ঢাকা ০৭:৪৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জঙ্গিদের বিরুদ্ধে নতুন যুদ্ধ ঘোষণা করলেন আরেক পুলিশ কর্মকর্তা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৪৫:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জুন ২০১৬
  • ৩৫৮ বার

চট্টগ্রামে পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে খুনের দুদিনের মাথায় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ‘নতুন যুদ্ধ’ ঘোষণা করলেন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) বোম্ব ডিস্পোজাল টিমের প্রধান ও অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. ছানোয়ার হোসেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তিনি দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়ে এ যুদ্ধের ঘোষণা দেন।

জঙ্গিদের বিরুদ্ধে পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তার ছিলেন খুবই তৎপর। আর সে কারণেই কি-না তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে জঙ্গিরা। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

ধারণা করা হচ্ছে, তার স্ত্রীকে হত্যা করে পুলিশের মনোবল ভেঙে দেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত জঙ্গিরা। তাই এ হত্যাকাণ্ড।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জাম খান কামালও সোমবার সচিবালয় এমন মন্তব্য করেন।

এডিসি ছানোয়ার হোসেনের স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো :

#‎জঙ্গি_নিয়ে_আমি_আর_কাজ_করবো_না‬
হ্যাঁ, আমি আর জঙ্গি-ফঙ্গিতে নাই। অনেকেই তো পুলিশের চাকরি করে, কিন্তু সবাই কি জঙ্গি নিয়ে কাজ করে? করে না। তাহলে এত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ আমি কেন করবো? আমিও অন্য কোনও বিভাগে চলে যাচ্ছি। কে চায় পেশাগত দায়িত্ব পালনের দায়ে পরিবারের সদস্যদের হারাতে? কেউ না, তাই আমিও না।

ঠিক এই রকম একটি সিদ্ধান্তই

দেখতে চেয়েছিল জঙ্গিরা। তাই শুনিয়ে দিলাম। তবে শুধু শোনানোর জন্য নয়, আমি আসলেই জঙ্গি নিয়ে আর কাজ করবো না। যেটা করবো সেটা হচ্ছে যুদ্ধ, যুদ্ধ করবো। আগে করতাম কাজ, এখন করবো যুদ্ধ।… কাজের পরিবেশ তো আর নেই, যুদ্ধের পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে গেছে। পরিবারের নিষ্পাপ সদস্যের ওপর আঘাত, যুদ্ধ না তো কি? তাই এখন জঙ্গি নিয়ে কাজ মানেই যুদ্ধ।

#‎একটু_বিশ্লেষণে_যাচ্ছি‬
পুলিশ আর অপরাধীর মধ্যে সাপে-নেউলে সম্পর্ক সব দেশেই আছে। দেশে দেশে কুখ্যাত মাফিয়াচক্রের সাথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বৈরিতা সবচেয়ে চরম। এই মাফিয়ারাও একে অপরকে বলে থাকে:
‪#‎Never_Ever_Touch_A_Cop‬
(কখনও পুলিশের গায়ে হাত দিও না)
পুলিশের গায়ে হাত দিলে কী বিপর্যয় হয়, আর পুলিশের আইনগত দায়িত্ব মেনে নিলে কী ক্ষতি হয়, তার তুলনামূলক হিসাব তাদের আছে। তাই সচরাচর কোনও দেশেই পুলিশের সাথে ব্যক্তিগতভাবে কেউ জড়ায় না। তারপরও কখনও কখনও তারা পুলিশের ওপর হামালা চালায়। কিন্তু পরিবারের কোনও ক্ষতি করে না। এটা তাদের ‪#‎থাম্ভ_রোল‬।
এদেশের জঙ্গিরা এখন সেই ‘থাম্ভ রোল’- এর অনেক নিচে নেমে গেছে। পুলিশসহ অন্যান্য সশস্ত্র বাহিনীর ওপর হামলা তো করছেই, বরং তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপরও হামলা শুরু করে দিয়েছে। তা না হলে আর জঙ্গি/জংলি বলা হয় কেন।
অথচ, বিভিন্ন সময় জঙ্গি পরিবারের অন্যান্য নিষ্ক্রিয় সদস্যরা শনাক্ত হলেও তাদের ইজ্জত করা হয়। তাদের পরিবারের পর্দানশীল নারী, ছোট ছোট বাচ্চা এবং বয়োবৃদ্ধদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা হয়।…. তাহলে ওরা কেন এমন করছে?
তাহলে ওরাই বা কারা?
প্রশ্নের জবাব খুব তাড়াতাড়ি আসছে…. ইনশাল্লাহ। দাত ভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে সে যে-ই হোক। শুধু সময়ের অপেক্ষা। সেই ‘৭১ থেকে আজ পর্যন্ত মানুষের নিরাপত্তা দিতে গিয়ে পুলিশের যতটুকু গেছে তা আর অন্য কোনও পেশায় যায়নি। এই ত্যাগটুকুই পুলিশের অনেক সীমাবদ্ধতা আর ভুল-ত্রুটিগুলোকে লেভেল করে দিচ্ছে। সামনে উদ্বৃত্ত কিছু রাখার জন্য কাজ হচ্ছে।
আশা করি জঙ্গিবাদ (আমি বলি উগ্রবাদ) সমূলে উৎপাটনে আমাদের নিষ্পাপ ‘ভাবী’র এই মূল্যবান রক্ত আমাদের কাজের গতি, ক্ষিপ্রতা এবং অনুপ্রেরণা বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। দেশের নিরাপত্তামূলক কাজের জন্য ভাবীকে হারালাম, ভাবী ‪#‎শহিদের_মর্যাদা‬ পাবেন।
তাই প্রতিশোধ নয়, উৎপাটন হোক আমাদের অঙ্গীকার। ঠাণ্ডা মাথায় কিভাবে যুদ্ধ করতে হয় তা শুধু পুলিশই জানে, তাই এখনই শুরু করার পালা।’

স্টাটাসের বিষয়ে ছানোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা চাই জনগণের সঙ্গে মিলে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে। দেশের মানুষ সবসময় সচেতন, তারা নিশ্চয় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ঘোষিত এই যুদ্ধে পুলিশের সঙ্গে থাকবে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জঙ্গিদের বিরুদ্ধে নতুন যুদ্ধ ঘোষণা করলেন আরেক পুলিশ কর্মকর্তা

আপডেট টাইম : ১১:৪৫:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জুন ২০১৬

চট্টগ্রামে পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে খুনের দুদিনের মাথায় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ‘নতুন যুদ্ধ’ ঘোষণা করলেন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) বোম্ব ডিস্পোজাল টিমের প্রধান ও অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. ছানোয়ার হোসেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তিনি দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়ে এ যুদ্ধের ঘোষণা দেন।

জঙ্গিদের বিরুদ্ধে পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তার ছিলেন খুবই তৎপর। আর সে কারণেই কি-না তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে জঙ্গিরা। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

ধারণা করা হচ্ছে, তার স্ত্রীকে হত্যা করে পুলিশের মনোবল ভেঙে দেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত জঙ্গিরা। তাই এ হত্যাকাণ্ড।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জাম খান কামালও সোমবার সচিবালয় এমন মন্তব্য করেন।

এডিসি ছানোয়ার হোসেনের স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো :

#‎জঙ্গি_নিয়ে_আমি_আর_কাজ_করবো_না‬
হ্যাঁ, আমি আর জঙ্গি-ফঙ্গিতে নাই। অনেকেই তো পুলিশের চাকরি করে, কিন্তু সবাই কি জঙ্গি নিয়ে কাজ করে? করে না। তাহলে এত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ আমি কেন করবো? আমিও অন্য কোনও বিভাগে চলে যাচ্ছি। কে চায় পেশাগত দায়িত্ব পালনের দায়ে পরিবারের সদস্যদের হারাতে? কেউ না, তাই আমিও না।

ঠিক এই রকম একটি সিদ্ধান্তই

দেখতে চেয়েছিল জঙ্গিরা। তাই শুনিয়ে দিলাম। তবে শুধু শোনানোর জন্য নয়, আমি আসলেই জঙ্গি নিয়ে আর কাজ করবো না। যেটা করবো সেটা হচ্ছে যুদ্ধ, যুদ্ধ করবো। আগে করতাম কাজ, এখন করবো যুদ্ধ।… কাজের পরিবেশ তো আর নেই, যুদ্ধের পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে গেছে। পরিবারের নিষ্পাপ সদস্যের ওপর আঘাত, যুদ্ধ না তো কি? তাই এখন জঙ্গি নিয়ে কাজ মানেই যুদ্ধ।

#‎একটু_বিশ্লেষণে_যাচ্ছি‬
পুলিশ আর অপরাধীর মধ্যে সাপে-নেউলে সম্পর্ক সব দেশেই আছে। দেশে দেশে কুখ্যাত মাফিয়াচক্রের সাথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বৈরিতা সবচেয়ে চরম। এই মাফিয়ারাও একে অপরকে বলে থাকে:
‪#‎Never_Ever_Touch_A_Cop‬
(কখনও পুলিশের গায়ে হাত দিও না)
পুলিশের গায়ে হাত দিলে কী বিপর্যয় হয়, আর পুলিশের আইনগত দায়িত্ব মেনে নিলে কী ক্ষতি হয়, তার তুলনামূলক হিসাব তাদের আছে। তাই সচরাচর কোনও দেশেই পুলিশের সাথে ব্যক্তিগতভাবে কেউ জড়ায় না। তারপরও কখনও কখনও তারা পুলিশের ওপর হামালা চালায়। কিন্তু পরিবারের কোনও ক্ষতি করে না। এটা তাদের ‪#‎থাম্ভ_রোল‬।
এদেশের জঙ্গিরা এখন সেই ‘থাম্ভ রোল’- এর অনেক নিচে নেমে গেছে। পুলিশসহ অন্যান্য সশস্ত্র বাহিনীর ওপর হামলা তো করছেই, বরং তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপরও হামলা শুরু করে দিয়েছে। তা না হলে আর জঙ্গি/জংলি বলা হয় কেন।
অথচ, বিভিন্ন সময় জঙ্গি পরিবারের অন্যান্য নিষ্ক্রিয় সদস্যরা শনাক্ত হলেও তাদের ইজ্জত করা হয়। তাদের পরিবারের পর্দানশীল নারী, ছোট ছোট বাচ্চা এবং বয়োবৃদ্ধদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা হয়।…. তাহলে ওরা কেন এমন করছে?
তাহলে ওরাই বা কারা?
প্রশ্নের জবাব খুব তাড়াতাড়ি আসছে…. ইনশাল্লাহ। দাত ভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে সে যে-ই হোক। শুধু সময়ের অপেক্ষা। সেই ‘৭১ থেকে আজ পর্যন্ত মানুষের নিরাপত্তা দিতে গিয়ে পুলিশের যতটুকু গেছে তা আর অন্য কোনও পেশায় যায়নি। এই ত্যাগটুকুই পুলিশের অনেক সীমাবদ্ধতা আর ভুল-ত্রুটিগুলোকে লেভেল করে দিচ্ছে। সামনে উদ্বৃত্ত কিছু রাখার জন্য কাজ হচ্ছে।
আশা করি জঙ্গিবাদ (আমি বলি উগ্রবাদ) সমূলে উৎপাটনে আমাদের নিষ্পাপ ‘ভাবী’র এই মূল্যবান রক্ত আমাদের কাজের গতি, ক্ষিপ্রতা এবং অনুপ্রেরণা বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। দেশের নিরাপত্তামূলক কাজের জন্য ভাবীকে হারালাম, ভাবী ‪#‎শহিদের_মর্যাদা‬ পাবেন।
তাই প্রতিশোধ নয়, উৎপাটন হোক আমাদের অঙ্গীকার। ঠাণ্ডা মাথায় কিভাবে যুদ্ধ করতে হয় তা শুধু পুলিশই জানে, তাই এখনই শুরু করার পালা।’

স্টাটাসের বিষয়ে ছানোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা চাই জনগণের সঙ্গে মিলে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে। দেশের মানুষ সবসময় সচেতন, তারা নিশ্চয় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ঘোষিত এই যুদ্ধে পুলিশের সঙ্গে থাকবে।’