ঢাকা ০৩:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জান্নাত ও জাহান্নামের খোঁজে বিজ্ঞানীরা-২

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৩৪:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ অগাস্ট ২০২২
  • ১৪৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এ মতবাদ কোরআনী তথ্যের সাথে সাংঘর্ষিক। কেননা কোরআন স্পষ্ট ঘোষণা করেছে যে, সমস্ত ভূমণ্ডল ও নভোমণ্ডল আল্লাহ ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। এর মধ্যে কিছু অংশও অসম্পূর্ণ ছিল না। এ ঘোষণা কোরআনের কয়েক স্থানে রয়েছে, সৃষ্টির ক্ষেত্রে সৌরজগতকে খণ্ডিত করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। কেননা সৌরজগতে যত কিছু আছে সবকিছুর অস্তিত্ব একই নির্দেশে বিদ্যমান।

এগুলোর প্রাচীনত্ব সম্পর্কে আলাদা হিসাব গণনারও প্রয়োজন নেই, যা আল্লাহর সর্বশক্তিমান হওয়ার ক্ষমতাকে অস্বীকার করার শামিল এবং আলোচ্য মতবাদে স্পষ্ট।
আল্লাহর সৃষ্টির সমস্ত ভূমণ্ডল ও নভোমণ্ডল অর্থাৎ সৌরজগত ও সমস্ত ভূমণ্ডল একই সাথে জড়িত এবং সবই একই স্রষ্টার ‘কুন ফা’য়া কুন’ নির্দেশে অস্তিত্বধারী। প্রত্যেকে যার যার অবস্থানে সক্রিয়। কোরআনে বলা হয়েছে ‘কুল্লুন ফি ফালাকিন ইয়াসবাহুন’ অর্থাৎ আকাশে বিদ্যমান প্রত্যেক বস্তুই নির্ধারিত নিয়মে পরিভ্রমণ করছে, প্রেত্যেক বস্তু বলতে চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, নক্ষত্র-তারকারাজি সবকিছুকেই বোঝানো হয়েছে। এগুলোর গতিবিধিও খোদার নির্দেশের আওতায়, তাতে কোনো ব্যতিক্রম নেই।

দিনের বেলায় আমরা যে নীল আকাশ দেখি, রাতে তার রূপ হয় ভিন্ন। গ্রহ-নক্ষত্র এ শোভিত ঝকঝকে আকাশ। আল্লাহ তা’আলা সূরা বুরুজে আকাশেরই শপথ করেছেন। সূরা বুরুজের প্রথম আয়াতটির অর্থ হচ্ছে, বড় বড় প্রাসাদ ও দুর্গের শপথ এবং এর অর্থ হচ্ছে বড় বড় নক্ষত্র। যেমন বিভিন্ন তাফসিরবিদ এই অর্থ করেছেন। কারো কারো মতে, সমগ্র আকাশ মণ্ডল বারো ভাগে বিভক্ত। এর প্রত্যেক ভাগকে বুরুজ বলা হয়। এ তাফসিরবিদ ও দার্শনিকদের ধারণা এই যে, স্থিতিশীল নক্ষত্রসমূহ এসব বুরুজের মধ্যে অবস্থান করে। গ্রহসমূহ আকাশের গতিতে গতিশীল হয়ে এসব বুরুজের মধ্যে অবতরণ করে। কিন্তু এ মত সঠিক নয় বলে কোনো কোনো তাফসিরবিদ মনে করেন এবং তা ভুল।

কোরআন পাকে গ্রহ-নক্ষত্রসমূহ আকাশে ‘গ্রোথিত’ বলা হয়েছে। এগুলো আকাশের গতিতে গতিশীল হয়। কোরআনের মতে, প্রত্যেক গ্রহ নিজস্ব গতিতে গতিশীল। সূরা ইয়াসিন-এ আছে, আরশে বিদ্যমান প্রত্যেক বস্তু বিচরণ করে। আয়াতে যে ‘ফালাক’ ব্যবহার করা হয়েছে, তার অর্থ আকাশ নয়, বরং গ্রহের কক্ষপথ, যে স্থানে সে বিচরণ করে। কেউ কেউ বলেন, বুরাজগুলোর অর্থ হচ্ছে, সে দ্বাদশ বুরুজ, যেগুলো সূর্য, এক বছরে অতিক্রম করে। অথবা আকাশে দুর্গের যে অংশ ফেশেতারা পাহারা দেন কিংবা বড় বড় তারকা সেগুলো আকাশে দেখা যায়।
তাফসিরবিদগণের বুরুজ সম্পর্কে এ ব্যাখ্যা আধুনিক বিজ্ঞান কিভাবে গ্রহণ করে, তাও ভেবে দেখার বিষয়।
সুতরাং স্বর্গের সন্ধান চালিয়ে যাওয়ার আকাক্সক্ষা যেমন পূরণ হওয়ার নয়, যা কেয়ামত পর্যন্ত সম্ভব নয়, তেমনি মহাকাশের পূর্ণাঙ্গ ছবি প্রকাশ করাও অসম্ভব। মহাকাশ বা সৌরজগত সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা অনেক চমকপ্রদ তথ্য পরিবেশন করে থাকেন। তাদের এসব তথ্যের মধ্যে কোরআনের সাথে সাংঘর্ষিক অনেক কিছু থাকে। সবকিছু কোরআনের সাথে যাচাই-বাছাই করা ব্যতীত গ্রহণ করা সমীচীন নয়। আমরা বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কারকে অস্বীকার করছি না, কিন্তু যেগুলো কোরআনের সাথে সাংঘর্ষিক বা বিরোধমূলক সেগুলো মেনে নেয়ার প্রশ্ন ওঠে না।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জান্নাত ও জাহান্নামের খোঁজে বিজ্ঞানীরা-২

আপডেট টাইম : ০৯:৩৪:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ অগাস্ট ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এ মতবাদ কোরআনী তথ্যের সাথে সাংঘর্ষিক। কেননা কোরআন স্পষ্ট ঘোষণা করেছে যে, সমস্ত ভূমণ্ডল ও নভোমণ্ডল আল্লাহ ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। এর মধ্যে কিছু অংশও অসম্পূর্ণ ছিল না। এ ঘোষণা কোরআনের কয়েক স্থানে রয়েছে, সৃষ্টির ক্ষেত্রে সৌরজগতকে খণ্ডিত করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। কেননা সৌরজগতে যত কিছু আছে সবকিছুর অস্তিত্ব একই নির্দেশে বিদ্যমান।

এগুলোর প্রাচীনত্ব সম্পর্কে আলাদা হিসাব গণনারও প্রয়োজন নেই, যা আল্লাহর সর্বশক্তিমান হওয়ার ক্ষমতাকে অস্বীকার করার শামিল এবং আলোচ্য মতবাদে স্পষ্ট।
আল্লাহর সৃষ্টির সমস্ত ভূমণ্ডল ও নভোমণ্ডল অর্থাৎ সৌরজগত ও সমস্ত ভূমণ্ডল একই সাথে জড়িত এবং সবই একই স্রষ্টার ‘কুন ফা’য়া কুন’ নির্দেশে অস্তিত্বধারী। প্রত্যেকে যার যার অবস্থানে সক্রিয়। কোরআনে বলা হয়েছে ‘কুল্লুন ফি ফালাকিন ইয়াসবাহুন’ অর্থাৎ আকাশে বিদ্যমান প্রত্যেক বস্তুই নির্ধারিত নিয়মে পরিভ্রমণ করছে, প্রেত্যেক বস্তু বলতে চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, নক্ষত্র-তারকারাজি সবকিছুকেই বোঝানো হয়েছে। এগুলোর গতিবিধিও খোদার নির্দেশের আওতায়, তাতে কোনো ব্যতিক্রম নেই।

দিনের বেলায় আমরা যে নীল আকাশ দেখি, রাতে তার রূপ হয় ভিন্ন। গ্রহ-নক্ষত্র এ শোভিত ঝকঝকে আকাশ। আল্লাহ তা’আলা সূরা বুরুজে আকাশেরই শপথ করেছেন। সূরা বুরুজের প্রথম আয়াতটির অর্থ হচ্ছে, বড় বড় প্রাসাদ ও দুর্গের শপথ এবং এর অর্থ হচ্ছে বড় বড় নক্ষত্র। যেমন বিভিন্ন তাফসিরবিদ এই অর্থ করেছেন। কারো কারো মতে, সমগ্র আকাশ মণ্ডল বারো ভাগে বিভক্ত। এর প্রত্যেক ভাগকে বুরুজ বলা হয়। এ তাফসিরবিদ ও দার্শনিকদের ধারণা এই যে, স্থিতিশীল নক্ষত্রসমূহ এসব বুরুজের মধ্যে অবস্থান করে। গ্রহসমূহ আকাশের গতিতে গতিশীল হয়ে এসব বুরুজের মধ্যে অবতরণ করে। কিন্তু এ মত সঠিক নয় বলে কোনো কোনো তাফসিরবিদ মনে করেন এবং তা ভুল।

কোরআন পাকে গ্রহ-নক্ষত্রসমূহ আকাশে ‘গ্রোথিত’ বলা হয়েছে। এগুলো আকাশের গতিতে গতিশীল হয়। কোরআনের মতে, প্রত্যেক গ্রহ নিজস্ব গতিতে গতিশীল। সূরা ইয়াসিন-এ আছে, আরশে বিদ্যমান প্রত্যেক বস্তু বিচরণ করে। আয়াতে যে ‘ফালাক’ ব্যবহার করা হয়েছে, তার অর্থ আকাশ নয়, বরং গ্রহের কক্ষপথ, যে স্থানে সে বিচরণ করে। কেউ কেউ বলেন, বুরাজগুলোর অর্থ হচ্ছে, সে দ্বাদশ বুরুজ, যেগুলো সূর্য, এক বছরে অতিক্রম করে। অথবা আকাশে দুর্গের যে অংশ ফেশেতারা পাহারা দেন কিংবা বড় বড় তারকা সেগুলো আকাশে দেখা যায়।
তাফসিরবিদগণের বুরুজ সম্পর্কে এ ব্যাখ্যা আধুনিক বিজ্ঞান কিভাবে গ্রহণ করে, তাও ভেবে দেখার বিষয়।
সুতরাং স্বর্গের সন্ধান চালিয়ে যাওয়ার আকাক্সক্ষা যেমন পূরণ হওয়ার নয়, যা কেয়ামত পর্যন্ত সম্ভব নয়, তেমনি মহাকাশের পূর্ণাঙ্গ ছবি প্রকাশ করাও অসম্ভব। মহাকাশ বা সৌরজগত সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা অনেক চমকপ্রদ তথ্য পরিবেশন করে থাকেন। তাদের এসব তথ্যের মধ্যে কোরআনের সাথে সাংঘর্ষিক অনেক কিছু থাকে। সবকিছু কোরআনের সাথে যাচাই-বাছাই করা ব্যতীত গ্রহণ করা সমীচীন নয়। আমরা বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কারকে অস্বীকার করছি না, কিন্তু যেগুলো কোরআনের সাথে সাংঘর্ষিক বা বিরোধমূলক সেগুলো মেনে নেয়ার প্রশ্ন ওঠে না।