ড. গোলসান আরা বেগমঃ ড. গোলসান আরা বেগম ১৯৬০ সালে ১ মে স্বল্প মারিয়া গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। সেই গ্রামটির অবস্থান কিশোরগজ্ঞ জেলার সদর থানায় মারিয়া ইউনিয়নে।তিনি মোঃ ইমাম হোসেন ও আমেনা বেগম এর দ্বিতীয় সন্তান।
শিক্ষাঃ-
সেই গ্রামের স্বল্প মারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার শিক্ষার হাতে খড়ি।ছোটবেলা থেকেই খুব মেধাবী ছিলেন।টেলেন্টপুল বৃত্তি পেয়ে ঐ স্কুল থেকে ৫ম শ্রেণির শিক্ষা শেষ করেন। গ্রামের আলো বাতাসে বেড়ে ওঠে শৈশব। তারপর ভর্তি হন কিশোগঞ্জ সূরর্যভালা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। গ্রামের বাড়ি থেকে আট মাইল দুরে শহরের স্কুলে যাওয়া আসা করতেন পায়ে হেঁটে গ্রামের আলপথ বেয়ে।
ঐ স্কুলে ৮ম শ্রেনিতে টেলেন্টপুল বৃত্তি পেয়ে ৮ টি লেটার সহ এসএসসি শিক্ষা শেষ করেন। ঢাকার সরকারি ইডেন মহিলা কলেজ থেকে ২য় বিভাগে এইচএসসিতে উর্ত্তীন হন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়ন বিজ্ঞানে বিএসসি১৯৮০,এমএসসি ১০৮২ সনে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএড,এমএড ডিগ্রী অর্জন করেন। জীবনের শেষ অধ্যায়ে এসে ২০২০ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
কর্মক্ষেত্র ঃ — ্
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে ১৯৮৫ সালে টাঙ্গাইলেরর দেলদোয়ার উপজেলায় সৈয়দ মহব্বত আলী মহাবিদ্যালয়ে ( বর্তমানে সরকারি) প্রভাষক পদে বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করতে যোগদান করেন।দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর পর চাকুরী ছেড়ে ১৯৮৭ সালে চলে আসেন ঢাকায়।সে বছর ঐ প্রতিষ্টানটি এমপিও ভুক্ত হয়। দুই বছরে (ঢাবি) থেকে বিএড,এমএড পাশ করার পর জামালপুর উপজেলায় সরিষাবাড়িতে এমপিও ভুক্ত প্রতিষ্ঠান মাহমুদা সালাম মহিলা ডিগ্রী কলেজ ( বর্তমানে সরকারি) এ ১৯৯০ যোগদান করেন। সে চাকুরীও ১৯৯৩ এ ছেড়ে চলে যান ঢাকায়। সেই বছর বঙ্গবন্ধু একাডেমি কলেজ ( বর্তমানে সরকারি) এ যোগদান করেন নাম মাত্র পারিশ্রমিকে। এখান থেকে চলে গিয়ে ১০৯৮ সালে কিশোরগজ্ঞ জেলায় সদর থানায়, বিন্নাটি ইউনিয়নে, কালটিয়া গাঁয়ে, প্রতিষ্টাতা অধ্যক্ষের দাযিত্ব নিয়ে রহিম ছাত্তার আইডিয়েল কলেজ প্রতিষ্টা করেন।অজ পাড়া গাঁয়ের এমপিও ভুক্ত এই প্রতিষ্টানে ২২ বছর চাকুরি করার পর অবসরে যান ২০২০ সালে।
সামাজিক সম্পৃক্ততা ঃ–
তিনি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে জাসদ রাজনীতির সাথে সস্পৃক্ত ছিলেন। বড় ভাই ছাত্রলীগ নেতা ও মুক্তিযুদ্ধের স্থানীয় সংগঠক হওয়ায়, আওয়ামী মতাদর্শে আসক্ত হয়ে মুক্তিযোদ্ধা মহিলা কমান্ড কাউন্সিল,কেন্দ্রিয় কমিটিতে সংযুক্ত হন। অধ্যক্ষ আহাদ চৌধুরীর সময় কালে ঢাকা শহরের বহু জায়গায় রাজনৈতিক কর্ম সূচিতে অংশ গ্রহান করেন। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদ, জাতীয় আইন সহায়তা সংস্থা, দৈনিক শতাব্দিরকন্ঠ,পাবলিক লাইব্রেরি,কিশোরগঞ্জ ক্রিড়া সংস্থা, শিশু পরিবার, ডায়াবেটিস সমিতি, রেডক্রিসেন্ট,
প্রেস ক্লাব, জেগে ওঠো নরসুন্দা সাহিত্য পরিষদ, বাংলাদেশ কৃষকলীগ, বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামীলীগ, কিশোরগঞ্জ কারাগার পরিদর্শন টিম,ইত্যাদি সমাজ সেবা মূলক বিভিন্ন পর্যায়ে কিশোরগঞ্জ জেলা লেবেলে কাজ করেছেন। স্বউদ্যোগে প্রতিষ্টা করেছেন অধ্যাক্ষের দায়িত্ব নিয়ে রহিম ছাত্তার আডিয়াল কলেজ, নারীকন্ঠ(স্বেচ্ছা সেবী) সংগঠন, মোঃ ইমাম হোসেন পাঠাগার ও সংগ্রহশালা, (মেধা অন্নেষন) ছায়াবীথি ক্লার। ঢাকায় যে সমস্ত সামাজিক প্রগতিশীল সেবা মূলক কাজে সম্পৃক্ত আছেন — বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ, দি লায়ন্স ক্লাব অফ ঢাকা প্রতিতি, বাংলা একাডেমির সাধারন সদস্য, এলামনাই এসোসিয়েশন অফ রসায়ন বিভাগ, জাবি,ঢাকাস্থ কিশোরগজ্ঞ উত্তরা ক্লাব, নন্দিনী সাহিত্য সংগঠন,ঢাকাস্থ কিশোরগঞ্জ সমিতি,। লায়ন্স ক্লাবস অফ ইন্টারন্যাশালন,ডিষ্ট্রিকস ৩১৫/এ২ এর ক্যাবিনেট সদস্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সিনেট সদস্য,বাংলাদেশ কৃষকলীগ এর উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য,কেন্দ্রীয় কমিটি,বাংলাদেশ বেতারের নিবন্ধিত গীতিকার,বাংলাদেশ সরকারে সন্মাননা প্রাপ্ত জয়িতা সদস্য,কিশোরগঞ্জ মানবাধিকার ফোরাম এর সভাপতি,পাবলিক লাইব্রেরির,কিশোরগঞ্জ এর দাতা সদস্য ।ক্ষুদ্র জীবনে অজ পাড়া গাঁ থেকে ওঠে আসা একজন মানুষের জন্য এতোটুকুই যথেষ্ট।
সাহিত্য জীবনের প্রসার ঃ –
২০০০ সালে সাহিত্য জগতে পদার্পন করেন। জাতীয় দৈনিক,স্থানীয় দৈনিক, অনলাইন পেপারে সর্বদা কবিতা, প্রবন্ধ,গল্প প্রকাশ হচ্ছে।এই লেখকের ২০টি (কাব্য,প্রবন্ধ,গল্প) গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।তন্মধ্যে “হায় বঙ্গবন্ধু এ কি করলাম” বঙ্গবন্ধু বাঙালির প্রাণ, অমর কাব্যের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু, নারী কথা কও,নারী তুমি পারবেই,কুয়াশার ফিঙ্গার প্রিন্ট, আমারই কাব্যকন্ঠ, অরণ্যের ভেতরে, নিজস্বতার আগুন ইত্যাদি উল্লখ্যযোগ্য ও পাঠক সমাদৃত।
শিক্ষা ক্ষেত্রে অবদান ঃ–
বাইশ বছর শ্রম ঘাম ব্যয় করে গ্রামের ছেলে মেয়েদের মেরুমজ্জায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেয়ার জন্য নিবেদিত হয়ে রহিম ছাত্তার আইডিয়াল কলেজ প্রতিষ্টা করেন, অধ্যক্ষের দায়িত্বে থাকে। কিশোরগঞ্জ জেলায় সদর থানায়, বছির উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ও বৃন্দাগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সভাপতির দায়িত্ব পালন করে চেষ্টা করেছেন কচি শিশুর মুখে সূর্ষের হাসি ফোটাতে। বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক পরিষদ, অধ্যক্ষ পরিষদ, বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক পরষদ এর নেতৃস্থানীয় পদে থেকে শিক্ষকদের দুর্দশা লাগবে ও জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করেছেন। মেধা অন্বেষন ও বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজ গঠনের লক্ষ্যে ছায়াবীথি ক্লাব গঠন করেন। বাংলাদেশের শিক্ষাব্যস্থার ক্রুটি বিচ্যুতি, উজ্জল সম্ভাবনার কথা উল্লখ্য করে জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত তার গ্রস্থ্য সমুহ দিয়ে ২টি প্রবনগন্থ রচনা করেছেন,যা শিক্ষা বিষয়ক গবেষণা কাজে যুগান্তকারী ভুমিকা রাখবে।
বর্তমান অবস্থানঃ —
রহিম ছাত্তার আইডিয়েল কলেজের ম্যানেজিক কমিটির সভাপতি দায়িত্ব পালন করছেন। বিভিন্ন প্রগতিশীল, উন্নয়মুলক, মানব সেবা মূলক সংগঠনের সাথে যুক্ত থেকে সাহিত্য ও সমাজ সেবা মূলক কাজ করছেন। তিনি ঢাকার আগারগাও এ স্বামী সন্তানের সঙ্গে বসবাস করছেন। সাহিত্য র্চ্চচায় থাকেন নিমগ্ন।
সন্মননাঃ-
বাংলাদেশ স্কাউট ২০০২ সমাজ সেবক হিসেবে, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসন ২০১০ সালে লেখক হিসেব,,রাজেন্দ্র আশালতা ওয়েলফেয়ার ট্রস্ট ২০১০ লেখক ও সমাজ সেবক হিসেবে,শ্রেষ্ট জয়িতা জেলা পর্যায়ে ২০১৩ শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে,সুকার রায় সন্মাননা শিক্শা ক্ষেত্রে সফলতা, শেরে বাঙলা গোল্ড এ্যাওয়ার্ড ২০১৯ শিক্ষা ক্ষেত্রে অবদানের জন্য,ড. শহিদুল্লা সন্মাননা ২০১৯ মানব কল্যানে অবদানের জন্য,আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা সন্মাননা পদক ২০২১ কবি ও কলামিস্ট হিসেবে অবদানের জন্য।