ঢাকা ০৭:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিঠামইনে সাবেক ইউপি সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:৫০:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ জুলাই ২০২২
  • ১১৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পূর্ববিরোধের জের ধরে কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলায় সাবেক ইউপি সদস্য মো. হেলিমকে (৩৫) পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। সোমবার (১১ জুলাই) রাতে ঘাগড়া ইউনিয়নের ঘাগড়া বাজারে আইয়ুব আলীর লোকজন এ হামলা করে।

নিহত মো. হেলিম উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের ধোবাজোড়া গ্রামের ফরিদ মিয়ার ছেলে। তিনি ঘাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য ছিলেন।

থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাতে ঘাগড়া বাজারের হক মার্কেটে হেলিমকে বেধড়ক মারধর ও বল্লম দিয়ে আঘাত করে প্রতিপক্ষের লোকজন। পরে তাকে তুলে নিয়ে যায় প্রতিপক্ষের লোকেরা। ঘটনার খবর পেয়ে ঘাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান ভূঁইয়া লোকজন নিয়ে হেলিমকে একই গ্রামের আইয়ুব আলীর ঘাট থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান।

সেখান তার অবস্থার অবনতি হলে বাজিতপুর উপজেলার ভাগলপুরের জহিরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত ২টার দিকে নিকলীর গোড়াদিঘার কাছে তার মৃত্যু হয়।

নিহতের বড় বোন মনোয়ারা বেগম জানান, স্থানীয় প্রভাবশালী আইয়ুব আলীসহ বেশ কয়েকজনের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধের জেরেই এ পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে আইয়ুব আলীর ভাতিজির সঙ্গে বাবর আলীর ছেলের বিয়ে হয়। বাবর আলী হেলিমের চাচাতো ভাই। আইয়ুবের মেয়ের সঙ্গে বাবরের ছেলের বনিবনা না হওয়ায় বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে শত্রুতা শুরু হয়। এর জেরে আইয়ুব আলী তার নিজের ঘরে আগুন দিয়ে বাবর আলী, তার ছেলে আর হেলিম মেম্বারকে আসামি করে মামলা করেন। গতকাল রাতে বাবর আলীকে মারধর করেন আইয়ুব আলী ও তার লোকজন। এতে স্ট্রোক তার মৃত্যু হয় তার। এ ঘটনায় হেলিম মেম্বারের সহযোগিতায় আইয়ুব ও তার লোকজনের নামে মামলা করে বাবর আলীর পরিবার। এতে হেলিম মেম্বারের ওপর ক্ষোভ বেড়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, এ ক্ষোভের বশবর্তী হয়েই সোমবার রাতে বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে তাকে নৌকায় তুলে বাড়িতে নিয়ে প্রথমে হাত পা ভেঙে দিয়। পরে আবার তার ঊরুতে একাধিকবার টেঁটা ঢুকিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে রাখে। খবর পেয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান তার অবস্থা অবনতি ঘটলে ভাগলপুরের জহিরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত ২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। আমার ভাইকে যারা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে, আমি তাদের বিচার চাই।

এই বিষয়ে অভিযুক্ত আইয়ুব আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে ঘাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে আইয়ুব আলীর বাড়ির ঘাট থেকে হেলিমকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। এখনো ঘটনাস্থলে আছি। বিস্তারিত পরে জানাতে পারব।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মিঠামইন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, ঘটনার সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। মরদেহ উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

মিঠামইনে সাবেক ইউপি সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা

আপডেট টাইম : ০২:৫০:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ জুলাই ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পূর্ববিরোধের জের ধরে কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলায় সাবেক ইউপি সদস্য মো. হেলিমকে (৩৫) পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। সোমবার (১১ জুলাই) রাতে ঘাগড়া ইউনিয়নের ঘাগড়া বাজারে আইয়ুব আলীর লোকজন এ হামলা করে।

নিহত মো. হেলিম উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের ধোবাজোড়া গ্রামের ফরিদ মিয়ার ছেলে। তিনি ঘাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য ছিলেন।

থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাতে ঘাগড়া বাজারের হক মার্কেটে হেলিমকে বেধড়ক মারধর ও বল্লম দিয়ে আঘাত করে প্রতিপক্ষের লোকজন। পরে তাকে তুলে নিয়ে যায় প্রতিপক্ষের লোকেরা। ঘটনার খবর পেয়ে ঘাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান ভূঁইয়া লোকজন নিয়ে হেলিমকে একই গ্রামের আইয়ুব আলীর ঘাট থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান।

সেখান তার অবস্থার অবনতি হলে বাজিতপুর উপজেলার ভাগলপুরের জহিরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত ২টার দিকে নিকলীর গোড়াদিঘার কাছে তার মৃত্যু হয়।

নিহতের বড় বোন মনোয়ারা বেগম জানান, স্থানীয় প্রভাবশালী আইয়ুব আলীসহ বেশ কয়েকজনের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধের জেরেই এ পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে আইয়ুব আলীর ভাতিজির সঙ্গে বাবর আলীর ছেলের বিয়ে হয়। বাবর আলী হেলিমের চাচাতো ভাই। আইয়ুবের মেয়ের সঙ্গে বাবরের ছেলের বনিবনা না হওয়ায় বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে শত্রুতা শুরু হয়। এর জেরে আইয়ুব আলী তার নিজের ঘরে আগুন দিয়ে বাবর আলী, তার ছেলে আর হেলিম মেম্বারকে আসামি করে মামলা করেন। গতকাল রাতে বাবর আলীকে মারধর করেন আইয়ুব আলী ও তার লোকজন। এতে স্ট্রোক তার মৃত্যু হয় তার। এ ঘটনায় হেলিম মেম্বারের সহযোগিতায় আইয়ুব ও তার লোকজনের নামে মামলা করে বাবর আলীর পরিবার। এতে হেলিম মেম্বারের ওপর ক্ষোভ বেড়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, এ ক্ষোভের বশবর্তী হয়েই সোমবার রাতে বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে তাকে নৌকায় তুলে বাড়িতে নিয়ে প্রথমে হাত পা ভেঙে দিয়। পরে আবার তার ঊরুতে একাধিকবার টেঁটা ঢুকিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে রাখে। খবর পেয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান তার অবস্থা অবনতি ঘটলে ভাগলপুরের জহিরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত ২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। আমার ভাইকে যারা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে, আমি তাদের বিচার চাই।

এই বিষয়ে অভিযুক্ত আইয়ুব আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে ঘাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে আইয়ুব আলীর বাড়ির ঘাট থেকে হেলিমকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। এখনো ঘটনাস্থলে আছি। বিস্তারিত পরে জানাতে পারব।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মিঠামইন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, ঘটনার সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। মরদেহ উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।