ঢাকা ১০:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ড্রাগনেও আশাবাদী স্বরূপকাঠি, সরকারের সুদৃষ্টি প্রয়োজন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:৪০:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন ২০২২
  • ১৩১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পেয়ারার জন্য বিখ্যাত পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে এবার পুষ্টিগুণে ভরপুর সুস্বাদু বিদেশি  ড্রাগন ফলের চাষ বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ফলন ভালো হলেও ব্যবসায়ী ও দোকানিদের সিন্ডিকেটের কারণে ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না এখানকার ড্রাগনচাষিরা। এ জন্য সরকারের সহায়তা দাবি করেছেন তারা। উপজেলার জলাবাড়ি ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অনুজ কান্তি ঘরামী ২০১৯ সালে ৬৩ শতক জমির ওপর এই বাগান তৈরি করেন।

চারাগুলো তিনি ঝিনাইদহ এলাকা থেকে সংগ্রহ করেন। প্রায় ৭২৫টি ড্রাগন গাছের বিশাল বাগান গড়ে উঠেছে এখানে।

জানা গেছে, বর্তমানে তার বাগানে ১৮০টি সিমেন্টের তৈরি পিলার রয়েছে। প্রতিটি পিলারে ৪টি করে গাছ রয়েছে। বাগানে প্রায় ৭২৫টি ড্রাগন গাছ আছে বলে জানান তিনি। বছরের বৈশাখ থেকে কার্তিক এই ৫ মাস ধরে প্রতিটি গাছে ৬ থেকে ৭ বার করে ফল পাওয়া যায়। একটি ফল পরিপক্ক হতে ২৭ দিনের মতো সময় লাগে। তিনি তার বাগানে ড্রাগনের পাশাপাশি মাল্টা গাছের চারাও রোপন করেছেন। গাছগুলোতে মাল্টাও ধরেছে বেশ। তার বাগানে বর্তমানে তিনি ছাড়াও আরও দুজন কর্মচারি নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন। এ এলাকায় তিনিই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে এই ড্রাগনের চাষ শুরু করেন। এ বছর তার বাগানে প্রচুর ফল ধরেছে। আকারে বড় ফলগুলোর এক একটার ওজন প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ গ্রাম পর্যন্ত। তার বাগানে সাদা ও গাঢ় লাল- এই দুই রংয়ের ফলের গাছ রয়েছে। যার প্রত্যেকটি গাছেই সন্তোষজনক হারে ফল ধরেছে।

তবে তার অভিযোগ, এ বছর বাগানে ফলের বাম্পার ফলন হলেও ব্যবসায়ী ও দোকানিদের সিন্ডিকেটের কারণে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তিনি তার বাগান থেকে প্রতি কেজি ড্রাগন ২০০ টাকা থেকে ২২০ টকো দরে বিক্রি করে থাকেন। অথচ এই ড্রাগন বাজারের দোকান থেকে ৩৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে কিনতে হয় ক্রেতাদের।

অনুজ জানান, যদি সরকারের পক্ষ থেকে ফল সংগ্রহের কোনো ব্যবস্থা করা হতো তাহলে তারা সেখানে ফল রেখে ধীরে ধীরে বিক্রি করতে পারতেন। এতে করে তারা ফলের দামটাও ভালো পেতেন। পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে সহজ শর্তে সুদমুক্ত ঋণের দাবি জানান তিনি।

ওই এলাকার একটি স্কুলের প্রধানশিক্ষক অমর কান্ত দাস বলেন, আমাদের এলাকায় অনুজই প্রথম এই ফলের চাষ শুরু করেছে। এখন তার দেখাদেখি অনেকেই এই চাষে এগিয়ে আসছে।

এলাকার ইউপি সদস্য সুব্রত হাওলাদার বলেন, আমাদের এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থাটা একটু খারাপ বিধায় এখানকার ফলগুলো বাজারজাতকরণে খরচ বেড়ে যায়। এছাড়াও অর্থনৈতিকসহ অন্যান্য সমস্যায় সরকার যদি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে এই ফল এ এলাকার অর্থনীতিতে দারুণ ভূমিকা রাখবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ চপল কৃষ্ণ নাথ বলেন, এখানকার চাষিরা উচ্চমূল্যের ফসল চাষে আগ্রহি। ড্রাগনের বাজার দাম অনেক বেশি হওয়ায় এখানকার চাষিরা এই ফল চাষে ব্যাপকভাবে এগিয়ে আসছেন। আমরা তাদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি নানা ধরনের সহায়তা দিয়ে আসছি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ড্রাগনেও আশাবাদী স্বরূপকাঠি, সরকারের সুদৃষ্টি প্রয়োজন

আপডেট টাইম : ০৫:৪০:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পেয়ারার জন্য বিখ্যাত পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে এবার পুষ্টিগুণে ভরপুর সুস্বাদু বিদেশি  ড্রাগন ফলের চাষ বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ফলন ভালো হলেও ব্যবসায়ী ও দোকানিদের সিন্ডিকেটের কারণে ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না এখানকার ড্রাগনচাষিরা। এ জন্য সরকারের সহায়তা দাবি করেছেন তারা। উপজেলার জলাবাড়ি ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অনুজ কান্তি ঘরামী ২০১৯ সালে ৬৩ শতক জমির ওপর এই বাগান তৈরি করেন।

চারাগুলো তিনি ঝিনাইদহ এলাকা থেকে সংগ্রহ করেন। প্রায় ৭২৫টি ড্রাগন গাছের বিশাল বাগান গড়ে উঠেছে এখানে।

জানা গেছে, বর্তমানে তার বাগানে ১৮০টি সিমেন্টের তৈরি পিলার রয়েছে। প্রতিটি পিলারে ৪টি করে গাছ রয়েছে। বাগানে প্রায় ৭২৫টি ড্রাগন গাছ আছে বলে জানান তিনি। বছরের বৈশাখ থেকে কার্তিক এই ৫ মাস ধরে প্রতিটি গাছে ৬ থেকে ৭ বার করে ফল পাওয়া যায়। একটি ফল পরিপক্ক হতে ২৭ দিনের মতো সময় লাগে। তিনি তার বাগানে ড্রাগনের পাশাপাশি মাল্টা গাছের চারাও রোপন করেছেন। গাছগুলোতে মাল্টাও ধরেছে বেশ। তার বাগানে বর্তমানে তিনি ছাড়াও আরও দুজন কর্মচারি নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন। এ এলাকায় তিনিই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে এই ড্রাগনের চাষ শুরু করেন। এ বছর তার বাগানে প্রচুর ফল ধরেছে। আকারে বড় ফলগুলোর এক একটার ওজন প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ গ্রাম পর্যন্ত। তার বাগানে সাদা ও গাঢ় লাল- এই দুই রংয়ের ফলের গাছ রয়েছে। যার প্রত্যেকটি গাছেই সন্তোষজনক হারে ফল ধরেছে।

তবে তার অভিযোগ, এ বছর বাগানে ফলের বাম্পার ফলন হলেও ব্যবসায়ী ও দোকানিদের সিন্ডিকেটের কারণে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তিনি তার বাগান থেকে প্রতি কেজি ড্রাগন ২০০ টাকা থেকে ২২০ টকো দরে বিক্রি করে থাকেন। অথচ এই ড্রাগন বাজারের দোকান থেকে ৩৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে কিনতে হয় ক্রেতাদের।

অনুজ জানান, যদি সরকারের পক্ষ থেকে ফল সংগ্রহের কোনো ব্যবস্থা করা হতো তাহলে তারা সেখানে ফল রেখে ধীরে ধীরে বিক্রি করতে পারতেন। এতে করে তারা ফলের দামটাও ভালো পেতেন। পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে সহজ শর্তে সুদমুক্ত ঋণের দাবি জানান তিনি।

ওই এলাকার একটি স্কুলের প্রধানশিক্ষক অমর কান্ত দাস বলেন, আমাদের এলাকায় অনুজই প্রথম এই ফলের চাষ শুরু করেছে। এখন তার দেখাদেখি অনেকেই এই চাষে এগিয়ে আসছে।

এলাকার ইউপি সদস্য সুব্রত হাওলাদার বলেন, আমাদের এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থাটা একটু খারাপ বিধায় এখানকার ফলগুলো বাজারজাতকরণে খরচ বেড়ে যায়। এছাড়াও অর্থনৈতিকসহ অন্যান্য সমস্যায় সরকার যদি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে এই ফল এ এলাকার অর্থনীতিতে দারুণ ভূমিকা রাখবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ চপল কৃষ্ণ নাথ বলেন, এখানকার চাষিরা উচ্চমূল্যের ফসল চাষে আগ্রহি। ড্রাগনের বাজার দাম অনেক বেশি হওয়ায় এখানকার চাষিরা এই ফল চাষে ব্যাপকভাবে এগিয়ে আসছেন। আমরা তাদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি নানা ধরনের সহায়তা দিয়ে আসছি।