বিজয় দাস, প্রর্তিনিধি নেত্রকোনাঃ নেত্রকোনার পূর্বধলায় পাকা সড়কের পিচ আর ইট, বালু উঠে যাত্রীদের চলাচলের অনুপযোগী। রাস্তার মাঝে খানাখন্দ ভর্তি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে মানুষ প্রতিনিয়ত। বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা থাকলেও কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা। অবশেষে নিজ উদ্যোগে রাস্তা মেরামত করছেন এ আর উজ্জ্বল বাবুর্চি নামের এক ভ্যানচালক।
উজ্জ্বল জেলার পূর্বধলা উপজেলার আগিয়া ইউনিয়নের পূর্ববুধী গ্রামের একজন ভ্যান গাড়ি চালক।
মঙ্গলবার ( ৭ জুন ) সকাল থেকে তিনি একাই একটি ভ্যান গাড়ি নিয়ে রাস্তা মেরামত কাজ শুরু করেন। এসময় পূর্বধলা স্টেশন রোডের মধ্যে বড় বড় গর্তগুলো ইট দিয়ে ভরাট করতে দেখা যায়।তার এ জনমুখী কাজে খুব খুশি হয়েছে এলাকাবাসী।
ভাঙাচোরা এ রাস্তা নিয়ে এলাকার দুর্দশার সীমা নেই। ভাঙ্গা রাস্তার বড় বড় গর্তগুলো ভরাট করতে উপজেলা পরিষদ এবং অন্যান্য স্থান থেকে পরিত্যাক্ত সরকারি ইট ভ্যান গাড়ি দিয়ে এনে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে রাস্তাটিতে চলাচলের উপযোগী করার চেষ্টা করছেন তিনি।
ভ্যান চালক এ আর উজ্জ্বল বাবুর্চি জানান, উপজেলার মানুষের একমাত্র রাস্তা এটি, এর একদিকে পূর্বধলা বাজার অন্যদিকে হাসপাতাল ও উপজেলা পরিষদ এবং স্টেশন বাজার অবস্থিত। রাস্তাটিতে বড় বড় গর্তগুলো জন্য রিক্সা, ভ্যান, অটোরিকশা সহ অন্যান্য গাড়ি চলাচলে অসুবিধা হয়। তারপরে আবার কয়েক জায়গায় ভাঙাচোরা ও গর্ত হয়ে চলাচলের অনুপযোগী প্রায়।
কিছুদিন আগে রাস্তায় কাজ করলেও অল্পসময়ের মধ্যেই রাস্তাটি ভেঙে যায়। বিভিন্ন এলাকার যোগাযোগ এ সড়কের সাথে। ভাঙাচোরা এ রাস্তা নিয়ে চলাচলে দুর্দশার সীমা ছিল নেই। বড় বড় গর্তগুলো মেরামতের চেষ্টার মধ্য দিয়ে আপাতত যানবাহনের চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন তিনি। বেতনের কথা জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন মানুষের কষ্টের কথা চিন্তা করেই মূলত এ কাজটি করা । এতে মানুষের কাছে দোয়া কামনা করেন তিনি।
এবিষয়ে পথচারী জহিরুল ইসলাম খান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছুদিন পূর্বে ভাঙা রাস্তায় ইট-বালু দিয়ে রোলার করা হয়, পরবর্তীতে পিচ ঢালাই করে চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পানি আটকে অল্প সময়ের মধ্যেই রাস্তা পিচ উঠে রাস্তা নষ্ট হয়ে যায়। সরকারি দপ্তর কবে মেরামত করবে সে আশায় বসে থাকলে এলাকার মানুষের কষ্ট কমবে না। কিন্তু রাস্তাগুলো মেরামত করা খুবই জরুরি।
রাস্তা মেরামতস্থলে উপস্থিত এমদাদুল ইসলাম বলেন, এ শুভ উদ্যোগ এলাকার মানুষের কষ্ট কমানোর পাশাপাশি অন্য মানুষদেরও ভালো কাজে উদ্বুদ্ধ করবে।
ব্যক্তি উদ্যোগে রাস্তা মেরামতের বিষয়টি সাধুবাদ জানিয়ে এলজিইডি পূর্বধলা উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ সাদিকুল জাহান রিদান বলেন, স্বেচ্ছাশ্রমের বিষয়টা আমার জানা ছিল না, এলজিইডি’র রাস্তাগুলো বড় ধরনের ভাঙাচোরা ছাড়া মেরামত করা যায় না। পূর্বধলা সদরের সড়কগুলির যে বেহালদশা সে ব্যাপারে অবগত আছি।
তিনি আরো বলেন,রাস্তাগুলোর প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে, আগামী অর্থবছরের পাস হলে টেন্ডার হবে এবং কাজ শুরু হবে। সেক্ষেত্রে মেরামতের কাজ সমাপ্ত হলে জনদুর্ভোগ কেটে যাবে। স্থানীয় মানুষদের এভাবে এগিয়ে আসা খুব জরুরি।”