ঢাকা ১০:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউরোপকে পাশে চাইবেন ওবামা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:২০:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুন ২০১৫
  • ৩৪৫ বার

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী সাত দেশের নেতাদের জি-৭ সম্মেলনে এবার ইউক্রেন সংকটই প্রাধান্য পাবে। পূর্ব ইউক্রেনে চলমান সংঘর্ষ থামানোর লক্ষ্যে রাশিয়ার ওপর কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে চেষ্টা করবেন সাত দেশের নেতারা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যেমন উঠেপড়ে লেগেছেন ইউক্রেন-প্রশ্নে পুরো ইউরোপকে তার পাশে পেতে, তেমনি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে আরেক ধাপ ঘায়েল করারই অবলম্বন হয়ে উঠতে যাচ্ছে এবারের জি-৭ সম্মেলন।
গতকাল রোববার থেকে জার্মানির আল্পস পর্বতমালায় শোভিত ভ্যাবারিয়ায় শুরু হয়েছে এবারের জি-৭ সম্মেলন। গতকালই সম্মেলনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি ও জাপানের সরকারপ্রধানরা জার্মানিতে গেছেন। গত বছরের সম্মেলনে এ জোট থেকে রাশিয়ার সদস্যপদ স্থগিত করা হয়।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন অনুপস্থিত থাকলেও এ সম্মেলনে উপস্থিত নেতাদের মনোযোগের কেন্দ্রে তিনিই থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুতিন সচেতনভাবে পূর্ব ইউক্রেনের ওপর সামরিক চাপ বাড়াচ্ছেন, পশ্চিমা ধনী দেশগুলোর এমন ধারণা থেকে তৈরি উদ্বেগই এ মনোযোগের কারণ বলে জানা গেছে।
এদিকে গতকালই জার্মানি পেঁৗছেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তিনি ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রতি রাশিয়ার বিরুদ্ধে চলমান নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানোর আহ্বান জানাবেন। তবে ইউক্রেনের সেনাদের মারণাস্ত্র সরবরাহের ইচ্ছা নেই ওবামার। ইউরোপীয় নেতাদের নেতৃত্বে থাকা জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলও ইউক্রেনে সহিংসতা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় দেশটিতে সমরাস্ত্র সরবরাহের বিরোধী। এ নিয়ে গতকালই ওবামা-মেরকেল বৈঠক হওয়ার কথা। এবার রাশিয়ার ওপর চলমান নিষেধাজ্ঞার এ সময়ে ২৮ জাতির ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো দেশ যাতে রাশিয়াকে সমর্থন না দেয়, সে লক্ষ্যে এবার যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও ব্রিটেন ওইসব দেশের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে আগ্রহী।
তা ছাড়া ইউক্রেন সংকট শুরুর পর থেকে রাশিয়া হস্তক্ষেপ করতে পারে_ এ আশঙ্কায় পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোতে সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধি করে আসছে পশ্চিমা দেশগুলো। অন্যদিকে ইউরোপীয় দেশগুলো উদ্বেগ হ্রাসে জি-৭ সম্মেলন শুরুর আগের দিন শনিবার পুতিন বেশ জোরের সঙ্গেই জানিয়েছেন, তার দেশ কখনোই যুদ্ধে আগ্রহী নয়, তাই কোনো দেশের জন্য হুমকিও নয়।
একসময় ধনী দেশগুলোর এই গোষ্ঠীটিতে রাশিয়াও অন্তর্ভুক্ত ছিল, তখন এটি জি-৮ নামে পরিচিত ছিল। গত বছর রাশিয়া ক্রিমিয়াকে তার দেশে অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়ার পর গোষ্ঠীটি থেকে রাশিয়াকে বাদ দেওয়া হয়। পরে রাশিয়ার ওপর বেশ কয়েক দফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ। তবে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইউক্রেন সংকটের এখনও কোনো সুরাহা হয়নি; বরং পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে রাশিয়ার দূরত্ব শুধু বেড়েছে।
এবারের সম্মেলনে ইউক্রেন সংকট প্রাধান্য পেলেও আলোচ্যসূচিতে গ্রিসের ঋণ সংকট ও বৈশ্বিক জলবায়ু উষ্ণতা হ্রাসের মতো বিষয়গুলোও থাকবে।
জি-৭ সম্মেলনের বিরোধী বিক্ষোভ :জি-৭ সম্মেলন পুঁজিবাদী ও করপোরেটের স্বার্থরক্ষা করছে, এমন অভিযোগে সম্মেলন উপলক্ষে এর বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ সমাবেশ করে অনেক প্রতিবাদী গোষ্ঠী। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বেধে যায়। আহত হয় অনেকেই। শনিবারের সম্মেলনবিরোধী বিক্ষোভে যোগ দেয় কয়েক হাজার প্রতিবাদী মানুষ। তারা অভিযোগ তোলে, জি-৭ শুধু ব্যাংক আর পুঁজিবাদীদের স্বার্থই সংরক্ষণ করছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউরোপকে পাশে চাইবেন ওবামা

আপডেট টাইম : ০৬:২০:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুন ২০১৫

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী সাত দেশের নেতাদের জি-৭ সম্মেলনে এবার ইউক্রেন সংকটই প্রাধান্য পাবে। পূর্ব ইউক্রেনে চলমান সংঘর্ষ থামানোর লক্ষ্যে রাশিয়ার ওপর কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে চেষ্টা করবেন সাত দেশের নেতারা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যেমন উঠেপড়ে লেগেছেন ইউক্রেন-প্রশ্নে পুরো ইউরোপকে তার পাশে পেতে, তেমনি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে আরেক ধাপ ঘায়েল করারই অবলম্বন হয়ে উঠতে যাচ্ছে এবারের জি-৭ সম্মেলন।
গতকাল রোববার থেকে জার্মানির আল্পস পর্বতমালায় শোভিত ভ্যাবারিয়ায় শুরু হয়েছে এবারের জি-৭ সম্মেলন। গতকালই সম্মেলনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি ও জাপানের সরকারপ্রধানরা জার্মানিতে গেছেন। গত বছরের সম্মেলনে এ জোট থেকে রাশিয়ার সদস্যপদ স্থগিত করা হয়।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন অনুপস্থিত থাকলেও এ সম্মেলনে উপস্থিত নেতাদের মনোযোগের কেন্দ্রে তিনিই থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুতিন সচেতনভাবে পূর্ব ইউক্রেনের ওপর সামরিক চাপ বাড়াচ্ছেন, পশ্চিমা ধনী দেশগুলোর এমন ধারণা থেকে তৈরি উদ্বেগই এ মনোযোগের কারণ বলে জানা গেছে।
এদিকে গতকালই জার্মানি পেঁৗছেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তিনি ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রতি রাশিয়ার বিরুদ্ধে চলমান নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানোর আহ্বান জানাবেন। তবে ইউক্রেনের সেনাদের মারণাস্ত্র সরবরাহের ইচ্ছা নেই ওবামার। ইউরোপীয় নেতাদের নেতৃত্বে থাকা জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলও ইউক্রেনে সহিংসতা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় দেশটিতে সমরাস্ত্র সরবরাহের বিরোধী। এ নিয়ে গতকালই ওবামা-মেরকেল বৈঠক হওয়ার কথা। এবার রাশিয়ার ওপর চলমান নিষেধাজ্ঞার এ সময়ে ২৮ জাতির ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো দেশ যাতে রাশিয়াকে সমর্থন না দেয়, সে লক্ষ্যে এবার যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও ব্রিটেন ওইসব দেশের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে আগ্রহী।
তা ছাড়া ইউক্রেন সংকট শুরুর পর থেকে রাশিয়া হস্তক্ষেপ করতে পারে_ এ আশঙ্কায় পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোতে সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধি করে আসছে পশ্চিমা দেশগুলো। অন্যদিকে ইউরোপীয় দেশগুলো উদ্বেগ হ্রাসে জি-৭ সম্মেলন শুরুর আগের দিন শনিবার পুতিন বেশ জোরের সঙ্গেই জানিয়েছেন, তার দেশ কখনোই যুদ্ধে আগ্রহী নয়, তাই কোনো দেশের জন্য হুমকিও নয়।
একসময় ধনী দেশগুলোর এই গোষ্ঠীটিতে রাশিয়াও অন্তর্ভুক্ত ছিল, তখন এটি জি-৮ নামে পরিচিত ছিল। গত বছর রাশিয়া ক্রিমিয়াকে তার দেশে অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়ার পর গোষ্ঠীটি থেকে রাশিয়াকে বাদ দেওয়া হয়। পরে রাশিয়ার ওপর বেশ কয়েক দফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ। তবে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইউক্রেন সংকটের এখনও কোনো সুরাহা হয়নি; বরং পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে রাশিয়ার দূরত্ব শুধু বেড়েছে।
এবারের সম্মেলনে ইউক্রেন সংকট প্রাধান্য পেলেও আলোচ্যসূচিতে গ্রিসের ঋণ সংকট ও বৈশ্বিক জলবায়ু উষ্ণতা হ্রাসের মতো বিষয়গুলোও থাকবে।
জি-৭ সম্মেলনের বিরোধী বিক্ষোভ :জি-৭ সম্মেলন পুঁজিবাদী ও করপোরেটের স্বার্থরক্ষা করছে, এমন অভিযোগে সম্মেলন উপলক্ষে এর বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ সমাবেশ করে অনেক প্রতিবাদী গোষ্ঠী। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বেধে যায়। আহত হয় অনেকেই। শনিবারের সম্মেলনবিরোধী বিক্ষোভে যোগ দেয় কয়েক হাজার প্রতিবাদী মানুষ। তারা অভিযোগ তোলে, জি-৭ শুধু ব্যাংক আর পুঁজিবাদীদের স্বার্থই সংরক্ষণ করছে।