হাওর বার্তা ডেস্কঃ শুরু হয়েছে শীতের মৌসুম। আর এই শীতে প্রকৃতি ভিন্ন এক সাজে ধরা আমাদের মাঝে। ভোরবেলা শীতের বুড়ি কুয়াশার চাদরে ঢেকে দেয় মাঠের পর মাঠ। পাতায় পাতায় কুয়াশা আর শিশির বিন্দু সোনালী রোদে চকচক হয়ে ওঠে।
শীতের বেলায় রঙিন থাকে প্রকৃতি। আর এই রঙের উৎসবে বাড়তি আলো যোগ করে শীতকালীন বিভিন্ন রঙিন ফুল। ফুল ভালোবাসেনা এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন।
শখের বসে নিজের বাড়ির আঙিনা রাঙিয়ে তোলেন অনেকেই। বিভিন্ন অফিস-আদালত প্রাঙ্গনও সাজে বিভিন্ন ফুলে। প্রকৃতিতে এক ভিন্নমাত্রা যোগ করে। রূপ-বৈচিত্র্যে আর কোনো মৌসুমেই এরা এতটা মুগ্ধ করতে পারে না ফুলগুলো।
বিকেল বা সন্ধ্যায় চায়ের কাপের আড্ডায় প্রিয়জনের সাথে বেশ ভালোই কেটে যাবে বারান্দা বাগানে। অবসরে বিকেলে চায়ের কাপ হাতে অনেকেই রবীন্দ্রনাথ-শরৎচন্দ্রও পড়ে থাকেন। সময় কাটাতে এই ফুল গাছের যত্ন নিতে পারেন আপনিও।
শীতের মৌসুমে ফুল সবচেয়ে বেশি ফোটে। আজকাল দেশি বিভিন্ন ফুলের পাশাপাশি বিদেশি অনেক ফুলও হরহামেশা দেখা যায় বিভিন্ন জায়গায়। দেশে বাণিজ্যিক ভাবে সেসব ফুলের চাষও হচ্ছে। সেসব ফুলের সৌন্দর্যে সবাই মুগ্ধ হয়ে থাকে।
দেশি-বিদেশি এই ফুলগুলোর ভিতর গাঁদা ফুলেরই অনেকগুলো জাত রয়েছে। বড় বড় ইনকা গাঁদা, ছোট ছোট চায়না গাঁদা, দেশি গাঁদা, রক্ত গাঁদা, হলুদে লাল মেশানো জাম্বো গাঁদা, লম্বা গাছে দেশের জাত রাজ গাঁদা ইত্যাদি নানা জাতের গাঁদা ফুলের চারা এখন পাওয়া যাচ্ছে আশপাশের প্রায় সব নার্সারিতেই।
এরপর অন্যান্য ফুলের মধ্যে রয়েছে চন্দ্রমল্লিকা, ডালিয়া, অ্যাস্টার, ডেইজি, ডায়ান্থাস, ফ্লক্স, ভারবেনা, কারনেশান, পপি, সূর্যমুখী, পর্তুলিকা, ক্যালেন্ডুলা, হলিহক, মর্নিং গ্লোরি, সুইট পি, অ্যাজালিয়া, জারবেরা, গ্ল্যাডিওলাস, কসমস, সিলভিয়া, এন্টিরিনাম, ন্যাস্টারশিয়াম, প্যানজি, অ্যাস্টার, ডেইজি, ডায়ান্থাস, ফ্লক্স, ভারবেনা, কারনেশান প্রভৃতি।
ফুলের রানি গোলাপও রয়েছে অনেক জায়গা জুড়ে। ফুলের গাছ গুলোর পাশাপাশি সঙ্গী হিসেবে পেতে পারেন। টবে গাঁদা, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, জারবেরা, কারনেশান, ক্যালেন্ডুলা, অ্যাস্টার ইত্যাদি জন্মে। তবে সরাসরি মাটিতে বা বাগানে সব ফুলের চারাগাছই লাগানো যেতে পারে।
যেখানে পাবেন:
আমাদের দেশের প্রতিটি জেলায় নার্সারি থেকে বিভিন্ন ফুলের চারা সংগ্রহ করতে পারবেন। যারা ঢাকার ভিতরে থাকেন তারা রাজধানীর আগারগাঁও, বনানী, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, মোহাম্মদপুর, নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন স্থানের সার্সারিতে কিনতে পারবেন সবধরণের ফুলের চারা এবং বীজ। কেউ যদি চান তাহলে টবসহ বিভিন্ন ফুলের চারাও কিনতে পারবেন।
গাছের যত্ন:
অক্টোবর-নভেম্বর মাস শীতকালীন ফুলের বীজ বপনের উপযুক্ত সময়। টবে ফুলগাছ রোপণ করতে চাইলে সাধারণত ৮ থেকে ১২ ইঞ্চি মাপের টবই যথেষ্ট। টবের মাটির সঙ্গে জৈব সার বা কম্পোস্ট সার পর্যাপ্ত পরিমাণে মেশাতে হবে।
সাবধানতার সঙ্গে চারা রোপণ করে ঝাঁঝরি দিয়ে উপর থেকে বৃষ্টির মতো পানি ছিটিয়ে দিতে হবে। যাতে গাছ এবং পাতা উভয়ই ভেজে। প্রয়োজনে হেলে পড়া গাছকে লাঠি পুঁতে তার সঙ্গে বেঁধে দাঁড় করিয়ে দিতে হবে। পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রয়োজনে কৃষিবিদের পরামর্শ নেয়া যেতে পারে।
এখনই সময়:
রকমভেদে গাছগুলো মার্চ মাস পর্যন্ত ফুল দেয়। ফুল চাষ করে অনেকেই স্বচ্ছলতার মুখ দেখছে। আজকাল বিদেশেও ফুল রপ্তানি হচ্ছে। যা থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়। তাই এখনই উপযুক্ত সময় ফুলচাষী বা ফুলপ্রেমীদের তৎপর হয়ে ওঠার।