নীতিমালা লঙ্ঘন করে বিভিন্ন আইপি টিভি ও ইউটিউব চ্যানেলে সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে। এ বিষয়ে শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
আজ মঙ্গলবার (১৩ জুন) সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কিশোর উপন্যাস বইয়ের মোড়ক উন্মোচন এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আইপি টিভি ও ইউটিউব চ্যানেলে সংবাদ প্রচার করা যাবে না বলে নীতিমালা থাকলেও অনেকে এটি মানছেন না। এ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যম নীতিমালা অনুযায়ী নিবন্ধিত বা অনিবন্ধিত কোনো আইপি টিভি ও ইউটিউব চ্যানেল সংবাদ প্রচার করতে পারবে না। সংবাদ প্রচার করা নিয়মবহির্ভূত।
তিনি বলেন, এ কথা সত্যি কিছু আইপি টিভি, বেশিরভাগই অনিবন্ধিত এবং কিছু ইউটিউব চ্যানেল কৌশল অবলম্বন করে সংবাদ প্রচার করছে, এটি আমাদের নজরে এসেছে, পত্রপত্রিকায়ও আমরা দেখেছি। এটির ব্যাপারে খুব সহসা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বরিশাল ও খুলনা সিটি নির্বাচনের বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বরিশাল সিটিতে ৫০ শতাংশের বেশি এবং খুলনায় ৫০ শতাংশের কাছাকাছি ভোট কাস্ট হয়েছে। এ দুই সিটির নির্বাচন প্রমাণ করেছে বিএনপি ভোট বর্জন করলেও জনগণ ভোট বর্জন করে না। ভবিষ্যতেও যদি বিএনপি ভোট বর্জন করে জনগণ ব্যাপকভাবে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।
তিনি বলেন, গতকাল অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানুষ নির্বিঘ্নে উৎসব উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ভোট দিয়েছেন। বরিশালে ৫০ শতাংশের বেশি এবং খুলনায় ৫০ শতাংশের কাছাকাছি ভোট কাস্ট হয়েছে। এতে প্রমাণিত হয়েছে বিএনপি ভোট বর্জন করলেও জনগণ ভোট বর্জন করে না। আমার মনে হয় বিএনপির এ ভোট থেকে শিক্ষা নেওয়া প্রয়োজন।
হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি ভোট বর্জন করেছে, তাদের ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে নিষেধ করেছেন, তাদের দলীয় কর্মীদের ভোটে অংশগ্রহণে নিষেধ করেছেন। কিন্তু দেখা গেছে তাদের দলীয় নেতাকর্মীরা দুটি সিটি করপোরেশনের ভোটে প্রার্থী হয়েছেন এবং জনগণ তাদের ডাকে সাড়া দেননি। মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এতে এটাই প্রমাণিত হয়েছে বিএনপি ভোট বর্জন করলেও, জনগণ ভোট বর্জন করে না। ভবিষ্যতেও যদি বিএনপি ভোট বর্জন করে জনগণ ব্যাপকভাবে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।
সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে তথ্যমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন রাখা হয়- খুলনা ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। আগামীতে সিলেট ও রাজশাহীতে যে ভোট হবে তারা সেই ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। আপনি কি মনে করেন শান্তিপূর্ণ ভোট বর্জনের পিছনে কোনো ইন্ধন বা কারণ আছে?
জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ইসলামী আন্দোলন রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে-দলটি দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু যারা বিজয়ী হয়েছে তারা তাদের চেয়ে প্রায় তিনগুণের কাছাকাছি ভোট পেয়েছেন। এতে তারা বুঝতে পেরেছেন আগামী দুই নির্বাচনেও তাদের কোনো ভরসা নেই। সেজন্য পরাজয়ের গ্লানি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তারা এ ঘোষণা দিয়েছেন।
এ সময় বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীকে শারীরিকভাবে আঘাত করার বিষয়টির দিকে ইঙ্গিত করে হাছান মাহমুদ বলেন, যারা এটি করেছেন, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন তদন্ত করছে। উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি সংবাদ মাধ্যমে দেখেছি তার মুখে ঘুসি লাগলেও রক্ত বের হয়নি। তবে একজন প্রার্থীকে শারীরিকভাবে আঘাত করা কোনোভাবেই সমীচীন নয়। সবকিছু ছাপিয়ে অত্যন্ত সুন্দর, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেছেন- বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ভোট সম্ভব নয়। এ বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্নে করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের সমস্ত পত্রিকায় লিখেছে অত্যন্ত সুষ্ঠু, সুন্দর ভোট হয়েছে। সমস্ত টেলিভিশন রিপোর্ট করেছে অত্যন্ত সুন্দর, সুষ্ঠু ভোট হয়েছে। মির্জা ফখরুল গদবাধা কথা। তিনি একই টেপরেকর্ড থেকে রেব হতে পারছেন না, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তাকে আরেকটা টেপ রেকর্ড দিলে ভালো হয়।
তিনি বলেন, আমাদের দেশ ও আশপাশের দেশের নির্বাচনে, বিশেষ করে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অনেক সহিংসতা হয়, অনেক গণ্ডগোল হয়। সেই তুলনায় গতকালের নির্বাচন আমি মনে করি একেবারে একটি মডেল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।