ঢাকা ১০:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মানিকগঞ্জে ভাঙন আতঙ্কে নদীপাড়ের বাসিন্দারা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:০৩:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ১২৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় ইছামতি ও ধলেশ্বরী নদীতে পানি বাড়ায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহের ভাঙনে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী ঘিওর হাট-বাজারের একাংশ, ৩০ থেকে ৩৫টি বসতবাড়িসহ ফসলি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। হঠাৎ নদীর পানি বাড়ায় ভাঙন ঝুঁকিতে পড়েছে গরুর হাট সংলগ্ন একটি ব্রিজ, দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, শতাধিক বসতবাড়িসহ কয়েকশ বিঘা ফসলি জমি। নদীপাড়ের এসব মানুষের দিন কাটছে ভাঙন আতঙ্কে।

হাটের ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘিওরের হাট শত বছরের ঐতিহ্যবাহী একটি হাট। গত কয়েক বছর ধরেই নদীর ভাঙন কবলে রয়েছে হাটটি। তবে এ বছর জেলার শিবালয় উপজেলার যমুনা নদীতে পানি বাড়ায় এর শাখা নদী ধলেশ্বরী ও ইছামতি নদীতে গত এক সপ্তাহ ধরে পানি বাড়ছে। এই দুটি নদীর পাড়ে শতাধিক বছরের পুরাতন ঘিওর হাটের গরুর হাট, বাজারসহ বসতবাড়ি, ব্রিজ, কালভার্ট এবং অসংখ্য বসতবাড়ি রয়েছে।

অসময়ে এই নদীর পানি বাড়ায় তীব্র স্রোতের কারণে হাঠৎ ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়। এতে উপজেলার ঘিওর ইউনিয়নের কুস্তা গ্রামের বন্দর হাটের (গরুর হাট) তিন ভাগের দুই ভাগ, ৩০ থেকে ৩৫টি বসতবাড়ি ও ফসলি জমি নদীতে ইতোমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের কবলে রয়েছে কুস্তা গ্রামের কফিল উদ্দিন দর্জি উচ্চ বিদ্যালয়, কুস্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইছামতি নদীর দুটি ব্রিজ, কবরস্থান, মসজিদ ও শ্মশানসহ বিভিন্ন স্থাপনা। কয়েকটি পরিবার বাড়িঘর নিয়ে নিরাপদ স্থানে চলে গেছে। ভাঙনরোধে স্থায়ী প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা না নিলেও সাময়িকভাবে ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। তবে স্থায়ীভাবে পদক্ষেপ না নিলে অচিরেই এসব প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে এই হাট-বাজারে ভাঙনরোধে তাৎক্ষণিকভাবে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ভাঙনকবলিত স্থানে বালুভর্তি ৮ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে। এছাড়াও বসতবাড়ি রক্ষায় অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দিন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পানি বাড়ায় ইছামতি নদীতে প্রবল স্রোত রয়েছে। ভাঙনে ঘিওর গরুর হাটের অর্ধেকের বেশি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনকবলিত স্থানে বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলার কাজ করছেন কয়েকজন শ্রমিক। ভাঙনে হাটের দোকানপাট নদীগর্ভে চলে যাওয়ার শঙ্কায় মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। এদিকে কুস্তা ও রসুলপুর গ্রামের বেশ কয়েকটি বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। নদীপাড়ের এসব পরিবারের মানুষগুলোর দিন কাটছে ভাঙন আতঙ্কে। ইছামতি নদীর ভাঙনে বাড়িঘর হারিয়ে দিশেহারা তারা।

নদী ভাঙনে দুটি আধাপাকা ঘর, দুটি পাকা টয়লেটসহ ১৮ শতক জমি হারিয়েছেন কুস্তা গ্রামের বাসিন্দা আওলাদ হোসেন। ভাঙনের বিষয়ে আলাপকালে তিনি বলেন, কদিন আগেও এখানে আমার বাড়িঘর ছিল, আজ সব নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। শেষ জীবনে এসে আবার নতুন করে বাড়ি করব, তারও অবস্থা নেই। পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করছি। পাশের নিজে সামান্য খানি জায়গায় মাটি ফেলে ঘর তুলবো। এবারের ভাঙনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে নদী ভাঙনে অনেক ক্ষতি হয়ে গেল।

ঘিওর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমান। তারও বসতবাড়ি নদীতে চলে গেছে, পরিবার নিয়ে অন্যত্র নিরাপদ জায়গা যাওয়ার কথা ভাবছেন তিনি। ঘিওর গরুর হাটে আলাপকালে তিনি বলেন, নদী ভাঙনের দৃশ্য মনে পড়লে বুকটা কেঁপে উঠে। এই খালটি আগে শান্ত ছিল, দুই বছর আগে সামনে সরকারি লোকেরা অনেকগুলো ভেকু (খননযন্ত্র) দিয়ে মাটি উত্তোলন করেছে। এ কারণে এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। বসতবাড়িসহ ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। জিওব্যাগ ফেলেও তেমন কাজ হচ্ছে না। আমার দুইটা বাড়ি ভাঙছে স্যার, আমার চাচার বাড়িও অর্ধেক নদীতে চলে গেছে। নদী ভাঙনরোধে স্থায়ী প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষে নিকট দাবি জানান তিনি।

স্থানীয় ব্যবসায়ী নারায়ণ বলেন, কুস্তা বন্দরের গরুর হাটের বেশিভাগই নদীতে চলে গেছে। সামান্য একটু জায়গা বাকি আছে। ভাঙনরোধে এখন জিও ব্যাগ ফেলছে প্রশাসন, তবে এটি স্থায়ীভাবে করা গেলে ঘিওর হাটের অনেক দোকানপাট ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে। অনেক লোকের রুটি-রুজির মাধ্যম ছিল এই গরুর হাট। সামনে যদি হাট আর না বসে তাহলে অনেক লোক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ঘিওর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অহিদুল ইসলাম  বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে ঘিওর হাটের পাশে কুস্তা এলাকায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। কুস্তা এলাকায় আধা কিলোমিটারের মধ্যে নদী ভাঙনে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫টি বসতবাড়ি নদীতে চলে যাওয়ায় তাদের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। ভাঙনকবলিত এসব পরিবারের মধ্যে আর্থিক সহায়তার জন্য উপজেলা প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থায়ীভাবে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ঘিওরের ঐতিহ্যবাহী শতবছরের এই হাটটি নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ার শঙ্কাও রয়েছে বলে তিনি জানান।

ঘিওর হাট-বাজার ব্যবসায়ী ব্যবস্থাপনা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল মতিন মুসা বলেন, শত বছরের পুরাতন ঘিওর হাট-বাজারে দুই শতাধিক দোকানপাট রয়েছে। এটি জেলার ঐতিহ্যবাহী একটি হাট। আমাদের উপজেলা ছাড়াও জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষজন কেনাকাটার জন্য এই হাটে আসে। সম্প্রতি ইছামতি নদীর ভাঙনে গুরুত্বপূর্ণ এই হাট-বাজার ভাঙনের শঙ্কায় রয়েছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু অংশ নদীতে চলে গেছে। বিশেষ করে গরুর হাটটি। ভাঙনরোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা না গেলে আগামীতে পুরো হাট-বাজারই নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।

ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হামিদুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে ভাঙনকবলিত এলাকায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। ঘিওর হাট-বাজার ভাঙনরোধে এবং আধুনিক অবকাঠামো নির্মাণে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকার একটি প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে। তবে বরাদ্দ পাওয়ার পর প্রকল্পের কাজ শুরু করা যাবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মানিকগঞ্জে ভাঙন আতঙ্কে নদীপাড়ের বাসিন্দারা

আপডেট টাইম : ০৭:০৩:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় ইছামতি ও ধলেশ্বরী নদীতে পানি বাড়ায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহের ভাঙনে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী ঘিওর হাট-বাজারের একাংশ, ৩০ থেকে ৩৫টি বসতবাড়িসহ ফসলি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। হঠাৎ নদীর পানি বাড়ায় ভাঙন ঝুঁকিতে পড়েছে গরুর হাট সংলগ্ন একটি ব্রিজ, দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, শতাধিক বসতবাড়িসহ কয়েকশ বিঘা ফসলি জমি। নদীপাড়ের এসব মানুষের দিন কাটছে ভাঙন আতঙ্কে।

হাটের ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘিওরের হাট শত বছরের ঐতিহ্যবাহী একটি হাট। গত কয়েক বছর ধরেই নদীর ভাঙন কবলে রয়েছে হাটটি। তবে এ বছর জেলার শিবালয় উপজেলার যমুনা নদীতে পানি বাড়ায় এর শাখা নদী ধলেশ্বরী ও ইছামতি নদীতে গত এক সপ্তাহ ধরে পানি বাড়ছে। এই দুটি নদীর পাড়ে শতাধিক বছরের পুরাতন ঘিওর হাটের গরুর হাট, বাজারসহ বসতবাড়ি, ব্রিজ, কালভার্ট এবং অসংখ্য বসতবাড়ি রয়েছে।

অসময়ে এই নদীর পানি বাড়ায় তীব্র স্রোতের কারণে হাঠৎ ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়। এতে উপজেলার ঘিওর ইউনিয়নের কুস্তা গ্রামের বন্দর হাটের (গরুর হাট) তিন ভাগের দুই ভাগ, ৩০ থেকে ৩৫টি বসতবাড়ি ও ফসলি জমি নদীতে ইতোমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের কবলে রয়েছে কুস্তা গ্রামের কফিল উদ্দিন দর্জি উচ্চ বিদ্যালয়, কুস্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইছামতি নদীর দুটি ব্রিজ, কবরস্থান, মসজিদ ও শ্মশানসহ বিভিন্ন স্থাপনা। কয়েকটি পরিবার বাড়িঘর নিয়ে নিরাপদ স্থানে চলে গেছে। ভাঙনরোধে স্থায়ী প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা না নিলেও সাময়িকভাবে ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। তবে স্থায়ীভাবে পদক্ষেপ না নিলে অচিরেই এসব প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে এই হাট-বাজারে ভাঙনরোধে তাৎক্ষণিকভাবে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ভাঙনকবলিত স্থানে বালুভর্তি ৮ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে। এছাড়াও বসতবাড়ি রক্ষায় অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দিন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পানি বাড়ায় ইছামতি নদীতে প্রবল স্রোত রয়েছে। ভাঙনে ঘিওর গরুর হাটের অর্ধেকের বেশি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনকবলিত স্থানে বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলার কাজ করছেন কয়েকজন শ্রমিক। ভাঙনে হাটের দোকানপাট নদীগর্ভে চলে যাওয়ার শঙ্কায় মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। এদিকে কুস্তা ও রসুলপুর গ্রামের বেশ কয়েকটি বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। নদীপাড়ের এসব পরিবারের মানুষগুলোর দিন কাটছে ভাঙন আতঙ্কে। ইছামতি নদীর ভাঙনে বাড়িঘর হারিয়ে দিশেহারা তারা।

নদী ভাঙনে দুটি আধাপাকা ঘর, দুটি পাকা টয়লেটসহ ১৮ শতক জমি হারিয়েছেন কুস্তা গ্রামের বাসিন্দা আওলাদ হোসেন। ভাঙনের বিষয়ে আলাপকালে তিনি বলেন, কদিন আগেও এখানে আমার বাড়িঘর ছিল, আজ সব নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। শেষ জীবনে এসে আবার নতুন করে বাড়ি করব, তারও অবস্থা নেই। পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করছি। পাশের নিজে সামান্য খানি জায়গায় মাটি ফেলে ঘর তুলবো। এবারের ভাঙনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে নদী ভাঙনে অনেক ক্ষতি হয়ে গেল।

ঘিওর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমান। তারও বসতবাড়ি নদীতে চলে গেছে, পরিবার নিয়ে অন্যত্র নিরাপদ জায়গা যাওয়ার কথা ভাবছেন তিনি। ঘিওর গরুর হাটে আলাপকালে তিনি বলেন, নদী ভাঙনের দৃশ্য মনে পড়লে বুকটা কেঁপে উঠে। এই খালটি আগে শান্ত ছিল, দুই বছর আগে সামনে সরকারি লোকেরা অনেকগুলো ভেকু (খননযন্ত্র) দিয়ে মাটি উত্তোলন করেছে। এ কারণে এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। বসতবাড়িসহ ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। জিওব্যাগ ফেলেও তেমন কাজ হচ্ছে না। আমার দুইটা বাড়ি ভাঙছে স্যার, আমার চাচার বাড়িও অর্ধেক নদীতে চলে গেছে। নদী ভাঙনরোধে স্থায়ী প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষে নিকট দাবি জানান তিনি।

স্থানীয় ব্যবসায়ী নারায়ণ বলেন, কুস্তা বন্দরের গরুর হাটের বেশিভাগই নদীতে চলে গেছে। সামান্য একটু জায়গা বাকি আছে। ভাঙনরোধে এখন জিও ব্যাগ ফেলছে প্রশাসন, তবে এটি স্থায়ীভাবে করা গেলে ঘিওর হাটের অনেক দোকানপাট ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে। অনেক লোকের রুটি-রুজির মাধ্যম ছিল এই গরুর হাট। সামনে যদি হাট আর না বসে তাহলে অনেক লোক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ঘিওর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অহিদুল ইসলাম  বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে ঘিওর হাটের পাশে কুস্তা এলাকায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। কুস্তা এলাকায় আধা কিলোমিটারের মধ্যে নদী ভাঙনে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫টি বসতবাড়ি নদীতে চলে যাওয়ায় তাদের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। ভাঙনকবলিত এসব পরিবারের মধ্যে আর্থিক সহায়তার জন্য উপজেলা প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থায়ীভাবে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ঘিওরের ঐতিহ্যবাহী শতবছরের এই হাটটি নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ার শঙ্কাও রয়েছে বলে তিনি জানান।

ঘিওর হাট-বাজার ব্যবসায়ী ব্যবস্থাপনা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল মতিন মুসা বলেন, শত বছরের পুরাতন ঘিওর হাট-বাজারে দুই শতাধিক দোকানপাট রয়েছে। এটি জেলার ঐতিহ্যবাহী একটি হাট। আমাদের উপজেলা ছাড়াও জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষজন কেনাকাটার জন্য এই হাটে আসে। সম্প্রতি ইছামতি নদীর ভাঙনে গুরুত্বপূর্ণ এই হাট-বাজার ভাঙনের শঙ্কায় রয়েছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু অংশ নদীতে চলে গেছে। বিশেষ করে গরুর হাটটি। ভাঙনরোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা না গেলে আগামীতে পুরো হাট-বাজারই নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।

ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হামিদুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে ভাঙনকবলিত এলাকায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। ঘিওর হাট-বাজার ভাঙনরোধে এবং আধুনিক অবকাঠামো নির্মাণে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকার একটি প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে। তবে বরাদ্দ পাওয়ার পর প্রকল্পের কাজ শুরু করা যাবে।