রাজধানীর বঙ্গবাজারে ভয়াবহ আগুনে অন্তত পাঁচ হাজারের মতো দোকান পুড়ে যাওয়ার ৩ হাজার ৮৪৫ জন ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) তদন্ত কমিটি।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ডিএসসিসির মুখপাত্র আবু নাছের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, কমিটির সভাপতি ও অঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মেরীনা নাজনীন ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের কাছে বিকেল ৫টায় তদন্ত চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।
এ সময় সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, তদন্ত কমিটির সদস্যদের মধ্যে প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক, প্রধান সমাজকল্যাণ ও বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা আকন্দ মোহাম্মদ ফয়সাল উদ্দীন, রমনা রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ মামুনুল হক এবং সংরক্ষিত আসন-৫ এর কাউন্সিলর রোকসানা ইসলাম চামেলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আবু নাছের বলেন, বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ৩ হাজার ৮৪৫ জন ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
অগ্নিকান্ডের কারণ:
গত ০৫ এপ্রিল ২০২৩ বুধবার দুপুর ০২.৩০ ঘটিকায় কমিটির সদস্যগণ কর্তৃক অগ্নিকান্ডের স্থান সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়। পরিদর্শনকালে ঘটনাস্থলে ক্ষতিগ্রস্ত মার্কেট সমিতির নেতৃবৃন্দ, সাধারণ ব্যবসায়ী, দারোয়ান, নাইটগার্ড, ইলেকট্রিশিয়ান, সমিতির পিয়নসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত মার্কেটের ভৌত অবকাঠামো ও অগ্নিকান্ডের কারণ উদঘাটনের বিষয়ে কথা হয়।
সুপারিশসমূহ:
(১) ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন কোন এলাকাতে কাঠের/ টিনের মার্কেট থাকা সমীচীন নয়। যদি থেকে থাকে তা দ্রুত কংক্রিট বা পাকা করার ব্যবস্থা করতে হবে।
(২) ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন এলাকায় অবস্থিত মার্কেটসমূহে পর্যাপ্ত ফায়ার এস্টিংগুইশার সহ অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা রাখার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এগুলো ব্যবহারের জন্য কর্মরত কর্মীদের প্রশিক্ষণপ্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
(৩) নিয়মিত উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পরিদর্শন করে অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা সচল আছে কিনা যাচাই করে সনদ প্রদান করবে। সেই সনদ দৃশ্যমান স্থানে ঝুলিয়ে রাখতে হবে।
(৪) মার্কেটের আন্ডারগ্রাউন্ডে ওয়াটার রিজার্ভার থাকতে হবে এবং এটা থেকে পাইপের মাধ্যমে যুক্ত করে মার্কেটের চারটি স্থানে ওয়াটার হাইড্রেন্ট এর ব্যবস্থা রাখতে হবে।
(৫) মার্কেটগুলোর ভিতরের চলাচলের গলি বা রাস্তাগুলো পর্যাপ্ত জায়গা রেখে করা দরকার।
(৬) মার্কেটগুলোতে ক্সবদ্যুতিক সংযোগ, ভোল্ট ক্যাপাসিটি ও ব্যবহারের মধ্যে সামঞ্জস্য সঠিক বা পর্যাপ্ত রয়েছে কি-না তা সর্বদা পরীক্ষা করার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
(৭) খাবারের দোকান, রেস্টুরেন্ট, মসজিদ, থাকার স্থান এগুলো মার্কেটের বাহিরে বা এক পাশে থাকা সমীচীন।
(৮) মার্কেটগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা কর্মী, বিদ্যুৎ কর্মী, সচেতনতা ও দায়িত্বশীল ব্যবস্থাপনা থাকা প্রয়োজন।
(৯) বৈদ্যুতিক সংযোগের জন্য মানসম্মত তার ব্যবহার করতে হবে।
(১০) সিটি কর্পোরেশন অধিভূক্ত সকল জলাধার সংরক্ষণ করতে হবে।