হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রজনন উপলক্ষে আজ মধ্যরাত থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে। মা ইলিশ রক্ষায় সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোয় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করবে প্রশাসন। অভিযান ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় মৎস্য দপ্তর, পুলিশ, র্যাব, কোস্টগার্ড, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী সমন্বিত উদ্যোগে অভিযান পরিচালনা করবে।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ইলিশের ছয়টি অভয়াশ্রম হলো চাঁদপুর, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, ভোলা, শরীয়তপুর ও পটুয়াখালী জেলা। অভয়াশ্রম এলাকা হচ্ছে চাঁদপুর জেলার ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুর জেলার চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত মেঘনা নদীর নিম্ন অববাহিকার ১০০ কিলোমিটার এলাকা; ভোলা জেলার মদনপুর থেকে শুরু করে চর ইলিশা, চর পিয়াল হয়ে মেঘনার শাহবাজপুর শাখা নদীর ৯০ কিলোমিটার এলাকা; ভোলা জেলার ভেদুরিয়া থেকে পটুয়াখালী জেলার চর রুস্তম ও তেঁতুলিয়া নদীর প্রায় ১০০ কিলোমিটার এলাকা; শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ উপজেলা ও চাঁদপুর জেলার মতলব উপজেলার মধ্যে অবস্থিত পদ্মা নদীর ২০ কিলোমিটার এলাকা; বরিশাল জেলার হিজলা, মেহেন্দীগঞ্জ, বরিশাল সদর উপজেলার কালাবদর, গজারিয়া ও মেঘনা নদীর প্রায় ৮২ কিলোমিটার এলাকা।
এ সময় অভয়াশ্রমগুলোয় ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা দণ্ডনীয় অপরাধ। আইন অম্যান্যকারীকে এক বছর থেকে সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হতে পারে।
এদিকে ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ থাকার এ সময় মা ইলিশ আহরণে বিরত থাকা চাঁদপুরের ৪৪ হাজার জেলে পরিবারের জন্য খাদ্যসহায়তা বাবদ চাল বরাদ্দ দেয়া হবে। এ কর্মসূচির আওতায় প্রতিটি জেলে পরিবার ২০ কেজি করে চাল পাবেন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকারের মানবিক খাদ্যসহায়তা কর্মসূচির আওতায় চাঁদপুর জেলায় এ খাদ্যসহায়তা দেয়া হবে। এরই মধ্যে প্রশাসন থেকে জেলেদের নৌকা, জাল নদী থেকে তুলে নেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এবারের মৌসুমের শুরু থেকেই চাঁদপুরের নদ-নদীতে ইলিশ সংকট ছিল প্রকট। সংকট নিয়েই জুলাই থেকে ইলিশ মৌসুম শুরু হয়। মৌসুমের শেষ পর্যায়ে হলেও চাঁদপুরের নদ-নদীতে বেশি মাছ পাওয়া যাবে বলে আশার কথা শুনিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা, কিন্তু তা হয়নি।
এর আগে দেশের ইলিশ সম্পদ উন্নয়নে জাটকা সংরক্ষণের জন্য গত ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস ৬ জেলার ৫টি অভয়াশ্রমে ইলিশসহ সবধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল।
মৎস্য বিভাগ সূত্র জানায়, ইলিশ সারা বছরই কম বেশি ডিম ছাড়ে। তবে আশ্বিন মাসের অমাবস্যা ও ভরা পূর্ণিমায় ইলিশ প্রচুর ডিম ছাড়ে। প্রজননের এই প্রধান সময় ইলিশ গভীর সাগর থেকে মোহনা ও নদীর মিঠা পানিতে ছুটে আসে।