ঈদের ছুটির আগেই নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন: ডিএমপি কমিশনার

ঈদের ছুটিতে বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদেরকে তাদের নিজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখে ছুটিতে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।

পাশাপাশি চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও টেন্ডারবাজি প্রতিরোধে জিরো টলারেন্সের কথাও বলেন তিনি।

সোমবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্তৃক আসন্ন পবিত্র মাহে রমজান ও পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা মহানগরীর আইন-শৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্তে এক সভায় এসব কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।

সম্মানিত নগরবাসী যেন পবিত্র মাহে রমজান ও পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর নির্বিঘ্নে উদযাপন করতে পারে সে উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা তুলে ধরেন।

রমজান ও ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন মার্কেট ও শপিং মল নিরাপত্তা বিষয়ে বলেন, গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতারা যেন নিশ্চিন্তে কেনাকাটা করতে পারে সে জন্য ডিএমপির পক্ষ থেকে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকধারী পুলিশ বিভিন্ন শপিং মলে মোতায়েন করা হবে এবং থাকবে স্পেশাল পুলিশি পেট্রোল ব্যবস্থা।

ঈদের আগেই রাজধানীর সকল মার্কেট ও শপিং মলে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট দোকান মালিক কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, বিশেষ করে স্বর্ণের দোকানে দ্রুত সিসি ক্যামেরা বসানোর জন্য অনুরোধ করেন তিনি। রমজান ও ঈদে কেনাকাটার সময় মার্কেটে জালনোট পরীক্ষা করার যন্ত্র বসানো হবে, যেন জালনোট মার্কেটে ছড়িয়ে না পড়ে।

তিনি যানবাহন ও ট্রাফিক ব্যবস্থা সম্পর্কে বলেন, বাস, লঞ্চ ও রেলওয়ে টার্মিনালে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষে পুলিশের পাশাপাশি কমিউনিটি ট্রাফিক পুলিশি ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। টিকেট কালোবাজারি প্রতিরোধ করতে বিভিন্ন টার্মিনালের পুলিশ ফাঁড়িগুলোতে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হবে। যত্রতত্র স্থানে গাড়ি থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করা যাবে না।

ফুটপাতে, রাস্তার পাশে জনসাধারণের চলাচলে বিঘ্ন হয় এমনভাবে গাড়ি পার্কিং করা যাবে না। ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে যেকোনো দুর্ঘটনা এড়াতে টার্মিনাল থেকে বাস ছাড়ার পূর্বে চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করা হবে। হেলপার দিয়ে যেন গাড়ি চালাতে না পারে সে জন্য প্রত্যেক টার্মিনালে ডিএমপির পুলিশ কর্তৃক ড্রাইভিং লাইসেন্স চেকিং ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি জানান, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে নৌ-পুলিশ ও ডিএমপির উদ্যোগে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যৌথ নৌ-টহল ব্যবস্থা থাকবে, পাশাপাশি সার্বিক মনিটরিং করার জন্য একটি পুলিশ কন্ট্রোল রুম থাকবে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে লঞ্চ ছাড়তে হবে এবং নৌকা দিয়ে যেন কোনো যাত্রী লঞ্চে না উঠতে পারে সে বিষয়েও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বিশেষ নজর রাখবে।

রমজান ও ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ঢাকা মহানগরীর ফুটপাত থেকে অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করা হবে। অতিরিক্ত যাত্রী যেন বহন না করতে পারে এবং ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন যেন না চলাচল করতে পারে সেক্ষেত্রেও থাকবে ডিএমপির বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

আসন্ন পবিত্র রমজান মাস ও ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষে ক্রয়-বিক্রয়, ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থের লেন-দেন ও স্থানান্তর বৃদ্ধি পাবে। কোনো ব্যক্তি, সংস্থা, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান অর্থ স্থানান্তরের জন্য পুলিশের সহায়তা প্রয়োজন মনে করলে সংশ্লিষ্ট থানায় যোগাযোগ করবেন।

থানা অপারগ হলে পুলিশ এস্কর্ট প্রত্যাশী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে লিখিত আবেদনের মাধ্যমে আব্দুল গণি রোডস্থ পুলিশ কন্ট্রোল রুমে গাড়ি পাঠালে মানি এস্কর্টে পুলিশি সহায়তা পাওয়া যাবে।

যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশি এস্কর্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সম্মানিত নগরবাসীকে অনুরোধ জানান ডিএমপি কমিশনার।

ডিএমপি কমিশনার ইফতার, তারাবি ও সেহেরির সময় নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান।

তিনি গার্মেন্টস মালিকদেরকে সময় মতো শ্রমিকদের বেতন ও ভাতাদি পরিশোধ করার অনুরোধ করেন। যেন বিষয়টি নিয়ে মাহে রমজান ও ঈদ-উল-ফিতরে কোনো প্রকার নাশকতার সৃষ্টি না হয়।

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ব্যাপারে তিনি বলেন, ডিএমপির পক্ষ থেকে ডিবি-পুলিশ কর্তৃক বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা করা হয়েছে, যেন কোনোভাবেই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি না করতে পারে।

মলমপার্টি ও অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা যেন কোনো প্রকার অপতৎপরতা চালাতে না পারে সে জন্য ডিএমপির পক্ষ থেকে বিশেষ পুলিশি ব্যবস্থা থাকবে।

চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও ছিনতাই রোধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করে তিনি বলেন, অপরিচিত কোনো ব্যক্তি মোবাইলে হুমকি বা চাঁদা দাবি করলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানাতে হবে। মোবাইলে হুমকি ও চাঁদাবাজি প্রতিরোধে ডিএমপির সাইবার ক্রাইম ইউনিট তৎপর রয়েছে।

ভায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর