ঢাকা ১১:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কিশোরগঞ্জে বানের পানিতে ভেসে গেছে ১২০০ খামারের মাছ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:১৮:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ জুলাই ২০২২
  • ১২২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বানের পানিতে কিশোরগঞ্জের ১২ শতাধিক মাছের খামারের প্রায় ১৫ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। এতে মাথায় হাত পড়েছে মাছ খামারিদের। এমন ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে দিশেহারা হয়ে ওঠেছেন মাছের খামারি এবং তাদের পরিবার-স্বজন।

১ হাজার ৪০ জন চাষির খামারের মাছ ভেসে যাওয়ার সত্যতা  নিশ্চিত করেছেন জেলা মৎস্য সম্পদ কর্মকর্তা রিপন কুমার পাল। তবে, জেলার তাড়াইল উপজেলার দরিজাহাঙ্গীরপুরের মাছের খামারি মো. মাসুম মিয়া ঢাকা পোস্টকে জানান, তার আড়াইশো কাঠার খামার থেকে শিং, পাবদা, রুই, পাঙ্গাশসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে।

জেলা মৎস্য সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়সহ বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, বন্যায় কিশোরগঞ্জ জেলার ১৩টি উপজেলার মধ্যে ১১টি উপজেলার মাছের খামারিদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলার ১২ শতাধিক ছোট-বড় মাছের খামারের বিপুল পরিমাণ মাছ ও পোনা ভেসে গেছে। এছাড়াও বানের পানির ঢেউয়ে ভেঙে পড়েছে এসব মাছের খামার সংরক্ষণের সকল অবকাঠামো। প্রতিদিনই বাড়ছে এসব ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ। এরমধ্যে জেলার ১৩টি উপজেলার মধ্যে ইটনা, মিঠামইন, আষ্টগ্রাম, নিকলী, তাড়াইল, করিমগঞ্জ, বাজিতপুর, ভৈরব, কটিয়াদী, সদর উপজেলাসহ ১০টি উপজেলার মাছের খামারিরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তাড়াইল উপজেলার দরিজাহাঙ্গীরপুরের মাছের খামারি মো. মাসুম মিয়া জানান, তার আড়াইশ কাঠা আয়তনের মৎস্য খামারে ৭টি পুকুর রয়েছে। বানের পানিতে তার এসব পুকুরের বেশির ভাগ মাছই ভেসে গেছে। বর্তমানে তিনি জাল চারদিকে বেড়া দিয়ে অবশিষ্ট মাছ রক্ষার চেষ্টা করছেন।

মাছের খামারিদের এমন ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি ও বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি। তার মতো জেলার ১২ শতাধিক মাছের খামারের মাছ ও অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৩০ কোটি টাকারও বেশি বলে দাবি করেছেন খামারি মাসুম মিয়া।

একই গ্রামের খামারি মো. রতম মিয়া বলেন, আমার ১৫ কাঠা খামারে শিং ও পাবদাসহ সব মাছ ভেসে গেছে। যার ক্ষতির পরিমাণ ২০ লাখ টাকা। এখন সরকারি সহযোগিতা না পেলে পথে বসে যেতে হবে।

এলাকার সমাজ সেবক মিলাদ খান জানান, আমাদের উপজেলার প্রায় ৫০০ পরিবার মাছ চাষের সঙ্গে জড়িত। আমাদের উপজেলার ৯০ ভাগ মাছের খামারই ভেসে গেছে। যার ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৭ কোটি টাকার মতো। এখন সরকারি সহযোগিতা পেলে তাদের জন্য ভালো হবে। তারা আবার মাছ চাষ করে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।

কিশোরগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মমকর্তা রিপন কুমার পাল বলেন, জেলার ১৩টি উপজেলার মধ্যে ১১ উপজেলার খামারিদের কম বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ১১৯৮টি খামারের ১ হাজার ৪০ জন চাষির খামারের মাছ ভেসে গেছে। মাছের পোনা ভেসে গেছে এবং খামারের অবকাঠামো ক্ষতি হয়েছে। এতে জেলার খামারিদের ১৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। করিমগঞ্জ, তাড়াইলসহ বিভিন্ন এলাকা আমি ও আমার কর্মকর্তাগণ সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের তালিকা করে আমার কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ এলে উপজেলা কমিটির মাধ্যমে চাষিদের খাত ওয়ারি পুনর্বাসন করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

কিশোরগঞ্জে বানের পানিতে ভেসে গেছে ১২০০ খামারের মাছ

আপডেট টাইম : ০৬:১৮:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ জুলাই ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বানের পানিতে কিশোরগঞ্জের ১২ শতাধিক মাছের খামারের প্রায় ১৫ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। এতে মাথায় হাত পড়েছে মাছ খামারিদের। এমন ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে দিশেহারা হয়ে ওঠেছেন মাছের খামারি এবং তাদের পরিবার-স্বজন।

১ হাজার ৪০ জন চাষির খামারের মাছ ভেসে যাওয়ার সত্যতা  নিশ্চিত করেছেন জেলা মৎস্য সম্পদ কর্মকর্তা রিপন কুমার পাল। তবে, জেলার তাড়াইল উপজেলার দরিজাহাঙ্গীরপুরের মাছের খামারি মো. মাসুম মিয়া ঢাকা পোস্টকে জানান, তার আড়াইশো কাঠার খামার থেকে শিং, পাবদা, রুই, পাঙ্গাশসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে।

জেলা মৎস্য সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়সহ বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, বন্যায় কিশোরগঞ্জ জেলার ১৩টি উপজেলার মধ্যে ১১টি উপজেলার মাছের খামারিদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলার ১২ শতাধিক ছোট-বড় মাছের খামারের বিপুল পরিমাণ মাছ ও পোনা ভেসে গেছে। এছাড়াও বানের পানির ঢেউয়ে ভেঙে পড়েছে এসব মাছের খামার সংরক্ষণের সকল অবকাঠামো। প্রতিদিনই বাড়ছে এসব ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ। এরমধ্যে জেলার ১৩টি উপজেলার মধ্যে ইটনা, মিঠামইন, আষ্টগ্রাম, নিকলী, তাড়াইল, করিমগঞ্জ, বাজিতপুর, ভৈরব, কটিয়াদী, সদর উপজেলাসহ ১০টি উপজেলার মাছের খামারিরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তাড়াইল উপজেলার দরিজাহাঙ্গীরপুরের মাছের খামারি মো. মাসুম মিয়া জানান, তার আড়াইশ কাঠা আয়তনের মৎস্য খামারে ৭টি পুকুর রয়েছে। বানের পানিতে তার এসব পুকুরের বেশির ভাগ মাছই ভেসে গেছে। বর্তমানে তিনি জাল চারদিকে বেড়া দিয়ে অবশিষ্ট মাছ রক্ষার চেষ্টা করছেন।

মাছের খামারিদের এমন ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি ও বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি। তার মতো জেলার ১২ শতাধিক মাছের খামারের মাছ ও অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৩০ কোটি টাকারও বেশি বলে দাবি করেছেন খামারি মাসুম মিয়া।

একই গ্রামের খামারি মো. রতম মিয়া বলেন, আমার ১৫ কাঠা খামারে শিং ও পাবদাসহ সব মাছ ভেসে গেছে। যার ক্ষতির পরিমাণ ২০ লাখ টাকা। এখন সরকারি সহযোগিতা না পেলে পথে বসে যেতে হবে।

এলাকার সমাজ সেবক মিলাদ খান জানান, আমাদের উপজেলার প্রায় ৫০০ পরিবার মাছ চাষের সঙ্গে জড়িত। আমাদের উপজেলার ৯০ ভাগ মাছের খামারই ভেসে গেছে। যার ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৭ কোটি টাকার মতো। এখন সরকারি সহযোগিতা পেলে তাদের জন্য ভালো হবে। তারা আবার মাছ চাষ করে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।

কিশোরগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মমকর্তা রিপন কুমার পাল বলেন, জেলার ১৩টি উপজেলার মধ্যে ১১ উপজেলার খামারিদের কম বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ১১৯৮টি খামারের ১ হাজার ৪০ জন চাষির খামারের মাছ ভেসে গেছে। মাছের পোনা ভেসে গেছে এবং খামারের অবকাঠামো ক্ষতি হয়েছে। এতে জেলার খামারিদের ১৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। করিমগঞ্জ, তাড়াইলসহ বিভিন্ন এলাকা আমি ও আমার কর্মকর্তাগণ সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের তালিকা করে আমার কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ এলে উপজেলা কমিটির মাধ্যমে চাষিদের খাত ওয়ারি পুনর্বাসন করা হবে।