রফিকুল ইসলামঃ দুই-তিন মিনিটের ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবে কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার গোপদিঘী ইউনিয়নের বহুল আলোচিত শ্যামপুর দারুল উলুম দাখিল মাদরাসারটি সহকারী মৌলভী মো. মুজিবুর রহমানের নতুন বগাদিয়া গ্রামের বসতভিটা থেকে উড়ে গেছে।
এতে সুপার মো. আমিনুল হক, সহ-সুপার আবু ছালেহ, ইংরেজির সহকারী শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেন ও গণিতের সহকারী শিক্ষক মো. সোহেল রানা গুরুতর জখম ছাড়াও শিক্ষিকাসহ ১০ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন।
আজ রবিবার (১২ জুন) সকাল ১১টার দিকে হঠাৎ বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়ের প্রচণ্ড আঘাতে বাঁশের কাঠামোর ওপর টিনের ছোট দুটি চালাঘর সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় বেঞ্চ ও আসবাবপত্র। হাওরের জলরাশিতে ভেসে যায় অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তরপত্র।
এ নিয়ে অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের পরীক্ষা ও লেখাপড়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত এবং স্থায়ী ঠাঁই ছাড়া মাদরাসা বলে ফাঁড়া কাটছে না বলে জানান।
এলাকাবাসী আক্ষেপ করে জানায়, শ্যামপুর গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা মো. জজ মিয়ার (বর্তমানে মরহুম) দান করা এক একর জমিতে ২০০৫ সালে চালু হয় শ্যামপুর দারুল উলুম দাখিল মাদরাসাটি। ২০১০ সালে এমপিওভুক্ত হওয়ার পর থেকে প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয় নিয়ে সুপার মো. আমিনুল হকের সঙ্গে সভাপতি মো. জজ মিয়ার বিরোধের সৃষ্টি হয়।
এলাকাবাসী আরও জানায়, সেই বিরোধের সমাধান না করে বরং এটিকে অজুহাত বানিয়ে সুপার মো. আমিনুল হক ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে পূর্বপ্রস্তূতিতে মাদরাসার বেঞ্চ, চেয়ার-টেবিল ও টিনের ঘর পাশের মো. নূরুল হক ভূঞার ধলাই-বগাদিয়া বাজারে সরিয়ে নিয়ে যায়।
বাজার থেকে দীর্ঘ ৯ বছর পর মুশুরিয়া মৌজার গভীর হাওরে মাটি ভরাট করে ঘর উঠালে ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত হয় মাদরাসাটি এবং পরবর্তীতে শ্যামপুর গ্রামে না নিয়ে নতুন বগাদিয়া গ্রামে উঠলে আবারও ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে।
তদপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষাসহ সার্বিক পাঠদান কার্যক্রমে ফের দীর্ঘদিনের ফেঁড়ে পড়ল।
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও কলামিস্ট।