ঢাকা ০৩:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

আঙুল ফোটানো ভালো না খারাপ? কী বলছে গবেষণা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১৬:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ অগাস্ট ২০২২
  • ১৫০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কাজের ফাঁকে আঙুল ফোটানোর অভ্যাস আমাদের অনেকেরই আছে। টানা অনেকক্ষণ কাজ করলে বা গভীরভাবে কিছু চিন্তা করার সময়ে অনেকেই আঙুল ফোটান। তার চেয়ে বেশি করে অনেকে আঙুল ফোটান একঘেয়েমি কাটাতে।

আঙুল ফোটালে এক ধরনের জোরালো মট মট শব্দ হয়। সাধারণত মনে কারা হয়, আঙুল মোচড়ানোর সময় হাড়ে হাড়ে ঘষা লেগে হয়তো এই শব্দ হয়। ব্যাপারটা আসলে সে রকম নয়। আঙুল ফোটানোর সময় মোটেও হাড়ে হাড়ে ঘষা লাগে না। তবে অনেকেই বলেন, আঙুল মটকালে বাতের ব্যথার সমস্যা দেখা দিতে পারে। কথাটি কি ঠিক? কী বলছে বিজ্ঞান?

এর জন্য প্রথমেই জানা উচিত বাতের ব্যথা কেন হয়? চিকিৎসকরা বলছেন, জয়েন্টের মধ্যে থাকা তরুণাস্থি ভেঙে গেলে হাড়গুলো পরস্পরের সঙ্গে ঘষা লাগে। আর তাতেই ব্যথা হয়। একেই চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বাত বা আর্থ্রাইটিস বলা হয়।

আমাদের জয়েন্টগুলো একটি সাইনোভিয়াল ঝিল্লি দ্বারা বেষ্টিত থাকে। এতে থাকে সাইনোভিয়াল তরল। এই তরল দুইটি হাড়ের মধ্যে লুব্রিকেট হিসেবে কাজ করে এবং একটির সঙ্গে অন্যটির ঘর্ষণ প্রতিহত করে।

এবার দেখা যাক, আঙুল ফোটালে কী হয়? সেক্ষেত্রে কি সত্যিই বাতের ব্যথার মতো কোনো সমস্যা হতে পারে? কী বলছে চিকিৎসা বিজ্ঞান?

কেউ যখন আঙুল ফোটান বা আঙুল মটকান, তখন তিনি জয়েন্টগুলো টেনে আলাদা করছেন। আর এই টানের ফলে যে ফাঁকা জায়গা তৈরি হচ্ছে তার মধ্যে বাতাসের বাবল তৈরি হয়। এই বাবলগুলোই ফেটে যায়, আর তার ফলেই ঐ আওয়াজটি বেরোয়।

দুইটি সমীক্ষা চালানো হয়েছে এই আঙুল ফোটানোর বিষয়টি নিয়ে। একটির রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে ১৯৯০ সালে। অন্যটি প্রকাশিত হয়েছে ২০১১ সালে। সেখানেই বাতের ব্যথার সঙ্গে আঙুল মটকানোর যোগ আছে কিনা, তা উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রথম গবেষণাটি ছিল আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের। ১৯৯০ সালে তারা যে গবেষণাপত্র প্রকাশ করে, সেখানে বলা হয়েছিল, এই দুইয়ের মধ্যে কোনো যোগ তারা পায়নি।

পরের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন গবেষক বাতের ব্যথা বা আর্থ্রাইটিস নিয়ে কাজ করতে যান। তারাও বলেন, এই বাতের সঙ্গে আঙুল ফোটানোর কোনো যোগাযোগ নেই। এই গবেষণাপত্রটি ২০১১ সালে প্রকাশিত হয়।

সেক্ষেত্রে প্রশ্ন হলো আঙুল ফোটানো কি পুরোপুরি নিরাপদ? মোটেই তা নয়। বাতের সমস্যানা হলেও অন্য সমস্যা হতে পারে। ক্রমাগত আঙুল ফোটালে আপনার সাইনোভিয়াল মেমব্রেন ছিঁড়ে যেতে পারে এবং জয়েন্টগুলোকে ফাটতে শুরু করতে পারে।

এছাড়াও যারা খুব ঘন ঘন আঙুল ফোটালে, তাদের আঙুল দুর্বল হয়ে যেতে পারে। কবজির হাড়ও দুর্বল হয়ে যেতে পারে। তাতে কমে যেতে হাতের জোরও। ফলে আঙুল ফোটানোর অভ্যাস বদলানোই ভালো।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

সরকারি চাকরিতে ২২ হাজার নতুন নিয়োগের ঘোষণা আসছে

আঙুল ফোটানো ভালো না খারাপ? কী বলছে গবেষণা

আপডেট টাইম : ১২:১৬:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ অগাস্ট ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কাজের ফাঁকে আঙুল ফোটানোর অভ্যাস আমাদের অনেকেরই আছে। টানা অনেকক্ষণ কাজ করলে বা গভীরভাবে কিছু চিন্তা করার সময়ে অনেকেই আঙুল ফোটান। তার চেয়ে বেশি করে অনেকে আঙুল ফোটান একঘেয়েমি কাটাতে।

আঙুল ফোটালে এক ধরনের জোরালো মট মট শব্দ হয়। সাধারণত মনে কারা হয়, আঙুল মোচড়ানোর সময় হাড়ে হাড়ে ঘষা লেগে হয়তো এই শব্দ হয়। ব্যাপারটা আসলে সে রকম নয়। আঙুল ফোটানোর সময় মোটেও হাড়ে হাড়ে ঘষা লাগে না। তবে অনেকেই বলেন, আঙুল মটকালে বাতের ব্যথার সমস্যা দেখা দিতে পারে। কথাটি কি ঠিক? কী বলছে বিজ্ঞান?

এর জন্য প্রথমেই জানা উচিত বাতের ব্যথা কেন হয়? চিকিৎসকরা বলছেন, জয়েন্টের মধ্যে থাকা তরুণাস্থি ভেঙে গেলে হাড়গুলো পরস্পরের সঙ্গে ঘষা লাগে। আর তাতেই ব্যথা হয়। একেই চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বাত বা আর্থ্রাইটিস বলা হয়।

আমাদের জয়েন্টগুলো একটি সাইনোভিয়াল ঝিল্লি দ্বারা বেষ্টিত থাকে। এতে থাকে সাইনোভিয়াল তরল। এই তরল দুইটি হাড়ের মধ্যে লুব্রিকেট হিসেবে কাজ করে এবং একটির সঙ্গে অন্যটির ঘর্ষণ প্রতিহত করে।

এবার দেখা যাক, আঙুল ফোটালে কী হয়? সেক্ষেত্রে কি সত্যিই বাতের ব্যথার মতো কোনো সমস্যা হতে পারে? কী বলছে চিকিৎসা বিজ্ঞান?

কেউ যখন আঙুল ফোটান বা আঙুল মটকান, তখন তিনি জয়েন্টগুলো টেনে আলাদা করছেন। আর এই টানের ফলে যে ফাঁকা জায়গা তৈরি হচ্ছে তার মধ্যে বাতাসের বাবল তৈরি হয়। এই বাবলগুলোই ফেটে যায়, আর তার ফলেই ঐ আওয়াজটি বেরোয়।

দুইটি সমীক্ষা চালানো হয়েছে এই আঙুল ফোটানোর বিষয়টি নিয়ে। একটির রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে ১৯৯০ সালে। অন্যটি প্রকাশিত হয়েছে ২০১১ সালে। সেখানেই বাতের ব্যথার সঙ্গে আঙুল মটকানোর যোগ আছে কিনা, তা উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রথম গবেষণাটি ছিল আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের। ১৯৯০ সালে তারা যে গবেষণাপত্র প্রকাশ করে, সেখানে বলা হয়েছিল, এই দুইয়ের মধ্যে কোনো যোগ তারা পায়নি।

পরের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন গবেষক বাতের ব্যথা বা আর্থ্রাইটিস নিয়ে কাজ করতে যান। তারাও বলেন, এই বাতের সঙ্গে আঙুল ফোটানোর কোনো যোগাযোগ নেই। এই গবেষণাপত্রটি ২০১১ সালে প্রকাশিত হয়।

সেক্ষেত্রে প্রশ্ন হলো আঙুল ফোটানো কি পুরোপুরি নিরাপদ? মোটেই তা নয়। বাতের সমস্যানা হলেও অন্য সমস্যা হতে পারে। ক্রমাগত আঙুল ফোটালে আপনার সাইনোভিয়াল মেমব্রেন ছিঁড়ে যেতে পারে এবং জয়েন্টগুলোকে ফাটতে শুরু করতে পারে।

এছাড়াও যারা খুব ঘন ঘন আঙুল ফোটালে, তাদের আঙুল দুর্বল হয়ে যেতে পারে। কবজির হাড়ও দুর্বল হয়ে যেতে পারে। তাতে কমে যেতে হাতের জোরও। ফলে আঙুল ফোটানোর অভ্যাস বদলানোই ভালো।