ঢাকা ০৬:৩৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বন্দরে জাহাজ প্রবেশে বাধা রাশিয়ায় বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতকে তলব

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:০৯:২৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • ৯১ বার
হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজ মঙ্গলবার মস্কোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসানকে তলব করেছে। বাংলাদেশ সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা ৬৯টি রুশ জাহাজকে বাংলাদেশ তার বন্দরে ভিড়তে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়া বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে। রাশিয়ার বার্তা সংস্থা তাস আজ এ তথ্য জানায়।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার জানায়, ‘বাংলাদেশি বন্দরে রাশিয়ার জাহাজ ভিড়া নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের পরে মস্কোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসানকে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছে।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘বাংলাদেশের জন্য কার্গো বহনকারী রাশিয়ান জাহাজকে বাংলাদেশের বন্দরে ভিড়া নিষিদ্ধ করার বিষয়ে তার দেশের কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে প্রতিবেদনের প্রতি আমরা কূটনৈতিক মিশনপ্রধানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।’

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বাংলাদেশের এই সিদ্ধান্ত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ঐতিহ্যগতভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ চরিত্রের বিপরীত। এটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে রাশিয়ার সহযোগিতার সম্ভাবনার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরে ‘উরসা মেজর’ নামে একটি জাহাজ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালামাল নিয়ে বাংলাদেশে ভিড়ার কথা ছিল। কিন্তু তার প্রাক্কালে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বাংলাদেশ সরকারকে জানায়, জাহাজটি আসলে তাদের নিষেধাজ্ঞায় থাকা জাহাজ ‘স্পার্টা-৩’। ভিন্ন নামে ওই জাহাজটি নিবন্ধন নিয়েছে।

অন্যদিকে রাশিয়া দূতাবাস সরকারকে অনুরোধ জানায়, ওই জাহাজটিকে ভিড়ার অনুমতি দিতে। রাশিয়ার চাপ সত্বেও বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে টানাপড়েন এড়াতে ওই জাহাজ ভিড়তে দেয়নি। একই সঙ্গে নিষেধাজ্ঞায় থাকা সব জাহাজের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ একই ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়।

‘উরসা মেজর’ বাংলাদেশে ভিড়তে না পেরে ভারতের হলদিয়া বন্দরে রূপপুরের মালামাল খালাস করতে চেয়েছিল। সেখানেও ভিড়তে না পেরে চীনের একটি বন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এরপর জাহাজটির অবস্থান আর জানা যায়নি।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো ইঙ্গিত দিয়েছিল, বিকল্প ব্যবস্থায় রূপপুরের সরঞ্জাম পাঠানো হতে পারে। এ নিয়ে কূটনৈতিক মহলে আলোচনাও হচ্ছিল। পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞায় থাকা ৬৯টি জাহাজের বিষয়ে বাংলাদেশ কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ওই জাহাজগুলো দিয়ে পণ্য আমদানিতে সমস্যা হয়। রাশিয়ার কিছু জাহাজ ভিড়তে না পেরে বঙ্গোপসাগরে বেশ কিছু দিন ধরে ভাসছে এমন খবরও আলোচনায় আসে।

এরই মধ্যে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ভারতের হলদিয়া বন্দর থেকে রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালামাল নিয়ে আসা বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এম ভি সেঁজুতি গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোংলা বন্দরে ভিড়ে। স্থানীয় শিপিং এজেন্ট জানান, রাশিয়া থেকে সরাসরি নয়, ভারতে ট্রানজিটের মাধ্যমে ওই মালামাল বাংলাদেশে আসা হয়েছে।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পরোক্ষ নিষেধাজ্ঞার হুমকিতে বাংলাদেশ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

বন্দরে জাহাজ প্রবেশে বাধা রাশিয়ায় বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতকে তলব

আপডেট টাইম : ১২:০৯:২৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজ মঙ্গলবার মস্কোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসানকে তলব করেছে। বাংলাদেশ সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা ৬৯টি রুশ জাহাজকে বাংলাদেশ তার বন্দরে ভিড়তে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়া বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে। রাশিয়ার বার্তা সংস্থা তাস আজ এ তথ্য জানায়।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার জানায়, ‘বাংলাদেশি বন্দরে রাশিয়ার জাহাজ ভিড়া নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের পরে মস্কোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসানকে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছে।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘বাংলাদেশের জন্য কার্গো বহনকারী রাশিয়ান জাহাজকে বাংলাদেশের বন্দরে ভিড়া নিষিদ্ধ করার বিষয়ে তার দেশের কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে প্রতিবেদনের প্রতি আমরা কূটনৈতিক মিশনপ্রধানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।’

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বাংলাদেশের এই সিদ্ধান্ত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ঐতিহ্যগতভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ চরিত্রের বিপরীত। এটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে রাশিয়ার সহযোগিতার সম্ভাবনার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরে ‘উরসা মেজর’ নামে একটি জাহাজ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালামাল নিয়ে বাংলাদেশে ভিড়ার কথা ছিল। কিন্তু তার প্রাক্কালে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বাংলাদেশ সরকারকে জানায়, জাহাজটি আসলে তাদের নিষেধাজ্ঞায় থাকা জাহাজ ‘স্পার্টা-৩’। ভিন্ন নামে ওই জাহাজটি নিবন্ধন নিয়েছে।

অন্যদিকে রাশিয়া দূতাবাস সরকারকে অনুরোধ জানায়, ওই জাহাজটিকে ভিড়ার অনুমতি দিতে। রাশিয়ার চাপ সত্বেও বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে টানাপড়েন এড়াতে ওই জাহাজ ভিড়তে দেয়নি। একই সঙ্গে নিষেধাজ্ঞায় থাকা সব জাহাজের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ একই ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়।

‘উরসা মেজর’ বাংলাদেশে ভিড়তে না পেরে ভারতের হলদিয়া বন্দরে রূপপুরের মালামাল খালাস করতে চেয়েছিল। সেখানেও ভিড়তে না পেরে চীনের একটি বন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এরপর জাহাজটির অবস্থান আর জানা যায়নি।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো ইঙ্গিত দিয়েছিল, বিকল্প ব্যবস্থায় রূপপুরের সরঞ্জাম পাঠানো হতে পারে। এ নিয়ে কূটনৈতিক মহলে আলোচনাও হচ্ছিল। পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞায় থাকা ৬৯টি জাহাজের বিষয়ে বাংলাদেশ কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ওই জাহাজগুলো দিয়ে পণ্য আমদানিতে সমস্যা হয়। রাশিয়ার কিছু জাহাজ ভিড়তে না পেরে বঙ্গোপসাগরে বেশ কিছু দিন ধরে ভাসছে এমন খবরও আলোচনায় আসে।

এরই মধ্যে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ভারতের হলদিয়া বন্দর থেকে রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালামাল নিয়ে আসা বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এম ভি সেঁজুতি গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোংলা বন্দরে ভিড়ে। স্থানীয় শিপিং এজেন্ট জানান, রাশিয়া থেকে সরাসরি নয়, ভারতে ট্রানজিটের মাধ্যমে ওই মালামাল বাংলাদেশে আসা হয়েছে।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পরোক্ষ নিষেধাজ্ঞার হুমকিতে বাংলাদেশ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।