ঢাকা ০৫:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পানির নিচে ফসলি জমি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৪৮:১০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৩
  • ৫৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নে বহলবাড়িয়া, চাঁদপুর ও বাঁশআড়া এলাকায় প্রায় সাড়ে চার হাজার বিঘা কৃষিজমি রয়েছে। একসময় এসব জমি ছিল তিন ফসলি। কিন্তু ড্রেনেজ খাল দখল হওয়ার কারণে এসব জমি এখন জলাবদ্ধ বিলে পরিণত হয়েছে। বছরের ৭-৮ মাস পানির নিচে থাকে। ফলে তিন ফসলির জমিতে মাত্র একবার চাষাবাদ করা যাচ্ছে।

কৃষি অফিস বলছে, জলাবদ্ধতার কারণে এসব জমিতে প্রায় ছয় হাজার টন খাদ্যশস্য উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। যার বাজারমূল্য প্রায় ২০ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে নন্দলালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান খোকন বলেন, খাল দখল করে কেউ বাড়ি করেছেন, কেউ পুকুর খনন করেছেন। এতে কয়েক হাজার বিঘা জমিতে ফসল হচ্ছে না। খাল খননের জন্য উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে পাশাপাশি তিনটি মাঠে জমে রয়েছে হাঁটুপানি। সেখানে কচুরিপানা, কলমিসহ নানা রকম আগাছা জন্মেছে। নিজ নিজ জমিতে কৃষকেরা আগাছা পরিষ্কার করছেন। আবার পাশেই বাঁশের চাঁই, অবৈধ কারেন্ট জাল ও ছিপ দিয়ে কয়েকজন জেলে মাছ ধরছেন। মাঠের মধ্যে কয়েকটি পুকুর কাটা রয়েছে। যে এলাকা দিয়ে খাল গেছে, সেখানে কয়েকটি বসতবাড়িও গড়ে উঠেছে।

বহলবাড়িয়া মাঠে জমি পরিচর্যায় ব্যস্ত ষাটোর্ধ কৃষক মসলেম উদ্দিন বলেন, এখানে নিজের ও বর্গা নিয়ে পাঁচ বিঘা জমি আবাদ করি। আগে খাল ছিল, নদীতে পানি চলে যেত। এখন খাল বন্ধ হয়ে পানি নিষ্কাশন হয় না। এতে কোনোমতে একবার চাষ হয়।

চাঁদপুর মাঠের আরিফুল ইসলাম নামের আরেক কৃষক বলেন, আগে ধান, পেঁয়াজ, রসুনের চাষ করতাম। কিন্তু পানির কারণে এখন একটা ফসল হয়। জলাবদ্ধতার কারণে জমিতে কচুরিপানা-আগাছা জমে থাকে। সেগুলো প্রতি বছর পরিষ্কার করতে অনেক কষ্ট হয়। চাষে খরচও বেশি হয়।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. রাইসুল ইসলাম বলেন, প্রায় সাড়ে চার হাজার বিঘা জমিতে জলাবদ্ধতার কারণে মাত্র চার হাজার টন খাদ্যশস্য উৎপাদন হচ্ছে। জলাবদ্ধতা দূর করা গেলে সেখানে আরও ছয় হাজার টন খাদ্যশস্য উৎপাদন করা সম্ভব।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিতান কুমার মন্ডল বলেন, সংকট নিরসনে কৃষক, কৃষি বিভাগ ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ করছি। সবাই একমত হলে সরকারের কাছ থেকে বড় বাজেট নিয়ে একটা খাল খনন করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

পানির নিচে ফসলি জমি

আপডেট টাইম : ১১:৪৮:১০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৩

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নে বহলবাড়িয়া, চাঁদপুর ও বাঁশআড়া এলাকায় প্রায় সাড়ে চার হাজার বিঘা কৃষিজমি রয়েছে। একসময় এসব জমি ছিল তিন ফসলি। কিন্তু ড্রেনেজ খাল দখল হওয়ার কারণে এসব জমি এখন জলাবদ্ধ বিলে পরিণত হয়েছে। বছরের ৭-৮ মাস পানির নিচে থাকে। ফলে তিন ফসলির জমিতে মাত্র একবার চাষাবাদ করা যাচ্ছে।

কৃষি অফিস বলছে, জলাবদ্ধতার কারণে এসব জমিতে প্রায় ছয় হাজার টন খাদ্যশস্য উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। যার বাজারমূল্য প্রায় ২০ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে নন্দলালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান খোকন বলেন, খাল দখল করে কেউ বাড়ি করেছেন, কেউ পুকুর খনন করেছেন। এতে কয়েক হাজার বিঘা জমিতে ফসল হচ্ছে না। খাল খননের জন্য উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে পাশাপাশি তিনটি মাঠে জমে রয়েছে হাঁটুপানি। সেখানে কচুরিপানা, কলমিসহ নানা রকম আগাছা জন্মেছে। নিজ নিজ জমিতে কৃষকেরা আগাছা পরিষ্কার করছেন। আবার পাশেই বাঁশের চাঁই, অবৈধ কারেন্ট জাল ও ছিপ দিয়ে কয়েকজন জেলে মাছ ধরছেন। মাঠের মধ্যে কয়েকটি পুকুর কাটা রয়েছে। যে এলাকা দিয়ে খাল গেছে, সেখানে কয়েকটি বসতবাড়িও গড়ে উঠেছে।

বহলবাড়িয়া মাঠে জমি পরিচর্যায় ব্যস্ত ষাটোর্ধ কৃষক মসলেম উদ্দিন বলেন, এখানে নিজের ও বর্গা নিয়ে পাঁচ বিঘা জমি আবাদ করি। আগে খাল ছিল, নদীতে পানি চলে যেত। এখন খাল বন্ধ হয়ে পানি নিষ্কাশন হয় না। এতে কোনোমতে একবার চাষ হয়।

চাঁদপুর মাঠের আরিফুল ইসলাম নামের আরেক কৃষক বলেন, আগে ধান, পেঁয়াজ, রসুনের চাষ করতাম। কিন্তু পানির কারণে এখন একটা ফসল হয়। জলাবদ্ধতার কারণে জমিতে কচুরিপানা-আগাছা জমে থাকে। সেগুলো প্রতি বছর পরিষ্কার করতে অনেক কষ্ট হয়। চাষে খরচও বেশি হয়।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. রাইসুল ইসলাম বলেন, প্রায় সাড়ে চার হাজার বিঘা জমিতে জলাবদ্ধতার কারণে মাত্র চার হাজার টন খাদ্যশস্য উৎপাদন হচ্ছে। জলাবদ্ধতা দূর করা গেলে সেখানে আরও ছয় হাজার টন খাদ্যশস্য উৎপাদন করা সম্ভব।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিতান কুমার মন্ডল বলেন, সংকট নিরসনে কৃষক, কৃষি বিভাগ ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ করছি। সবাই একমত হলে সরকারের কাছ থেকে বড় বাজেট নিয়ে একটা খাল খনন করা হবে।