ঢাকা ০৭:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাঁস পালন করেই লাখপতি মন্টু

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১৩:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ অগাস্ট ২০২২
  • ১৯২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ হাঁস পালন করেই এখন নিজের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার পালশা ইউপির সাবেক ইউপি সদস্য (মেম্বার) ময়নুল ইসলাম মন্টু। জনপ্রতিনিধিত্ব শেষে বসে না থেকে বাড়ির পাশে ফাঁকা জায়গায় শুরু করেছেন হাঁস পালন।

গ্রামীণ পরিবেশে এক হাজার হাঁস পালন করে তিনমাস পর তার আয় লাখ টাকার উপরে। বর্তমানে তার পৃথক দুটি খামারে রয়েছে পাঁচ হাজার হাঁস। এছাড়াও তার খামারে কর্মসংস্থান হয়েছে এলাকার আরো চারজন শ্রমিকের।

হাঁস পালনে মন্টু মেম্বারের সফলতা হবার গল্পে ওই এলাকার অনেকেই অল্প পুঁজিতে হাঁস পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। উদ্যোক্তা হিসেবে তারাও উপার্জন করছে লাখ লাখ টাকা। অনেক পোল্ট্রি মুরগি পালনকারীও অধিক মুনাফার আশায় মুরগী পালন ছেড়ে মুরগীর শেডে হাঁস পালন শুরু করেছে।

এসব খামারীরা পাশ্ববর্তী সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থেকে ১৫-২৫ টাকা দরে একদিনের হাঁসের ছানা নিয়ে আসেন। গ্রামীণ পরিবেশে টানা ৭০ দিন পালন করার পর এসব হাঁস বাজারজাত করার উপযোগী হয়। সে সময় হাঁসগুলো ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পিস দরে পাইকাররা কিনে নিয়ে যায়।

খামারে বাজার থেকে কেনা খাদ্য খাওয়ানোর পাশাপাশি বাড়ির পাশের ধানী জমি ও পুকুর-বিলে চড়ানো হচ্ছে এসব হাঁস। বাজার থেকে কেনা খাদ্য বেশি খাওয়ানোর প্রয়োজন হচ্ছে না। প্রাকৃতিক খাবার খেয়েই বেড়ে উঠছে হাঁসগুলো। ফলে হাঁসপালনে খরচের পরিমান একতৃতীয়াংশ কমে গিয়েছে। বেড়েছে লাভের হার। পাশাপাশি হাঁসের তেমন কোন জটিল রোগ না থাকলেও, হাঁস বাজারজাত করা পর্যন্ত ৭০ দিনে প্লেগ ও ডাক কলেরা রোগের দুটি ভ্যাকসিন প্রদান করছে খামারীরা। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্য বলছে, ঘোড়াঘাট উপজেলায় ছোট বড় মিলিয়ে ৬১টি হাঁসের খামার আছে। এসব খামারে প্রায় লক্ষাধিক হাঁসের পালন হচ্ছে।

হাঁস পালন করেই লাখপতি মন্টু। ছবি: ডেইলি বাংলাদেশ

খামারী মন্টু মেম্বার বলেন, আমি অল্প সময়েই সফলতা অর্জন করেছি। আমার ভাগ্যের চাকা ঘুরে গেছে। আগামী দিনে আরো বড় পরিসরে আমি হাঁস পালন প্রকল্প চালু করব।

মন্টু মেম্বারকে দেখে অনুপ্রাণিত হওয়া আরেক সফল খামারী মনোয়ার হোসেন বলেন, আমি আগে বয়লার মুরগী পালন করতাম। তাতে আমি দুইবার মোটা অঙ্কের লোকসানে পড়েছি। তবে এবার হাঁসপালনে আমি অবিশ্বাস্য ভাবে লাভবান হয়েছি।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. বিল্পব কুমার দে বলেন, অন্যান্য পশু-পাখি পালনের চেয়ে বর্তমান সময়ে হাঁস পালন করে অধিক মূনাফা পাওয়া সম্ভব। প্রতিনিয়ত তরুণ-যুবকরা হাঁস পালনের দিকে ঝুঁকছেন। আমরা খামারীদের বিভিন্ন রোগের ভ্যাকসিন প্রদানসহ সব ধরণের পরামর্শ ও সহযোগিতা দিচ্ছি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

হাঁস পালন করেই লাখপতি মন্টু

আপডেট টাইম : ১২:১৩:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ অগাস্ট ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ হাঁস পালন করেই এখন নিজের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার পালশা ইউপির সাবেক ইউপি সদস্য (মেম্বার) ময়নুল ইসলাম মন্টু। জনপ্রতিনিধিত্ব শেষে বসে না থেকে বাড়ির পাশে ফাঁকা জায়গায় শুরু করেছেন হাঁস পালন।

গ্রামীণ পরিবেশে এক হাজার হাঁস পালন করে তিনমাস পর তার আয় লাখ টাকার উপরে। বর্তমানে তার পৃথক দুটি খামারে রয়েছে পাঁচ হাজার হাঁস। এছাড়াও তার খামারে কর্মসংস্থান হয়েছে এলাকার আরো চারজন শ্রমিকের।

হাঁস পালনে মন্টু মেম্বারের সফলতা হবার গল্পে ওই এলাকার অনেকেই অল্প পুঁজিতে হাঁস পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। উদ্যোক্তা হিসেবে তারাও উপার্জন করছে লাখ লাখ টাকা। অনেক পোল্ট্রি মুরগি পালনকারীও অধিক মুনাফার আশায় মুরগী পালন ছেড়ে মুরগীর শেডে হাঁস পালন শুরু করেছে।

এসব খামারীরা পাশ্ববর্তী সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থেকে ১৫-২৫ টাকা দরে একদিনের হাঁসের ছানা নিয়ে আসেন। গ্রামীণ পরিবেশে টানা ৭০ দিন পালন করার পর এসব হাঁস বাজারজাত করার উপযোগী হয়। সে সময় হাঁসগুলো ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পিস দরে পাইকাররা কিনে নিয়ে যায়।

খামারে বাজার থেকে কেনা খাদ্য খাওয়ানোর পাশাপাশি বাড়ির পাশের ধানী জমি ও পুকুর-বিলে চড়ানো হচ্ছে এসব হাঁস। বাজার থেকে কেনা খাদ্য বেশি খাওয়ানোর প্রয়োজন হচ্ছে না। প্রাকৃতিক খাবার খেয়েই বেড়ে উঠছে হাঁসগুলো। ফলে হাঁসপালনে খরচের পরিমান একতৃতীয়াংশ কমে গিয়েছে। বেড়েছে লাভের হার। পাশাপাশি হাঁসের তেমন কোন জটিল রোগ না থাকলেও, হাঁস বাজারজাত করা পর্যন্ত ৭০ দিনে প্লেগ ও ডাক কলেরা রোগের দুটি ভ্যাকসিন প্রদান করছে খামারীরা। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্য বলছে, ঘোড়াঘাট উপজেলায় ছোট বড় মিলিয়ে ৬১টি হাঁসের খামার আছে। এসব খামারে প্রায় লক্ষাধিক হাঁসের পালন হচ্ছে।

হাঁস পালন করেই লাখপতি মন্টু। ছবি: ডেইলি বাংলাদেশ

খামারী মন্টু মেম্বার বলেন, আমি অল্প সময়েই সফলতা অর্জন করেছি। আমার ভাগ্যের চাকা ঘুরে গেছে। আগামী দিনে আরো বড় পরিসরে আমি হাঁস পালন প্রকল্প চালু করব।

মন্টু মেম্বারকে দেখে অনুপ্রাণিত হওয়া আরেক সফল খামারী মনোয়ার হোসেন বলেন, আমি আগে বয়লার মুরগী পালন করতাম। তাতে আমি দুইবার মোটা অঙ্কের লোকসানে পড়েছি। তবে এবার হাঁসপালনে আমি অবিশ্বাস্য ভাবে লাভবান হয়েছি।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. বিল্পব কুমার দে বলেন, অন্যান্য পশু-পাখি পালনের চেয়ে বর্তমান সময়ে হাঁস পালন করে অধিক মূনাফা পাওয়া সম্ভব। প্রতিনিয়ত তরুণ-যুবকরা হাঁস পালনের দিকে ঝুঁকছেন। আমরা খামারীদের বিভিন্ন রোগের ভ্যাকসিন প্রদানসহ সব ধরণের পরামর্শ ও সহযোগিতা দিচ্ছি।