কা রয়েছে। নির্বাচন কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশনের পরামর্শক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রালয় ‘আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার’ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করে থাকেন। যেখানে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সপ্রাপ্ত সবাইকে নির্বাচনকালীন সময়ে তাদের কাছে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র সম্পর্কে করণীয় উল্লেখ থাকে। আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সধারী সবার উচিত সে নির্দেশনা মেনে চলা। ইতিপূর্বে বিভিন্ন রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে অনেককে অস্ত্র উঁচিয়ে ধরে হুঙ্কার দিতে অথবা গুলি ছুড়তে দেখা গিয়েছে, যা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের নীতিমালার লঙ্ঘন এবং জননিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা বিঘ্ন করে। বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার এলাকায় যদি কেউ জনমনে ভীতি সঞ্চারের জন্য আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করে, তবে তথ্য-প্রমাণসহ দ্রুততম সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করুন। সর্বোপরি আসন্ন জাতীয় নির্বাচন কেন্দ্র করে বৈধ-অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে কেউ যেন দেশে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে না পারে, সে লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন : বিপিএম (বার), পিএসসি ও পরিচালক, লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং, র‌্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তর