নতুন ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের শুরুর আগেই রপ্তানির বিপরীতে ভর্তুকি বা নগদ সহায়তা দেওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে সরকার। স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তৈরি পোশাক, চামড়া, ও কৃষিপণ্যসহ ৪৩ খাতের পণ্যে নগদ সহায়তা কমানো হয়েছে।
রোববার (৩০ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করা হয়েছে।
সার্কুলার অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ে ৪৩ খাতের পণ্য রপ্তানির বিপরীতে প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা পাবে। নতুন অর্থবছরে তৈরি পোশাক, চামড়া, ও কৃষিপণ্যসহ ৪৩ খাতের নির্ধারিত পণ্যে সর্বনিম্ন দশমিক ৩০ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ হারে এ নগদ সহায়তা পাবেন রপ্তানিকারকরা। যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ছিল ১ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ।
নগদ সহায়তার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বরাবরের মতো ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে নগদ সহায়তা পরিশোধ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এবার প্রায় সব পণ্যের নগদ সহায়তার হার আগের অর্থবছরের চেয়ে কমানো হয়েছে।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, বর্তমানে রপ্তানি খাত নানা সমস্যায় জর্জরিত। আর এখন নগদ সহায়তা কমিয়ে দেওয়াটা যুক্তিসঙ্গত নয়। নগদ সহায়তা কমিয়ে দেওয়ার ফলে আমদানি নির্ভরতা বেড়ে যাবে, রিজার্ভ কমে যাবে। নগদ সহায়তা কমিয়ে দেওয়ার কারণে তৈরি পোশাক খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তিনি বলেন, রপ্তানিকারকদের হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। একদিকে কর্মীদের বেতন, বিদ্যুৎ, গ্যাস এবং ব্যাংক সুদ বেড়েছে। অন্যদিকে সহায়তা কমানো হচ্ছে। তাতে ধীরে ধীরে রুগ্ন শিল্পে পরিণত হবে এ খাত। তাতে ঋণের অর্থ ব্যাংক ফেরত পাবে না।
তিনি আরও বলেন, উন্নয়নশীল দেশে গেলে আমাদের সুবিধা কমে যাবে এই অযুহাত দিয়ে নগদ সহায়তা কমানোর কোনো যুক্তি নেই। কারণ আরও দুই বছর সময় আছে, এছাড়া এলডিসি থেকে উত্তরণের পর আরও ৩ বছর শুল্কমুক্ত রপ্তানির সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সুতরাং এখনই সব নগদ সহায়তা বন্ধ করে দেওয়ার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। আমরা সরকারের সব মহলে বিষয়টি জানিয়েছি।