হাওর বার্তা ডেস্কঃ ২০২১ সালের গ্রিষ্মে যখন বার্সেলোনা ছেড়ে পিএসজিতে যোগ দেন লিওনেল মেসি, তখন প্যারিসের ক্লাবটির সঙ্গে দুই বছরের চুক্তি করেন তিনি। যার মেয়াদ শেষ হবে ২০২৩ সালের জুনে। যদিও এক বছর বাড়ানোর অপশন রাখা হয়েছে চুক্তিতে।
তবে, বার্সা থেকে পিএসজিতে যোগ দেয়ার পর গত মৌসুমে রীতিমত গোল খরায় ভুগেছেন মেসি। গত ১৫ বছরে এতটা বাজে অবস্থা কাটেনি তার। তবুও, পিএসজি প্রেসিডেন্ট নাসের আল খেলাইফি চান, মেসির সঙ্গে আরও একটি বছর চুক্তি বাড়িয়ে নিতে। এক বছর চুক্তি বাড়ানোর যে অপশন রাখা হয়েছিল, সেটাকেই বাস্তবায়ন করতে চান পিএসজির প্রধান।
তবে, মেসি এখনই পিএসজি প্রেসিডেন্টের প্রস্তাবে কোনো সাড়া দেননি। তিনি সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন, নতুন চুক্তি হবে নাকি ২০২৩ পর্যন্তই চুক্তি বহাল থাকবে- তার সবই চিন্তা-ভাবনা হবে কাতার বিশ্বকাপের পর।
মেসি কী পিএসজির সঙ্গে চুক্তি বাড়াবেন?
অর্থ্যাৎ, কাতার বিশ্বকাপের আগে কোনো কিছু নিয়েই ভাবতে চান না মেসি। স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক মার্কা জানাচ্ছে, মেসির কাছে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে পিএসজি কোনো প্রস্তাব উত্থাপন করেনি। তবে, ক্লাবের ভেতর নানা জনের কাছ থেকে প্রস্তাবের বিষয়ে জানতে পেরেছেন মেসি এবং তিনি নিজেও জানিয়ে দিয়েছেন- কাতার বিশ্বকাপের পর ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করবেন।
বার্সা থেকে পিএসজিতে আসার পর নতুন ক্লাব, নতুন পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতেই মেসির পুরো একটা মৌসুম কেটে গেছে। বেশ কয়েকবার ইনজুরিতে পড়েছেন, করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। যে কারণে টানা ১০টি ম্যাচও খেলতে পারেননি তিনি পিএসজির জার্সিতে। বার্সায় যা চিন্তাও করা যেতো না।
নতুন মৌসুমের জন্য এরই মধ্যে পিএসজির হয়ে অনুশীলন শুরু করেছেন মেসি। নিজের সেরাটা বের করে আনার জন্য ছুটি কমিয়ে ফেলেছেন এক সপ্তাহ। নিজেকে কঠোরভাবে প্রস্তুত করতে চান আগামী মৌসুমের জন্য। নতুন মৌসুমে পিএসজি প্রথম ম্যাচ খেলবে ৩১ জুলাই নান্তেসের বিপক্ষে।
কেন চুক্তি বাড়াতে আগ্রহী পিএসজি?
তবুও পিএসজি মেসির সঙ্গে চুক্তি আরও এক বছর বাড়াতে চায়। শুধুমাত্র চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার উদ্দেশ্যেই নয়, মেসি হচ্ছেন পিএসজির কাছে টাকা আয়ের একটি যন্ত্র। মার্কা লিখেছে, ‘মেসি হচ্ছেন পিএসজির কাছে মানি প্রিন্টিং এসেট।’
মেসিকে পাওয়া মানে পিএসজি যেন সোনার খনি হাতে পেয়ে গেছে গত এক বছরে। মেসির ইমেজ রাইটস এবং মার্কের্টিংয়ে এক বছরে আকাশছোঁয়া উন্নতি পেয়েছে পিএসজি। নাসের আল খেলাইফি পিএসজির মালিকানা কেনার পর গত মৌসুমটাই ছিল তাদের সবচেয়ে লাভজনক বছর।
এক মৌসুমেই প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ডলার লাভ করেছে তার ক্লাব। যা পিএসজির ইতিহাসে কখনো কল্পনাই করা যায়নি। মেসিকে দেখে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন দলটির স্পন্সর হয়েছে ইউরোপ তথা পৃথিবার বিখ্যাত অনেকগুলো কোম্পানি। যার মধ্যে রয়েছে- ডিওর, গোট, ক্রিপটো.কম, অটোহিরো, স্মার্ট গুড থিংস, ভোল্ট, বিগ কোলা, স্পোর্টস ওয়াটার এবং প্লেবেটআর।
পিএসজির কমার্সিয়াল ডিরেক্টর মার্ক আমস্ট্রং বলেন, মেসি আসার পর গত মৌসুমে পিএসজি তাদের প্রতিটি স্পন্সরের চুক্তির মূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে ৩-৫ মিলিয়ন থেকে ৫-৮ মিলিয়ন পার ব্র্যান্ড।
এছাড়া গত এক মৌসুমে পিএসজির যত জার্সি বিক্রি হয়েছে, এর মধ্যে ৬০ ভাগই ছিল মেসির জার্সি।
মেসি কী পেয়ে থাকেন পিএসজির কাছ থেকে?
চুক্তি অনুযায়ী পিএসজির কাছ থেকেও মেসি মোটা অংকের পারিশ্রমিক পেয়ে থাকেন। ইংলিশ পত্রিকা ডেইলি মেইল জানাচ্ছে, প্রতি সপ্তাহে পিএসজির কাছ থেকে ৯ লাখ ৬০ হাজার পাউন্ড (প্রায় ১০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা) করে পারিশ্রমিক পান আর্জেন্টাইন এই তারকা।
মেসির এই পারিশ্রমিক বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিকপ্রাপ্তদের মধ্যে দ্বিতীয়। নতুন চুক্তি অনুযায়ী পিএসজির কাছ থেকেই সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পেয়ে থাকেন মেসির সতীর্থ কিলিয়ান এমবাপে।